হাওর বার্তা ডেস্কঃ বয়স মাত্র ১১ বছর। কিন্তু স্কচটেপে মোড়ানো ইয়াবার ছোট ছোট প্যাকেট গিলে ফেলছে নিমিষেই। আবার সময়মতো বিশেষ ওষুধ খেয়ে তা পায়ুপথ দিয়ে বেরও করে দিচ্ছে। শুধু একটি-দুটি নয়, একে একে গিলে ফেলছে সে ২৬টি প্যাকেট। ৩০টি করে এসব প্যাকেটে মিলেছে ৭৮০ পিস ইয়াবা।
সূত্র জানায়, ২০ এপ্রিল রাজধানীর ডেমরার ডগাইর এলাকায় অভিযানটি পরিচালনার সময় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগ তিনজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন তৈয়্যবা বেগম (২৫), তার কথিত সন্তান পরিচয় দেওয়া ১১ বছরের শিশু এবং তার ভাই আব্দুল্লাহর স্ত্রী মোসা. ইয়াসমিন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেফতারের পর তাদের কাছে কিছুই পাওয়া যায়নি। তবে সোর্স তার তথ্যের ব্যাপারে অনড় থাকায় একপর্যায়ে প্রত্যেককে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে করার পর ইয়াসমিনসহ শিশুটির পাকস্থলীতে বিশেষ কিছু দৃশ্যমান হয়। এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা একপর্যায়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়। তারা জানায়, তাদের পাকস্থলীতে দেড় হাজার ইয়াবা আছে। এরপর বিশেষ ওষুধ খাওয়ানোর পর তাদের পায়ুপথ দিয়ে ইয়াবাভর্তি প্যাকেটগুলো একে একে বেরিয়ে আসে।
জানা যায়, এ চক্রের সঙ্গে শুধু তারা নন, তাদের পুরো পরিবার জড়িত। বাবা ছাড়া প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যরা হলেন জোবাইদা ওরফে শাহিদা, সাবিকুন নাহার, তৈয়্যবা বেগম, ফাতেমা আক্তার ওরফে শারমীন, ভাই আব্দুল্লাহ এবং শারমিনের স্বামী রুবেল। তারা নিজেরদেকে কক্সবাজারের বাসিন্দা দাবি করলেও স্থানীয় সূত্রগুলো পুলিশকে নিশ্চিত করেছে তারা সবাই মূলত মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা নাগরিক।
ডিবি উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) কাজী শফিকুল আলম বলেন, গ্রেফতার চার বোন, এক ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী এমনকি তাদের বাবাও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা পুরো পরিবার দীর্ঘ ৪-৫ বছর মাদক ব্যবসা করে আসছে। বিভিন্ন সময়ে মাদকসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে নিজেদের নাম ছাড়াও বাড়িঘরের ঠিকানাও ভুল দিতেন। মিয়ানমার থেকে নদীপথে আসা ইয়াবা সংগ্রহ করে ঢাকায় এনে এভাবে বিক্রি করতেন। একেক সময় একেক বোন ইয়াবার চালানগুলো নিয়ে আসতেন। ডেমরা এলাকায় অবস্থান নিয়ে আশপাশের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির পর চলে যেতেন টেকনাফে। আবার আরেক বোন আরেকটি চালান নিয়ে আসতেন। পথিমধ্যে কোথাও যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সন্দেহের চোখে পড়তে না হয়, সেজন্য সঙ্গে আনা হতো শিশুদের। এমনকি বেশির ভাগ শিশুদের ইয়াবা খাইয়ে এমন ভয়াবহ প্রক্রিয়ায় চালান নিয়ে আসতেন।