ঢাকা ০৮:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বোরো ধানে পোকার আক্রমণ, মরে যাচ্ছে শীষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৫:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২
  • ১৩২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এবারও বোরো ধানে বাম্পার ফলন হয়েছে ময়মনসিংহে। দিগন্তজুড়ে ফসলের মাঠে শুধু ধান আর ধান।

কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে বোরো ধানের শীষ মরে সাদা হয়ে যাওয়ায় কৃষকের এই হাসি যেন ম্লান হয়ে যাচ্ছে নিমিষেই। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে কৃষকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতোমধ্যে নিচু এলাকার জমিতে অল্প পরিসরে বোরো ধান কাটা শুরু হলেও আগামী সপ্তাহ দুই পর পুরোদমে শুরু হবে ধান কাটা। এখন কৃষকরা জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঠিক এই সময়ে ধানের শীষে দেখা দিয়েছে পোকা আক্রমণ। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে স্থানীয় কৃষকদের।

জেলার গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা যায় এই চিত্র। সবুজ ধানের শীষের সমারোহে মাঝে মাঝে মরে যাচ্ছে শীষ। এ অবস্থায় কি করবে তারা, এ নিয়েও দুশ্চিন্তার শেষ নেই কৃষকদের।

স্থানীয় ভোলার আলী গ্রামের কৃষক আ. জলিল, মোহাম্মদ আলীসহ আরও অনেকেই জানান, হাড় ভাঙা পরিশ্রমে এবার ধানের বাম্পার ফলন আশা করছি। কিন্তু ধান পাকতে শুরু করার আগ মুহূর্তে শীষ মরা রোগ ফসলের ক্ষতি করছে। পরিচর্যা করেও এর রোগ ঠেকানো যাচ্ছে না।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অরুনিমা কাঞ্চি সুপ্রভা শাওন বলেন, আবহাওয়ার বৈরী আচরণে বোরো ধানে এ ধরনের পোকার আক্রমণ হয়েছে। এতে ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে আগে থেকে পরিচর্যা নিলে এই ধরনের পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ধানের পোকার আক্রমণের সত্যতা নিশ্চিত করেন গৌরীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফন নাহার। তিনি জানান, ধানের শীষে পোকা একটি ছত্রাকজনিত রোগ। বিআর ২৮ জাতে এর আক্রমণ বেশি। এতে খুব একটা ক্ষতি হবে না।

তিনি আরো জানান, এ বছর গৌরীপুর উপজেলায় ২০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বাম্পার ফলনে তা শতভাগ অর্জিত হয়েছে।

একই অবস্থা গৌরীপুর, ত্রিশাল, গফরগাঁওসহ জেলার সবকটি উপজেলার বোরো ফসলের। তবে বিষয়টি নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, শীষ মরে যাওয়া ধানের ব্লাস্ট রোগ। আর এ রোগে কৃষকদের প্রতিকারে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতিউজ্জামান জানান, কৃষি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। ধানের শীষ মরে যাওয়ার নাম ব্লাস্ট রোগ। আগাম ঔষধ ছিটিয়ে এর প্রতিকার পাওয়া যাবে। এতে ফলনে তেমন ক্ষতি হবে না। পোকা আক্রান্ত ধানের জাত পরিবর্তন করে অন্য জাতের ধান আবাদ করেও এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। তবে এ বছর জেলায় বোরো ধান আবাদে ২ লাখ ৬০ হাজার ৩৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্জিত হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৮৫৫ হেক্টর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বোরো ধানে পোকার আক্রমণ, মরে যাচ্ছে শীষ

আপডেট টাইম : ১১:১৫:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এবারও বোরো ধানে বাম্পার ফলন হয়েছে ময়মনসিংহে। দিগন্তজুড়ে ফসলের মাঠে শুধু ধান আর ধান।

কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে বোরো ধানের শীষ মরে সাদা হয়ে যাওয়ায় কৃষকের এই হাসি যেন ম্লান হয়ে যাচ্ছে নিমিষেই। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে কৃষকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতোমধ্যে নিচু এলাকার জমিতে অল্প পরিসরে বোরো ধান কাটা শুরু হলেও আগামী সপ্তাহ দুই পর পুরোদমে শুরু হবে ধান কাটা। এখন কৃষকরা জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঠিক এই সময়ে ধানের শীষে দেখা দিয়েছে পোকা আক্রমণ। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে স্থানীয় কৃষকদের।

জেলার গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা যায় এই চিত্র। সবুজ ধানের শীষের সমারোহে মাঝে মাঝে মরে যাচ্ছে শীষ। এ অবস্থায় কি করবে তারা, এ নিয়েও দুশ্চিন্তার শেষ নেই কৃষকদের।

স্থানীয় ভোলার আলী গ্রামের কৃষক আ. জলিল, মোহাম্মদ আলীসহ আরও অনেকেই জানান, হাড় ভাঙা পরিশ্রমে এবার ধানের বাম্পার ফলন আশা করছি। কিন্তু ধান পাকতে শুরু করার আগ মুহূর্তে শীষ মরা রোগ ফসলের ক্ষতি করছে। পরিচর্যা করেও এর রোগ ঠেকানো যাচ্ছে না।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অরুনিমা কাঞ্চি সুপ্রভা শাওন বলেন, আবহাওয়ার বৈরী আচরণে বোরো ধানে এ ধরনের পোকার আক্রমণ হয়েছে। এতে ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে আগে থেকে পরিচর্যা নিলে এই ধরনের পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ধানের পোকার আক্রমণের সত্যতা নিশ্চিত করেন গৌরীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফন নাহার। তিনি জানান, ধানের শীষে পোকা একটি ছত্রাকজনিত রোগ। বিআর ২৮ জাতে এর আক্রমণ বেশি। এতে খুব একটা ক্ষতি হবে না।

তিনি আরো জানান, এ বছর গৌরীপুর উপজেলায় ২০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বাম্পার ফলনে তা শতভাগ অর্জিত হয়েছে।

একই অবস্থা গৌরীপুর, ত্রিশাল, গফরগাঁওসহ জেলার সবকটি উপজেলার বোরো ফসলের। তবে বিষয়টি নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, শীষ মরে যাওয়া ধানের ব্লাস্ট রোগ। আর এ রোগে কৃষকদের প্রতিকারে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতিউজ্জামান জানান, কৃষি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। ধানের শীষ মরে যাওয়ার নাম ব্লাস্ট রোগ। আগাম ঔষধ ছিটিয়ে এর প্রতিকার পাওয়া যাবে। এতে ফলনে তেমন ক্ষতি হবে না। পোকা আক্রান্ত ধানের জাত পরিবর্তন করে অন্য জাতের ধান আবাদ করেও এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। তবে এ বছর জেলায় বোরো ধান আবাদে ২ লাখ ৬০ হাজার ৩৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্জিত হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৮৫৫ হেক্টর।