ঢাকা ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ মরিচ চাষ হচ্ছে কুমিল্লায়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩
  • ৬৮ বার

সবসময় ব্যতিক্রম কিছু করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এবার তিনি বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ মরিচ চারাপিতা চাষ করে আলোচনায় এসেছেন। তার মরিচ বাগানে বেশ কয়েকটি গাছে এই বছর মরিচ ধরেছে। দেখতে গোলাকার এ মরিচ কাঁচা অবস্থায় সবুজ রঙের হলেও পাকলে হলুদ হয়ে যায়।

কৃষক আহমেদ জামিল বলেন, ‘বাংলাদেশে সম্ভবত আমিই প্রথম এ মরিচের বীজ লাগাই। এর আগে আমাদের দেশে কোথায় এ ধরনের মরিচ গাছ দেখিনি। আমি আমেরিকা থেকে এ বীজ সংগ্রহ করি। চার মাস আগে বস্তার ভেতরে মাটি ভরে বীজ রোপণ করি। ৫০টি বীজের মধ্যে ৩টি বীজ থেকে চারা গজায়। একেকটি গাছ বুকসমান। তিন বছর পর্যন্ত এ গাছ থেকে মরিচ পাওয়া যাবে।’

মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে চারাপিতা জাতের মরিচের বীজ এনে শখের বসে নিজের বাড়িতে লাগান। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে আবাদ হওয়া এ জাতের মরিচে ঝাল কম। এটি সুগন্ধিজাতীয় মরিচ। বাংলাদেশের আবহাওয়া এ মরিচ চাষে উপযুক্ত কি-না, সেটি গবেষণার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন।

মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন বলেন, ‘মরিচটি অনেক দামি। এটি দেখতে গোলাকৃতির। কৃষক আহমেদ জামিল প্রথম দফা বীজ বপন করে সফল হননি। দ্বিতীয়বারে বীজ লাগিয়ে মাত্র তিনটি গাছ টিকেছে। তবে উনি এ মরিচ নিয়ে কয়েক বছর ধরে লেগে আছেন। এটি সাধারণত বেলে মাটিতে হয়। আমরা তাকে সহযোগিতা করেছি। চারাপিতা মরিচ আমেরিকার।’

তবে কৃষক জামিলের দাবি, চারাপিতা মরিচ পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মরিচ। এক কেজি মরিচের দাম ২৬ হাজার ডলার। অত্যন্ত সুগন্ধি এই মরিচ ধনীরা ব্যবহার করেন। আরব দেশের রাজা-বাদশাহরা তাদের খাবারে এই মরিচ ব্যবহার করতেন। মক্কার অনেক দামি হোটেলেও এটি ব্যবহার হয়।

তিনি বলেন, এ মরিচগাছ বৃষ্টির পানি সয়তে পারে না। কিন্তু রোদ লাগাতে হয়। সচরাচর এ বীজ দেশে পাওয়া যায় না। বাণিজ্যিক চাষও তেমন হয় না। তবে পেরুতে চাষ হয়। এটি মসলাজাতীয় মরিচ। এটির তেমন ঝাল নেই।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শামসিল আরেফিন ভূঁইয়া বলেন, ‘এটি সুগন্ধিজাতীয় মরিচ। এটি আমেরিকা মহাদেশে হয়। বাংলাদেশে তেমন হয় না। কৃষক জামিল শখের বসে লাগিয়েছেন। এখন তার বাগানে তিনটি গাছে মরিচ ধরেছে।’

এর আগে জামিল কুমিল্লার লালমাই উপজেলার নাওরা গ্রামে সাত একর জমিতে ব্ল্যাক (কালো) টমেটো চাষ করেন। এরপর তিনি সাউপেরিলা তেলের চাষ করেন। ৭০ একর জমিতে সাউপেরিলা তেলের গাছ লাগান। এবার তিনি চারাপিতা মরিচগাছ বপন করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ মরিচ চাষ হচ্ছে কুমিল্লায়

