প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল নির্বাচনে লড়ছেন মোহাম্মদ শাহে জামান টিটো। দেশটির ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির প্রার্থী হিসেবে ওয়াটসন এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। দ্বিকক্ষ বিশষ্টি অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে ফেডারেল নির্বাচন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের এমপি নির্বাচনের মতো। দেশটির ১৫০টি নির্বাচনি আসন বা এলাকা থেকে সংসদের নিম্নকক্ষের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়ে সংসদে আসেন।
আগামী ২ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার ৪৫তম সংসদ নির্বাচনে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের দলের প্রার্থী টিটো। একই আসনে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের আরও ৫জন প্রার্থী থাকলেও জামানের মূল লড়াইটা হবে অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টির শক্তিশালী প্রার্থী দেশটির সাবেক অভিবাসনমন্ত্রী টনি বার্কের সঙ্গে। কারণ জন্মের পর থেকেই ওয়াটসন আসনটি লেবার পার্টির ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত। শুধু তাই নয়, এই এলাকাটির নামকরণ করা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় এবং লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জন ক্রিশ্চিয়ান ওয়াটসনের নামেই।
গত শুক্রবার টেলিফোনে আলাপকালে শাহে জামান টিটু বলেন, লেবার পার্টির অন্যতম শক্তিশালী ঘাঁটি বলে পরিচিত ওয়াটসন আসনে আমাকে আমার দল লিবারেল পার্টি মনোনয়ন দিয়েছে বলে আমি অত্যনত্ম খুশি। মোট ১৩ বার সাড়্গাত্কার নিয়ে আমাকে চূড়ানত্ম মনোনয়ন দিয়েছে দল। দলের শীর্ষব্যাক্তিরা বুঝতে পেরেছেন, আমার পড়্গেই সম্ভব লেবার পার্টির ঘাঁটিতে লিবারেল পার্টির বিজয় পতাকা ওড়ানোর।
প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হিসেবে দেশটির ফেডারেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে জামান বলেন, ২০১৩ সালের নির্বাচনে ওয়াটসন এলাকায় আমার ভালো ভূমিকা ছিল। আমার কারণে ২.৩ শতাংশ ভোট লেবার পার্টি থেকে লিবারেল পার্টিতে যোগ হয়েছিল। তাছাড়া আমি ২০১১ সাল থেকে লিবারেল পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় এবং আমার ব্যবসার সুবাদে এই এলাকার অনেকের সঙ্গেই আমার ভালো সম্পর্ক। সবমিলিয়ে আমি মনে করি, আমার দলকে আমি বিজয় এনে দিতে পারবো। এটা অবশ্যই আমার দেশের জন্যও অনেক গর্বের ব্যাপার হবে।
ওয়াটসন আসনে মোট ১ লক্ষ ৫ হাজার ভোটারের মধ্যে ৮ হাজার ভোটার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত জানিয়ে জামান বলেন, শুধু বাংলাদেশী কমিউনিটিই নয় ইতোমধ্যে গ্রীস, লেবানিজ, ভারতীয়, পাকিসত্মানী, হায়দ্রাবাদী কমিউনিটিও আমাকে আমার নির্বাচনি আসনে সমর্থন জানিয়েছেন। এ কারণে আমি বেশ আশাবাদী।
অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যবসায়ী বলেন, আমার পৈতৃক বাড়ি ফেনীর দাগনভূইয়া এলাকায়। কিন্তু আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই ঢাকার মিরপুরে। বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যাবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টুর সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনিই আমাকে প্রথম জাপান পাঠান। পরবর্তীতে আমি জাপান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় এসে কিছুদিন চাকরি করি, এরপর ২০১১ সালে চাকরি ছেড়ে নিজের ব্যবসা শুরু করি। প্রথমেই ল্যাকেম্বা এলাকায় বাংলাদেশ প্যালেস নামে একটি বড়ো দোকান দেই। এরপর ব্যবসা আসেত্ম আসেত্ম বড়ো হতে থাকে। এখন অস্ট্রেলিয়ায় আমার প্রতিষ্ঠিত সিডনি ফুড কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার থেকে আমি অস্ট্রেলিয়ায় চাল, ডাল, মাছসহ বিভিন্ন খাবার আমদানি রফতানি করি।