ঢাকা ১১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনা: একই পরিবারের নিহত সকলের দাফন সম্পন্ন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৪:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩
  • ১০২ বার

ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের মধ্যে এক পরিবারের সবাই মারা গেছেন। নিহতরা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বনাটি গাংগাইলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের নিজ গ্রামে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।

মেজো ছেলে সুজন মিয়া, ছেলের বউ ফাতেমা বেগম এবং দুই নাতি সজীব ও ইসমাইলকে হারিয়ে পাগল প্রায় ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বনাটি গাংগাইলপাড়া গ্রামের নুর জাহান বেগম। সুজন মিয়ার বাবা মফিজ উদ্দিন যেন শোকে পাথর। গত বৃহস্পতিবার তাদের বড় ছেলে রমজান মিয়ার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন সুজন মিয়া। অনুষ্ঠান শেষে গতকাল সোমবার বিকালে এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা কর্মস্থলে যাওয়ার সময় ভৈরব রেল স্টেশনের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হন সকলেই। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিহত চার জনকে নিজ গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

নিহত সুজন মিয়ার মা নুরজাহান বেগম বলেন, আমার ছেলে নাই, ছেলের বউ নাই, দুই নাতি নাই। এরা কখনো আর ফিরে আসবেনা। আমি কি বলবো বলেন? সুজন মিয়ার বাবা মফিজ উদ্দিন উরফে রইছ উদ্দিন বলেন, এটা দুর্ঘটনা না, এটা হত্যা। আমি আমার ছেলেসহ তার পরিবারের সকলকে হত্যার বিচার চাই।

নিহত সুজন মিয়ার ছোট ভাই স্বপন মিয়াও ভাইয়ের পরিবারের সাথে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তবে দুর্ঘটনার সময় তিনি পাঁচ নম্বর বগিতে থাকায় বেঁচে যান। তিন ভাইয়ের মধ্যে পরিবারসহ মেঝো ভাইকে হারিয়ে শোকে কাতর বড় ভাই রমজান মিয়া ও ছোট ভাই স্বপন মিয়া। এ ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি এলাকাবাসীর।

নান্দাইল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চৌধুরী স্বপন বলেন, রেল ভ্রমণ সবচেয়ে নিরাপদ। এ ভ্রমণেও যদি এমন হয় তাহলে কোথায় যাবো আমরা। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবেনা। একটি পরিবারতো শেষ হয়ে গেলো। এদের স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই।

নান্দাইল উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, মরদেহ উদ্ধার থেকে দাফন পর্যন্ত আমরা ছিলাম। নিহত এ পরিবারের স্বজনদের পাশে ভবিষ্যতে থাকবে উপজেলা প্রশাসন।

নিহত সুজন মিয়া ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার তাজমহল রোডে ভ্যানগাড়িতে করে ডাব বিক্রি করতেন। সেখানেই একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন বেশ কয়েক বছর ধরে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনা: একই পরিবারের নিহত সকলের দাফন সম্পন্ন

আপডেট টাইম : ১১:৩৪:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের মধ্যে এক পরিবারের সবাই মারা গেছেন। নিহতরা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বনাটি গাংগাইলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের নিজ গ্রামে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।

মেজো ছেলে সুজন মিয়া, ছেলের বউ ফাতেমা বেগম এবং দুই নাতি সজীব ও ইসমাইলকে হারিয়ে পাগল প্রায় ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বনাটি গাংগাইলপাড়া গ্রামের নুর জাহান বেগম। সুজন মিয়ার বাবা মফিজ উদ্দিন যেন শোকে পাথর। গত বৃহস্পতিবার তাদের বড় ছেলে রমজান মিয়ার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন সুজন মিয়া। অনুষ্ঠান শেষে গতকাল সোমবার বিকালে এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা কর্মস্থলে যাওয়ার সময় ভৈরব রেল স্টেশনের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হন সকলেই। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিহত চার জনকে নিজ গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

নিহত সুজন মিয়ার মা নুরজাহান বেগম বলেন, আমার ছেলে নাই, ছেলের বউ নাই, দুই নাতি নাই। এরা কখনো আর ফিরে আসবেনা। আমি কি বলবো বলেন? সুজন মিয়ার বাবা মফিজ উদ্দিন উরফে রইছ উদ্দিন বলেন, এটা দুর্ঘটনা না, এটা হত্যা। আমি আমার ছেলেসহ তার পরিবারের সকলকে হত্যার বিচার চাই।

নিহত সুজন মিয়ার ছোট ভাই স্বপন মিয়াও ভাইয়ের পরিবারের সাথে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তবে দুর্ঘটনার সময় তিনি পাঁচ নম্বর বগিতে থাকায় বেঁচে যান। তিন ভাইয়ের মধ্যে পরিবারসহ মেঝো ভাইকে হারিয়ে শোকে কাতর বড় ভাই রমজান মিয়া ও ছোট ভাই স্বপন মিয়া। এ ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি এলাকাবাসীর।

নান্দাইল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চৌধুরী স্বপন বলেন, রেল ভ্রমণ সবচেয়ে নিরাপদ। এ ভ্রমণেও যদি এমন হয় তাহলে কোথায় যাবো আমরা। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবেনা। একটি পরিবারতো শেষ হয়ে গেলো। এদের স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই।

নান্দাইল উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, মরদেহ উদ্ধার থেকে দাফন পর্যন্ত আমরা ছিলাম। নিহত এ পরিবারের স্বজনদের পাশে ভবিষ্যতে থাকবে উপজেলা প্রশাসন।

নিহত সুজন মিয়া ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার তাজমহল রোডে ভ্যানগাড়িতে করে ডাব বিক্রি করতেন। সেখানেই একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন বেশ কয়েক বছর ধরে।