আপডেট টাইম : ১১:৫৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩

সবসময় ব্যতিক্রম কিছু করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এবার তিনি বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ মরিচ চারাপিতা চাষ করে আলোচনায় এসেছেন। তার মরিচ বাগানে বেশ কয়েকটি গাছে এই বছর মরিচ ধরেছে। দেখতে গোলাকার এ মরিচ কাঁচা অবস্থায় সবুজ রঙের হলেও পাকলে হলুদ হয়ে যায়।

কৃষক আহমেদ জামিল বলেন, ‘বাংলাদেশে সম্ভবত আমিই প্রথম এ মরিচের বীজ লাগাই। এর আগে আমাদের দেশে কোথায় এ ধরনের মরিচ গাছ দেখিনি। আমি আমেরিকা থেকে এ বীজ সংগ্রহ করি। চার মাস আগে বস্তার ভেতরে মাটি ভরে বীজ রোপণ করি। ৫০টি বীজের মধ্যে ৩টি বীজ থেকে চারা গজায়। একেকটি গাছ বুকসমান। তিন বছর পর্যন্ত এ গাছ থেকে মরিচ পাওয়া যাবে।’

মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে চারাপিতা জাতের মরিচের বীজ এনে শখের বসে নিজের বাড়িতে লাগান। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে আবাদ হওয়া এ জাতের মরিচে ঝাল কম। এটি সুগন্ধিজাতীয় মরিচ। বাংলাদেশের আবহাওয়া এ মরিচ চাষে উপযুক্ত কি-না, সেটি গবেষণার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন।

মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন হোসেন বলেন, ‘মরিচটি অনেক দামি। এটি দেখতে গোলাকৃতির। কৃষক আহমেদ জামিল প্রথম দফা বীজ বপন করে সফল হননি। দ্বিতীয়বারে বীজ লাগিয়ে মাত্র তিনটি গাছ টিকেছে। তবে উনি এ মরিচ নিয়ে কয়েক বছর ধরে লেগে আছেন। এটি সাধারণত বেলে মাটিতে হয়। আমরা তাকে সহযোগিতা করেছি। চারাপিতা মরিচ আমেরিকার।’

তবে কৃষক জামিলের দাবি, চারাপিতা মরিচ পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মরিচ। এক কেজি মরিচের দাম ২৬ হাজার ডলার। অত্যন্ত সুগন্ধি এই মরিচ ধনীরা ব্যবহার করেন। আরব দেশের রাজা-বাদশাহরা তাদের খাবারে এই মরিচ ব্যবহার করতেন। মক্কার অনেক দামি হোটেলেও এটি ব্যবহার হয়।

তিনি বলেন, এ মরিচগাছ বৃষ্টির পানি সয়তে পারে না। কিন্তু রোদ লাগাতে হয়। সচরাচর এ বীজ দেশে পাওয়া যায় না। বাণিজ্যিক চাষও তেমন হয় না। তবে পেরুতে চাষ হয়। এটি মসলাজাতীয় মরিচ। এটির তেমন ঝাল নেই।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শামসিল আরেফিন ভূঁইয়া বলেন, ‘এটি সুগন্ধিজাতীয় মরিচ। এটি আমেরিকা মহাদেশে হয়। বাংলাদেশে তেমন হয় না। কৃষক জামিল শখের বসে লাগিয়েছেন। এখন তার বাগানে তিনটি গাছে মরিচ ধরেছে।’

এর আগে জামিল কুমিল্লার লালমাই উপজেলার নাওরা গ্রামে সাত একর জমিতে ব্ল্যাক (কালো) টমেটো চাষ করেন। এরপর তিনি সাউপেরিলা তেলের চাষ করেন। ৭০ একর জমিতে সাউপেরিলা তেলের গাছ লাগান। এবার তিনি চারাপিতা মরিচগাছ বপন করেন।