প্রতিদিন ৩ হাজার ডিম দেয় নাঈমের কোয়েলগুলো। এ ডিম বিক্রি করে নাঈমের মাসে আয় প্রায় ২ লাখ টাকা। এ খামারির সাফলতা দেখে কোয়েল পাখি পালনে আগ্রহী হচ্ছে অনেক যুবক।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের ০৯নং ওয়ার্ডের যুবক মাহবুবুল আলম নাঈম। ২০২০ সালে সখের বসে ৩০০ কোয়েলের বাচ্চা সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন কোয়েল খামার। লাভ ভালো হওয়ায় ১ হাজার কোয়েল দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন কোয়েল ব্যবসা। বর্তমানে তার খামারের তিনটি সেডে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোয়েল পাখি। প্রতিনিয়ত এ খামার থেকে তার সংগ্রহ হচ্ছে ৩ হাজার ডিম। প্রতি পিস ডিম পাইকারি বিক্রি করছেন ৩ টাকা দরে।
শুধু কোয়েল পাখিই নয়, এর পাশাপাশি নাঈম পালন করছেন কিছু সংখ্যক সোনালী, লেয়ার ও টারকি মুরগি। এসব মুরগির মাংস ও কোয়েল পাখির ডিম বিক্রি করছেন নিজের সেল সেন্টারে বসেই। এতে তার মাসে আয় হচ্ছে ২ লাখ টাকা। খামার থেকে অধিক লাভবান হওয়ায় অনেক খুশি এ কোয়েল খামারি। নাঈমের এ সাফল্য দেখে অনেক যুবক আগ্রহী হচ্ছেন কোয়েল পাখি পালনে।
সফল কোয়েল খামারি মাহবুবুল আলম নাঈম বলেন, ‘সখের বসে ২০২০ সালে কোয়েল পালন শুরু করেছিলাম। ডিমের চাহিদা এবং মাংসের চাহিদা বেশি থাকায় পরিবারের সহায়তায় পরবর্তীতে বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল খামার গড়ে তুলি। বর্তমানে আমার খামারে থাকা ৩ হাজার কোয়েল পাখি ডিম দেয়। বেশ ভালোই লাভবান হচ্ছি। অনেকে আমার খামার ঘুরে দেখছে এবং আমি অনেক যুবককে কোয়েল খামার গড়ে তোলার পরামর্শ দিচ্ছি।’
মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জব্বার হোসেন বলেন, ‘নাঈম ভাই একজন সফল কোয়েল খামারী। তার কাছ থেকে ১০০ কোয়েল পাখির বাচ্চা সংগ্রহ করেছি। পড়াশুনার পাশাপাশি কোয়েল পাখি পালন করছি। আশা করছি আমিও লাভবান হতে পারবো।’
কলাপাড়া পৌর শহরের মাদ্রাসা শিক্ষক জয়নাল মিয়া বলেন, ‘নাঈমের পরামর্শে ২০০ কোয়েল পাখি সংগ্রহ করেছি। লালন পালনে তেমন বেশি কষ্ট নেই। শিক্ষকতার পাশাপাশি কোয়েল পালন করা যায়। বর্তমানে আমার ৫০টি কোয়েলে ডিম দেয়।’
কলাপাড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জোনায়েদ খান লেলিন জানান, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, ফলেট, ভিটামিন-এ,ই,ডি ও কোলস্টেরল সমৃদ্ধ কোয়েল পাখির ডিম। মানবদেহের এসব চাহিদা পূরণ করতে পারে কোয়েল পাখির ডিম। আমরা বিশেষ করে অপুষ্টিকর শিশুদের বেশি বেশি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেই।’
কলাপাড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কমল চন্দ্র শীল জানান, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস থেকে নাঈমকে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা এবং পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাই কোয়েল পালনে সফল হয়েছেন তিনি। তার মতো আরও অনেক যুবককে সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা হচ্ছে।