ফোন কলে পরিচয়, তরুণীকে মিথ্যে বিয়ে-ধর্ষণ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মকবুল হোসেন মৃধা, থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০২১ সালে নরসিংদীর এক তরুণীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কলের মাধ্যমে পরিচয় হয়।

গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। দেশে এসে প্রেমিকাকে দেখা করতে বলেন মকবুল। মিথ্যে বিয়ে সাজিয়ে কবুলও বলেন। স্বামী হিসেবে একাধিকবার ওই তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন।

বর্তমানে ওই তরুণীকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে চান না মকবুল। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আসামি মকবুলসহ তার কয়েকজন স্বজন। ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা খান এসব তথ্য জানান।

মামলার আসামিরা হলেন- ফতুল্লা মডেল থানার হরিহর পাড়ার আমতলাস্থ আব্দুল মতিন মৃধার (মৃত) ছেলে ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মকবুল হোসেন (৫৫), চাঁদপুর জেলার সদর থানার প্রফেসর পাড়ার করিম গাজীর (মৃত) ছেলে সৈয়দ আলী (৫০), তার স্ত্রী ও মকবুলের বোন হোসনা বেগম (৪৫), ফতুল্লা মডেল থানার পশ্চিম মাসদাইরের রফিকুল ইসলামের মেয়ে লাভলী (৩২) ও একই থানার ধর্মগঞ্জ ঢালি পাড়ার মৃত আমির হোসেনের মেয়ে ইভা (২৭)।

এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের শুরুর দিকে এ মামলার বাদির সঙ্গে মোবাইলে কলের মাধ্যমে মকবুল হোসেন মৃধার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন মকবুল। চলতি বছরের ২৩ মার্চ প্রেমিকাকে ফোন করে জানান, তিনি দেশে এসেছেন এবং চাঁদপুরে বোনের বাসায় আছেন। অসুস্থতার কথা জানিয়ে প্রেমিকাকে চাঁদপুর আসার অনুরোধ করেন।

প্রেমিকের কথা বিশ্বাস করে ভুক্তভোগী নরসিংদী থেকে চাঁদপুর চলে আসেন। সেখানে রাত ১১টার দিকে স্থানীয় হুজুর ডেকে প্রেমিকাকে বিয়ে করেন মকবুল। রাতে তারা বাসরও করেন। চাঁদপুর একদিন থাকার পর মকবুল ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ ঢালিপাড়ায় বড় ভাই আমিরের (মৃত) বাসায় প্রেমিকাকে নিয়ে আসেন। সেখানে কয়েকদিন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অবস্থানের পর গত ৬ মার্চ প্রেমিকাকে নিজ বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। তাকে বলা হয়, পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠান করে তাকে তুলে আনা হবে।

এরপর মামলার বাদি নিজ বাড়ি ফিরে আসেন। এভাবে কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর মকবুল নানা টালবাহানা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বাদির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। গত ৩০ জুলাই এ মামলার বাদি জানতে পারেন, মকবুল ঢালিপাড়াস্থ তার ভাইয়ের বাড়িতেই আছেন। পরে তিনি মকবুলের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু এ সময় তিনি ভুক্তভোগীকে নিজের স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করেন। পরে তাকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

এ ঘটনার পর স্থানীয় মহিলা মেম্বারসহ পথচারীরা রাস্তায় ভুক্তভোগীকে দেখতে পেয়ে একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তার স্বজনদের খবর দেওয়া হয়। গত ২ আগস্ট ভুক্তভোগীর ভাই ওই হাসপাতালে এসে তাকে নরসিংদী ফিরিয়ে নেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এসআই গোলাম মোস্তফা খান এ ব্যাপারে বলেন, মামলার প্রধান আসামি মকবুল বিবাহিত। তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। যে মামলা দায়ের হয়েছে, সেটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর