জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ছায়ানটের বর্ষবরণ

বাংলা নববর্ষ ১৪৩০-কে স্বাগত জানাতে সম্মিলিত কণ্ঠে ‘আহির ভৈরব সুরের সারেঙ্গি বাদন’ গেয়ে রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সম্মেলক গানের ফাঁকে ফাঁকে একক গান, আবৃত্তি মিলিয়ে মোট ২৭টি উপস্থাপনার পর জাতীয় সংগীত দিয়ে শেষ হয় এ বছরের বর্ষবরণ আয়োজন।
আজ শুক্রবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে শুরু হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। টানা দুই ঘণ্টা পাঁচ মিনিট চলার পর সকাল ৮টা ২০ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় দর্শনার্থীরা বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে যান যে যার অবস্থান থেকে। ঠোঁট মিলিয়ে গাইতে থাকেন ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’।

ছায়ানট সূত্রে জানা যায়, বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে চলতি বছর ১০টি সম্মেলক কণ্ঠে গান, ১১টি একক গান, দুটি আবৃত্তি এবং সবশেষে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। পুরো আয়োজনে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতি, মানবপ্রেম, দেশপ্রেম, আত্মবোধন আর জাগরণের সুরবাণীর বার্তা দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতার ছাড়াও বেসরকারি রেডিও চ্যানেলগুলো। পাশাপাশি ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও সরাসরি দেখানো হয়েছে অনুষ্ঠানটি।
রমজান মাসের কারণে এবারের আয়োজনে অন্যান্য বারের চেয়ে মানুষের উপস্থিতি কম হলেও সকাল হতে না হতেই বৈশাখী সাজে রমনায় আসতে শুরু করেন নানা বয়সের, শ্রেণি-পেশার মানুষ। রমনায় বাংলাদেশিদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছিলেন বিদেশিরাও। তাদেরকেও দেখা যায় বাঙালির সাজে। এ সময় তাদের অনেকের হাতে তালপাখা ও একতারা এবং গলায় গামছাও দেখা গেছে।

রিতা হক নামে এক নারী বলেন, ‘সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমরা বাংলাদেশি, বাঙালি। আমাদের আছে নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা, কৃষ্টি। সেগুলো আমরা যেকোনো উপলক্ষেই প্রাণভরে উপভোগ ও উদ্‌যাপন করতে চাই। সেটা যদি হয় নববর্ষের দিন, তাহলে তো কথাই নেই!’
তসলিম শেখ নামে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে একতারা হতে প্রতিটি পরিবেশনার সঙ্গে নাচতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘একতারায় আমাদের প্রাণের সুর বাজে।’

ছায়ানটের এ আয়োজনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রধান গোলাম ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি রমনা পার্ক, বটমূল ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর