ঢাকা ০৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাহিদ হত্যায় ঢাকা কলেজের ৬ ছাত্র শনাক্ত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ এপ্রিল ২০২২
  • ১৩৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষে ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যায় জড়িত অস্ত্রধারী ছয়জনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন সোমবার জানিয়েছেন, তারা সবাই ঢাকা কলেজের। ঘটনার সময় কয়েকজন হেলমেট পরা ছিল। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এরমধ্যে নিহত নাহিদকে কুপিয়ে জখমকারী ইমনকে আটক করা হয়েছে। হেলমেট পরিহিত এ গ্রুপের সবাই ছিলেন হামলার সম্মুখভাগে। এছাড়া ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে সরাসরি হামলায় অংশগ্রহণকারী আরও সাতজনের পরিচয় নিশ্চিতের পথে রয়েছেন তদন্তকারীরা।

তিন স্তরে অবস্থান নিয়ে হামলা পরিচালনাকারীদের সামনের সারিতে ছিলেন অস্ত্রধারীরা। সেখানে ছিল ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের সদস্য। গোয়েন্দাদের হাতে থাকা বেশিরভাগ ফুটেজে তাদের ছবিই এসেছে। তাদের পরের স্তরেই ছিল দেশীয় অস্ত্রসহ থাকা আরেকটি দল।

এ দলের ছয়জনকে শনিবার রাতে এবং রোববার সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি ইউনিট তাদের হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী চার শীর্ষ নেতাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সংঘর্ষের ওই মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রোববার ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। তবে সেখান থেকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই ঘটনায় নিহত হন দোকানকর্মী মোহাম্মদ মুরসালিন। দুই হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা দুটির তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

তাদের পাশাপাশি র‌্যাব ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে। তদন্তকারী সূত্রগুলো বলছে, সংঘর্ষের পর থেকেই ভিডিও ফুটেজগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করছিল তারা। নজরদারিতে রেখেছিল হামলায় অংশগ্রহণকারীদের।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে নাহিদকে কোপানো ইমনসহ কয়েকজকে আটক করা হয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কিছুই জানাননি তারা। আটককৃতদের নাম প্রকাশ করলে তাদের সহযোগীরা পালিয়ে যেতে পারেন-এমন আশঙ্কায় এখনই নাম প্রকাশ করতে চান না তারা।

ইতোমধ্যে সেদিনের ঘটনায় জড়িতরা গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এজন্য তাদের কয়েকজন চুল কেটে ন্যাড়া হয়ে, দাঁড়ি রেখে, চোখে গ্লাস পরে, নিয়মিত পাঞ্জাবি পরে আত্মগোপনের চেষ্টা করছেন।

আটক ইমনও গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিতে ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাকটিভেটেড করে, মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানান গোয়েন্দারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (ডিসি) বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে অন্যদেরও শনাক্ত করা হচ্ছে।

যেহেতু ঘটনায় ছাত্রদের সম্পৃক্ততা রয়েছে, তাই তদন্তে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। যাতে নিরীহ কেউ কোনোভাবে শাস্তি না পায়। তবে হত্যায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি আরও জানান, নিউমার্কেটে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে চারটি মামলা হয়। এর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার তদন্ত করছে থানা পুলিশ এবং দুটি হত্যা মামলার তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। হত্যা মামলা ছাড়া অন্য দুই মামলায় অভিযুক্তদের ধরতেও চলছে অভিযান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নাহিদ হত্যায় ঢাকা কলেজের ৬ ছাত্র শনাক্ত

আপডেট টাইম : ০৫:৪২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ এপ্রিল ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষে ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যায় জড়িত অস্ত্রধারী ছয়জনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন সোমবার জানিয়েছেন, তারা সবাই ঢাকা কলেজের। ঘটনার সময় কয়েকজন হেলমেট পরা ছিল। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এরমধ্যে নিহত নাহিদকে কুপিয়ে জখমকারী ইমনকে আটক করা হয়েছে। হেলমেট পরিহিত এ গ্রুপের সবাই ছিলেন হামলার সম্মুখভাগে। এছাড়া ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে সরাসরি হামলায় অংশগ্রহণকারী আরও সাতজনের পরিচয় নিশ্চিতের পথে রয়েছেন তদন্তকারীরা।

তিন স্তরে অবস্থান নিয়ে হামলা পরিচালনাকারীদের সামনের সারিতে ছিলেন অস্ত্রধারীরা। সেখানে ছিল ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের সদস্য। গোয়েন্দাদের হাতে থাকা বেশিরভাগ ফুটেজে তাদের ছবিই এসেছে। তাদের পরের স্তরেই ছিল দেশীয় অস্ত্রসহ থাকা আরেকটি দল।

এ দলের ছয়জনকে শনিবার রাতে এবং রোববার সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি ইউনিট তাদের হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী চার শীর্ষ নেতাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সংঘর্ষের ওই মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রোববার ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। তবে সেখান থেকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই ঘটনায় নিহত হন দোকানকর্মী মোহাম্মদ মুরসালিন। দুই হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা দুটির তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

তাদের পাশাপাশি র‌্যাব ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে। তদন্তকারী সূত্রগুলো বলছে, সংঘর্ষের পর থেকেই ভিডিও ফুটেজগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করছিল তারা। নজরদারিতে রেখেছিল হামলায় অংশগ্রহণকারীদের।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে নাহিদকে কোপানো ইমনসহ কয়েকজকে আটক করা হয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কিছুই জানাননি তারা। আটককৃতদের নাম প্রকাশ করলে তাদের সহযোগীরা পালিয়ে যেতে পারেন-এমন আশঙ্কায় এখনই নাম প্রকাশ করতে চান না তারা।

ইতোমধ্যে সেদিনের ঘটনায় জড়িতরা গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এজন্য তাদের কয়েকজন চুল কেটে ন্যাড়া হয়ে, দাঁড়ি রেখে, চোখে গ্লাস পরে, নিয়মিত পাঞ্জাবি পরে আত্মগোপনের চেষ্টা করছেন।

আটক ইমনও গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিতে ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাকটিভেটেড করে, মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানান গোয়েন্দারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (ডিসি) বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে অন্যদেরও শনাক্ত করা হচ্ছে।

যেহেতু ঘটনায় ছাত্রদের সম্পৃক্ততা রয়েছে, তাই তদন্তে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। যাতে নিরীহ কেউ কোনোভাবে শাস্তি না পায়। তবে হত্যায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি আরও জানান, নিউমার্কেটে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে চারটি মামলা হয়। এর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার তদন্ত করছে থানা পুলিশ এবং দুটি হত্যা মামলার তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। হত্যা মামলা ছাড়া অন্য দুই মামলায় অভিযুক্তদের ধরতেও চলছে অভিযান।