লিবিয়ায় নির্যাতনে বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু: দালালের বাবা-মা গ্রেফতার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মানবপাচারকারী দালালচক্রের হাতে মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীধরপাশা গ্রামের কলেজছাত্র একুয়ান ইসলাম (২০) হত্যার অভিযোগে দালালের বাবা-মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাদের সুনামগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন শ্রীধরপাশা গ্রামের বাসিন্দা লিবিয়া বসবাসরত দালাল আলী হোসেনের বাবা আবুল মিয়া (৫৫) ও মা আছমা বেগম (৪৫)।

পুলিশ ও নিহত কলেজছাত্রের পরিবারের দায়েরকৃত মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৩ এপ্রিল শ্রীধরপাশা গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে লিবিয়া বসবাসরত মানবপাচারকারী দালাল আলী হোসেনের সঙ্গে সাত লাখ টাকা চুক্তিতে লিবিয়া যায় শ্রীধরপাশা গ্রামের তরিকুল ইসলামের ছেলে কলেজছাত্র একুয়ান ইসলাম। সেখানে পৌঁছার পর দালালচক্র তাকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালায়। এবং মাফিয়ার কাছ থেকে তাকে বাঁচাতে আরও টাকা চায়। ছেলেকে বাঁচাতে ২৩ এপ্রিল একুয়ানের বাবা আরও সাত লাখ টাকা পাঠান দালাল আলী হোসেনের বাবা আবুল মিয়া ও মা আছমা বেগমের মাধ্যমে। চলতি বছরের ১৫ জুন আরও পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে একুয়ানকে ইতালি পাঠানোর চুক্তি হয় তাদের সঙ্গে। ১৬ জুন খবর আসে একুয়ান মারা গেছেন। পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ২৯ সেপ্টেম্বর একুয়ানের লাশ দেশে আসে। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর ৩ অক্টোবর একুয়ানের বাবা তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় মামলা করেন।

জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, আসামিদের হবিগঞ্জ জেলা সদরের বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন মোহনপুর এলাকা থেকে রোববার গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ভ্যানেটি ব্যাগ, চার লাখ ১৫ হাজার টাকা, সাতটি মোবাইল ফোন, একটি এটিএম কার্ড, দুটি ব্যাংক চেকবই ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাইদ সোমবার এ ঘটনায় জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সন্মেলন করে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন।

সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার জগন্নাথপুর সার্কেল শুভাশীষ ধর জানান, মানবপাচারকারীদের কবলে পড়ে অনেক পরিবার সর্বস্ব হারাচ্ছে। তাই এ মামলাটি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আসামিদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর