নিরাপদ সবজিগ্রাম গড়ল কৃষি অফিস

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে বিভিন্ন গ্রামে নিরাপদ সবজি চাষে কৃষকদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তারা নানা সময় কৃষকদের নিয়ে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের নভেম্বর মাসে কৃষক পর্যায়ে জৈব বালাইনাশক তৈরি ও তা ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করে বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলার ৪টি গ্রামে কাজ শুরু হয়। কৃষকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। দীর্ঘ পাঁচ মাসের চলমান কার্যক্রমে আশানুরূপ সাফল্য আসে ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের এতবারপুর ও রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গ্রাম।

কথাগুলো বলছিলেন কার্যক্রমটির পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণকারী তৎকালীন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায়।

তিনি আরও জানান, স্থানীয় সহজলভ্যতার ভিত্তিতে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, এতবারপুর গ্রামে নিমের নির্যাস আর সীমান্তবর্তী দক্ষিণগ্রামে ব্যবহৃত হবে মেহগনির বীজ। তন্মধ্যে, দক্ষিণগ্রামের আটজন কৃষক শসা, বেগুন ও ঢেঁড়স চাষ করেন। তারা উৎপাদন করেন সাত মেট্রিক টন নিরাপদ সবজি।

দক্ষিণ গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক ও রফিক মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুরুতে তারা মেহগনির বীজ থেকে তৈরিকৃত জৈব বালাইনাশকে কাজ হবে বা ফসলের কোনো ক্ষতি হবে কিনা আশ্বস্ত হতে পারছিলেন না। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. মুজিবুর রহমান ও উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা দুই দফা উঠান বৈঠক ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। জৈব বালাইনাশক তৈরি ওপর হাতেকলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। মাঠে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন পোকামাকড় ও রোগ চেনান। দুই-এক প্রথমে শুরু করে এখন প্রায় সবাই মেহগনি বীজ ব্যবহার করেন।

কৃষক সুমন মিয়া জানান, পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় প্রচুর মেহগনি বীজ পাওয়া যায়। সবাই যার যার প্রয়োজন মতো জোগাড় করে নেন। গাছে এখন নতুন ফল আসছে, আগামী শীতের জন্য সবাই সংগ্রহ করব।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. আফরিনা আক্তার জানান, কৃষকদের নিরাপদ সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করাটা বেশ কষ্টসাধ্য। তবে আমাদের এদিকে এগোনো ছাড়া বিকল্প উপায় নেই। ভোক্তাপর্যায়ে নিরাপদ সবজি গ্রহণের সচেতনতা ও নিরাপদ সবজির ভালো দাম নিশ্চিত করা গেলে কৃষক পর্যায়ে আগ্রহ বাড়বে। মাঠে কর্মরত উপসহকারী কৃষি অফিসাররা নিরাপদ সবজি উৎপাদনে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর