ঢাকা ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দায়িত্বে অবহেলার রেলপথে ৭ মাসে ১০৫২ দুর্ঘটনা, নিহত ১৭৮

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৩৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২
  • ২০২ বার

শান্তা ফারহানাঃ মিরসরাইর খৈয়াছড়ায় নির্মম রেলপথ দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গত ৭ মাসে ছোট-বড় ১০৫২ টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭৮ জন এবং আহত ১১৭০ জন। এরমধ্যে অধিকাংশ দুর্ঘটনাই ঘটেছে কেট কিপারদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বলে জানিয়েছেন সেভ দ্য রোড-এর মহাসচিব শান্তা ফারজানা। সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, শওকত হোসেন ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সহ-সভাপতি আনজুমান আরা শিল্পী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা জানান, অপরাধ-দুর্নীতির কারণে রেলের ২ হাজার ৮৫৬টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। অবৈধ ১ হাজার ৩৬১টি। অর্থাৎ, প্রায় ৪৮ শতাংশ অবৈধ। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে-৩৩টি ক্রসিং কে বা কারা ব্যবহার করছে, তা কেউ জানে না। এছাড়া বৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোর মধ্যে ৬৩২টিতে গেটকিপার নেই। অবৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোয় যেমন গেটকিপার নেই, নেই কোনো সুরক্ষা সরঞ্জামও। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬ টি, আহত হয়েছে ৫২, নিহত হয়েছে ১৪ জন, ১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪১ টি, আহত হয়েছে ১১১ জন, নিহত হয়েছে ২৭ জন, ১ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২২ টি, আহত হয়েছে ১৮৬ জন, নিহত হয়েছে ৩১ জন, ১ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১২ টি, আহত হয়েছে ১৬৬ জন, নিহত হয়েছে ৪২ জন; মে মাসে আহত ২২১ জন, নিহত হয়েছে ২৩ জন; দুর্ঘটনা ঘটেছে ২১২ টি; জুন মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৯৭ টি; আহত হয়েছে ১৭২ জন, নিহত হয়েছে ১৭ জন এবং জুলাই মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪২ টি, ঈদুল আযহার ঈদযাত্রাসহ বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছে ২৩২ জন, নিহত হয়েছে ২৪ জন।

২৪ টি জাতীয় দৈনিক, ১৮ টি ইলেকট্রনিক্স গণমাধ্যম, ২২ টি নিউজ পোর্টাল এবং সারাদেশে সেভ দ্য রোড-এর বিভিন্ন শাখার স্বেচ্ছাসেবিদের তথ্যর ভিত্তিতে তৈরি করা এই প্রতিবেদনে যে তথ্য উঠে এসেছে, সেই তথ্যর চেয়েও ভয়ংকর রেলওয়ের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

মাসের নাম রেলক্রসিং দুর্ঘটনা/আহত/নিহত সেলফি দুর্ঘটানা/আহত/নিহত ছাদ/কাটা পরে/ ধাক্কায়/আহত/নিহত
জানুয়ারি ৭/২৯/৮ ১১/২১/৪ ৮/২/২
ফেব্রুয়ারী ২০/৯২/২০ ১১/১০/৫ ১০/৯/২
মার্চ ১১১/১০০/১৫ ৮০/৭০/১০ ৪২/১৬/৬
এপ্রিল ৭১/১২৬/২৩ ৩১/৩০/১৭ ১০/১০/২
মে ১৫০/১৫০/১৫ ৫০/৬০/৫ ১২/১১/৩
জুন ১৪০/১২২/১০ ৪০/৪০/৫ ১৭/২০/২
জুলাই ৯০/১৮৫/১৮
৩০/২৭/৪ ২২/২০/২

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি নিহতদের পরিবারকে কমপক্ষে ১০ লক্ষ এবং আহতদের সরকারি অর্থায়নে চিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন সেভ দ্য রোড নেতৃবৃন্দভ। একই সাথে রেলওয়ের বর্তমান পরিস্থিতির উত্তরণে সেভ দ্য রোড-এর পক্ষ থেকে ৭ টি সুপারিশ দেয়া হয়েছে। ১. অবৈধ ক্রসিংগুলোর সমাধান করা ২. দুর্নীতিবাজ রেল কর্মকর্তা কর্মচারিদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় ৩. সরকারি লেজুড়ভিত্তিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নামে নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম বন্ধ করে রেলকে গণমূখি বাহন হিসেবে প্রতিষ্ঠায় আত্ম নিয়োগ করা ৪. যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ রেলওয়েকে বেসরকারি খাত থেকে মুক্ত করে রাষ্ট্রিয় তত্বাবধায়নে পরিচালনার সুপরিকল্পিত উদ্যেগ গ্রহণ করা ৫. সচিব-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সকল রকম আরাম-আয়েশ বাতিল করে সারাদেশে রেলওয়ের উন্নয়নে নিবেদিত থাকা ৬. যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উপর নজরদারি বাড়ানো এবং সারাদেশের সকল স্থানে কার্যকর সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা ৭. প্রতি ৩ কিলোমিটারে পর্যবেক্ষণ করার জন্য রেলওয়ে পুলিশ-এর বিশেষ বুথ স্থাপন করা।

