শিনজো আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে টোকিওতে পৌঁছেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে টোকিও পৌঁছেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। জাপানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) টোকিওতে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ ২১৭ দেশের ৭০০ অতিথি অংশ নিচ্ছে। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নভেম্বরের শেষ ভাগে জাপান সফরে যাবেন। ঢাকা-টোকিও’র কূটনীতিকরা প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি এবং আলোচ্য বিষয় চূড়ান্ত করতে গত সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে এই যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। সেখান থেকে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাপানের পথে রওনা দিয়েছিলেন।
জাপানে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শিনজো আবে গত ৮ জুলাই জাপানের নারা শহরে নির্বাচনী প্রচারণাকালে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হন। বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধু দেশ জাপানের সাবেক এই নেতার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পর শোক প্রকাশ করে গত ৯ জুলাই সারাদেশে একদিনের শোক পালন করা হয় এবং দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
জাপান দূতাবাসের শোক বইতে দেশের জনগণের পক্ষে গত ১২ জুলাই শোক প্রকাশের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই জাপান বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাপান সফর করেন। তখন থেকেই জাপান বাংলাদেশের খুব ভালো বন্ধু রাষ্ট্র। আনন্দের বিষয় জাপান সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে কখনো কোনো শর্ত আরোপ করেনি। শিনজো আবে অনেক দীর্ঘ সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। শিনজো আবে’র সঙ্গে আমাদের খুব আন্তরিক সম্পর্ক ছিল, যা দেশের উপকারে কাজে লেগেছে। আমাদের দেশের অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে শিনজো আবে সাহায্য করেছিলেন। আমরাও জাপানকে সাহায্য করেছি। আমরা ধনী দেশ নই। কিন্তু জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে আমরা জাপানকে ভোট দিয়েছি। এ জন্য জাপান বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করেছে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে যে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাপান সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান গিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’কে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শিনজো আবে বাংলাদেশ সফর করেন। এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক ব্যাপক বিস্তৃত হয়েছে, যা সমন্বিত সহযোগিতার সম্পর্ক। শিনজো আবে’র এমন ঘটনায় আমরা শকড। আর জাপানের মত দেশে প্রকাশ্যে গুলি করে মেরে ফেলা খুবই অবিশ্বাস্য ঘটনা। আমরা এই ঘটনায় খুবই মর্মাহত, সারাদেশবাসী মর্মাহত। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি এই ঘটনায় শোকবার্তা দিয়েছেন। আমরা এই ঘটনায় রাষ্ট্রীয়ভাবে একদিনের শোক পালন করেছি।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাপান সফরে যাবেন। সফরটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে গত সপ্তাহ থেকে ঢাকা-টোকিও’র কূটনীতিকরা কাজ শুরু করেছেন। আগামী বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এই বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি গত ৭ জুলাই বলেন, চলতি বছর দুই দেশের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। কারণ এই বছর জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই বছরের শেষ ভাগে টোকিওতে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত জাপান। ওই সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক উচ্চস্তরে উন্নীত হবে এবং কৌশলগত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর