ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২৬ হাজার কোটি টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৬:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩
  • ৮৫ বার

ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। গত জুন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি খাতের ৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংক বড় ধরনের প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে।

এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২৬ হাজার ১৩৪ কোটি টাকার বেশি। আগের প্রান্তিক মার্চে আট ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ২০ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ৫ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা।

তবে কোনো কোনো ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসাবে রেখে দেওয়ায় সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কম। জুন শেষে ব্যাংক খাতে সার্বিকভাবে প্রভিশন ঘাটতি ২১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।

তবে এ ঘাটতি মার্চের তুলনায় অনেক বেশি। মার্চ শেষে সার্বিক ঘাটতি ছিল ১৬ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি, বেসরকারি, বিদেশিসহ সব ধরনের ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করে, সেগুলোর গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসাবে আলাদা জমা রাখতে হয়।

কোনো ঋণ শেষ পর্যন্ত মন্দ ঋণে পরিণত হলে তাতে যেন ব্যাংক আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য এ নিরাপত্তা সঞ্চিতির বিধান রাখা হয়েছে। ঋণমান অনুযায়ী, অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে পাঁচ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়।

নিম্ন বা সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা কুঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়।

সূত্র মতে, ঘাটতিতে পড়া ব্যাংকের মধ্যে তিনটি সরকারি ও পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক। গত জুন শেষে সরকারি তিনটি ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখায় এসব ব্যাংকের সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বেসরকারি পাঁচটি ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা।

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। গত মার্চ প্রান্তিকে ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

৮ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২৬ হাজার কোটি টাকা

আপডেট টাইম : ১১:৩৬:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩

ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। গত জুন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি খাতের ৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংক বড় ধরনের প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে।

এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২৬ হাজার ১৩৪ কোটি টাকার বেশি। আগের প্রান্তিক মার্চে আট ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ২০ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ৫ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা।

তবে কোনো কোনো ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসাবে রেখে দেওয়ায় সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কম। জুন শেষে ব্যাংক খাতে সার্বিকভাবে প্রভিশন ঘাটতি ২১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।

তবে এ ঘাটতি মার্চের তুলনায় অনেক বেশি। মার্চ শেষে সার্বিক ঘাটতি ছিল ১৬ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি, বেসরকারি, বিদেশিসহ সব ধরনের ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করে, সেগুলোর গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসাবে আলাদা জমা রাখতে হয়।

কোনো ঋণ শেষ পর্যন্ত মন্দ ঋণে পরিণত হলে তাতে যেন ব্যাংক আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য এ নিরাপত্তা সঞ্চিতির বিধান রাখা হয়েছে। ঋণমান অনুযায়ী, অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে পাঁচ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়।

নিম্ন বা সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা কুঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়।

সূত্র মতে, ঘাটতিতে পড়া ব্যাংকের মধ্যে তিনটি সরকারি ও পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক। গত জুন শেষে সরকারি তিনটি ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখায় এসব ব্যাংকের সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বেসরকারি পাঁচটি ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা।

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। গত মার্চ প্রান্তিকে ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।