শান্তা ফারজানা
মহাসচিব, সেভ দ্য রোড। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দায়িত্বে অবহেলার রেলপথে ৭ মাসে ১০৫২ দুর্ঘটনা, নিহত ১৭৮

আপডেট টাইম : ০১:৩৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২

শান্তা ফারহানাঃ মিরসরাইর খৈয়াছড়ায় নির্মম রেলপথ দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গত ৭ মাসে ছোট-বড় ১০৫২ টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭৮ জন এবং আহত ১১৭০ জন। এরমধ্যে অধিকাংশ দুর্ঘটনাই ঘটেছে কেট কিপারদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বলে জানিয়েছেন সেভ দ্য রোড-এর মহাসচিব শান্তা ফারজানা। সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, শওকত হোসেন ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সহ-সভাপতি আনজুমান আরা শিল্পী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা জানান, অপরাধ-দুর্নীতির কারণে রেলের ২ হাজার ৮৫৬টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। অবৈধ ১ হাজার ৩৬১টি। অর্থাৎ, প্রায় ৪৮ শতাংশ অবৈধ। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে-৩৩টি ক্রসিং কে বা কারা ব্যবহার করছে, তা কেউ জানে না। এছাড়া বৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোর মধ্যে ৬৩২টিতে গেটকিপার নেই। অবৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোয় যেমন গেটকিপার নেই, নেই কোনো সুরক্ষা সরঞ্জামও। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬ টি, আহত হয়েছে ৫২, নিহত হয়েছে ১৪ জন, ১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪১ টি, আহত হয়েছে ১১১ জন, নিহত হয়েছে ২৭ জন, ১ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২২ টি, আহত হয়েছে ১৮৬ জন, নিহত হয়েছে ৩১ জন, ১ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১২ টি, আহত হয়েছে ১৬৬ জন, নিহত হয়েছে ৪২ জন; মে মাসে আহত ২২১ জন, নিহত হয়েছে ২৩ জন; দুর্ঘটনা ঘটেছে ২১২ টি; জুন মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৯৭ টি; আহত হয়েছে ১৭২ জন, নিহত হয়েছে ১৭ জন এবং জুলাই মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪২ টি, ঈদুল আযহার ঈদযাত্রাসহ বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছে ২৩২ জন, নিহত হয়েছে ২৪ জন।

২৪ টি জাতীয় দৈনিক, ১৮ টি ইলেকট্রনিক্স গণমাধ্যম, ২২ টি নিউজ পোর্টাল এবং সারাদেশে সেভ দ্য রোড-এর বিভিন্ন শাখার স্বেচ্ছাসেবিদের তথ্যর ভিত্তিতে তৈরি করা এই প্রতিবেদনে যে তথ্য উঠে এসেছে, সেই তথ্যর চেয়েও ভয়ংকর রেলওয়ের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

মাসের নাম রেলক্রসিং দুর্ঘটনা/আহত/নিহত সেলফি দুর্ঘটানা/আহত/নিহত ছাদ/কাটা পরে/ ধাক্কায়/আহত/নিহত
জানুয়ারি ৭/২৯/৮ ১১/২১/৪ ৮/২/২
ফেব্রুয়ারী ২০/৯২/২০ ১১/১০/৫ ১০/৯/২
মার্চ ১১১/১০০/১৫ ৮০/৭০/১০ ৪২/১৬/৬
এপ্রিল ৭১/১২৬/২৩ ৩১/৩০/১৭ ১০/১০/২
মে ১৫০/১৫০/১৫ ৫০/৬০/৫ ১২/১১/৩
জুন ১৪০/১২২/১০ ৪০/৪০/৫ ১৭/২০/২
জুলাই ৯০/১৮৫/১৮
৩০/২৭/৪ ২২/২০/২

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি নিহতদের পরিবারকে কমপক্ষে ১০ লক্ষ এবং আহতদের সরকারি অর্থায়নে চিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন সেভ দ্য রোড নেতৃবৃন্দভ। একই সাথে রেলওয়ের বর্তমান পরিস্থিতির উত্তরণে সেভ দ্য রোড-এর পক্ষ থেকে ৭ টি সুপারিশ দেয়া হয়েছে। ১. অবৈধ ক্রসিংগুলোর সমাধান করা ২. দুর্নীতিবাজ রেল কর্মকর্তা কর্মচারিদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় ৩. সরকারি লেজুড়ভিত্তিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নামে নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম বন্ধ করে রেলকে গণমূখি বাহন হিসেবে প্রতিষ্ঠায় আত্ম নিয়োগ করা ৪. যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ রেলওয়েকে বেসরকারি খাত থেকে মুক্ত করে রাষ্ট্রিয় তত্বাবধায়নে পরিচালনার সুপরিকল্পিত উদ্যেগ গ্রহণ করা ৫. সচিব-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সকল রকম আরাম-আয়েশ বাতিল করে সারাদেশে রেলওয়ের উন্নয়নে নিবেদিত থাকা ৬. যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উপর নজরদারি বাড়ানো এবং সারাদেশের সকল স্থানে কার্যকর সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা ৭. প্রতি ৩ কিলোমিটারে পর্যবেক্ষণ করার জন্য রেলওয়ে পুলিশ-এর বিশেষ বুথ স্থাপন করা।

শান্তা ফারজানা
মহাসচিব, সেভ দ্য রোড।