হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় এবার ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কৃষকরা ধানের জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। ফলন পেয়েছেন একরে ৯০ মণ। শুধু ফলন নয়; দামেও বেশ খুশি চাষিরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৯৫০ একর জমিতে যা গতবছরের চেয়ে দ্বিগুণ।
সিংপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদীঘা গ্রামের কৃষক স্বপন মিয়া জানান, কয়েক বছর ধরে বোরো ধানের চাষ করে আমিসহ এলাকার কৃষকরা লোকসান দিচ্ছেন। এ বছর আমার ১২ একর ধানের জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। প্রতি একরে ৯০ মণ করে ভুট্টা হয়েছে। ভালো ভাবেই ফসল তুলতে পেরেছি। প্রতি মণ ভুট্টা ১২০০ থেকে ১২৫০ বিক্রি করছি। সব খরচ বাদ দিয়েও দশ লাখ টাকা লাভ হবে। আমার মতো এলাকার অনেক কৃষক তাদের ধানের জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন।
ধানের ফলন কম হওয়া ও নতুন বোরো ধান উঠার সময় ধানের দাম কম থাকায় উপজেলার ঘোড়াদীঘা, টেংগুরিয়া, সিংপুর, ভাটিবরাটিয়া, বরুলিয়া, কাচিকাটা, পাগলারচর, পরাইনারচর, দীঘলারচর, ছারিচর, মাধাইনগর হাওরে এবার কৃষকরা প্রচুর পরিমাণে ভুট্টার আবাদ করেছেন।
কৃষকরা জানান, আগে ওই সব জমিতে বোরো ধান, মিষ্টি আলু ও বাদাম চাষ করা হতো। প্রতি বছর ধান করে লোকসান হওয়ায় ওই সব জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছে কৃষকরা।
সিংপুরগ্রামের কৃষক সুনামদ্দিন মিয়া বলেন, ভুট্টা চাষে লাভ বেশি। কারণ ভুট্টা ধানের একমাস আগে তোলা যায়, এ সময় কৃষি শ্রমিকের মজুরি থাকে কম। এ বছর ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। দাম পেয়েছি ভালো। একই কথা বলেন, ইসব মিয়া তিনি ২০ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করে খরচ বাদ দিয়ে ১৫ লাখ টাকা লাভ করেছেন।
সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ভুট্টা ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও, আগাম পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরের বোরো জমি, এছাড়াও বি-২৮ জমিতে চিটা না আসায় ও বি-২৯ ধানের শিষে আগা মরে যাওয়ায় কৃষকের মুখ মলিন হয়ে যাচ্ছে।
নিকলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, গত বছর উপজেলায় ৩ হাজার ২০ একর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছিল। এ বছর ৫ হাজার ৯৫০ একর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। ধানে সেঁচ বেশি লাগে আর খরচ বেশি। সেই তুলনায় ভুট্টা চাষে খরচ কম। কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভের কথা চিন্তা করেই বেশি করে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।