কোয়াডের বৈঠক চীনকে রুখতে ৫০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা জোট কোয়াডের সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার নেতারা সমুদ্রে অবৈধ মাছ শিকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা এ অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইন্দো-প্যাসিফিকের অবকাঠামো উন্নয়নে ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে কোয়াডের চার নেতার উপস্থিতিতে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকের পরে এই অঙ্গীকার করেছেন।

চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি মোকাবিলায় গঠিত এই জোট জলবায়ু পরিবর্তন, প্রযুক্তি, কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরিণতি নিয়েও আলোচনা করেছে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা ভারতই একমাত্র সদস্য, যারা এখনও ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের নিন্দা জানায়নি।

এক যৌথ বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, কোয়াডের সর্বশেষ পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো এটি দেখানো যে, এই জোট একটি ‘শুভশক্তি’। গুরুতর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের সময়ে এই অঞ্চলে বাস্তব সুবিধা আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই জোট।

বিবৃতিতে চীনের নাম উল্লেখ না করে নেতারা বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিকের স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করতে চায় এমন যে কোনো জবরদস্তিমূলক, উসকানিমূলক বা একতরফা পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেন তারা। এর মধ্যে রয়েছে বিতর্কিত বৈশিষ্ট্যের সামরিকীকরণ, উপকূলরক্ষী জাহাজ এবং সামুদ্রিক মিলিশিয়ার বিপজ্জনক ব্যবহার এবং অন্যান্য দেশের উপকূলীয় সম্পদ আহরণ কার্যক্রম ব্যাহত করার প্রচেষ্টা। এসব অভিযোগ স্পষ্টতই চীনের বিরুদ্ধে আরোপ করা হয়েছে।

এসব উদ্বেগ নিরসনের জন্য কোয়াড যে নতুন সামুদ্রিক নজরদারি উদ্যোগ ঘোষণা করছে তার নাম ইন্দো-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ফর মেরিটাইম ডোমেন অ্যাওয়ারনেস। এটি মানবিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাড়া দিতে এবং অবৈধ মাছ ধরা মোকাবিলায় আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে।

কোয়াড নেতারা অবকাঠামোতে সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, এ ধরনের বিনিয়োগ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উৎপাদনশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে ঋণসংক্রান্ত সমস্যা সমাধান এবং আগামী পাঁচ বছরে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অবকাঠামোগত সহায়তা এবং বিনিয়োগ ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রসারিত করা। নেতারা প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ দেশগুলোর জন্য অতিরিক্ত সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ দেশগুলোতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের প্রভাব বেড়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোয়াড নেতারা ইউক্রেনের সংঘাত নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং সব রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মানের ওপর জোর দিয়েছেন।

এদিকে শীর্ষ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার নৃশংস যুদ্ধ মানবিক বিপর্যয়ের সূত্রপাত করেছে। এটি কেবল একটি ইউরোপীয় সমস্যা নয়। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা।

সূত্র: আলজাজিরা

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর