দেশের বিরুদ্ধে চিঠিদাতাদের বিচার হওয়া উচিত: তথ্যমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘দেশের বিরুদ্ধে চিঠিদাতাদের বিচার হওয়া উচিত’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ। আজ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, দেশের বিরুদ্ধে, দেশকে সাহায্য দিতে নিষেধ করে, সাহায্য দিলেও সেটিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বিদেশে চিঠি দেয়ায় মির্জা ফখরুল সাহেবের বিচার হওয়া উচিত, বিএনপি’র বিচার হওয়া উচিত।’

ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও দেশবিরোধী অপপ্রচারের অংশ হিসেবে, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য অর্থাৎ বিদেশের কাছে দেশকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করেছে -এই অভিযোগ যখন আমরা উপস্থাপন করলাম তখন বিএনপি প্রথমে অস্বীকার করেছিল। মির্জা ফখরুল সাহেব সংবাদ সম্মেলন করে বললেন, তিনি কোনো চিঠি দেন নাই।’

‘পরে যখন আমরা বিএনপির প্যাডে মির্জা ফখরুল সাহেবের স্বাক্ষরিত চিঠি এবং সেই চিঠিতে তিনি বাংলাদেশকে সাহায্য দেয়া বন্ধ করার যে কথা বলেছেন এবং একইসাথে বিএনপি কার্যালয়ের ঠিকানা দিয়ে তারা যে লবিস্ট নিয়োগ করেছে সেই দলিল-দস্তাবেজ গণমাধ্যমে উপস্থাপন করলাম তখন তারা নিশ্চুপ হয়ে চুপসে গেলেন’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের অপকর্ম দেশের মানুষের কাছে যখন উন্মোচিত হলো তখন তাদের আর কোনো জবাব নেই। সেজন্য তারা এখন নানা প্রশ্ন উপস্থাপন করার চেষ্টা করবে, তাদের অপকর্ম ঢাকার জন্য নানা কথা বলবে এটি খুবই স্বাভাবিক।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের সরকার নিজ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য, রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য, পিআর অথবা লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও বলা হয়েছে আমরা পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছি।

এগুলো করার কারণেই আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, করোনার মধ্যেও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এত কিছুর মধ্যেও আমাদের রপ্তানি পঞ্চাশ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার যা করে, আমরা তাই করেছি এবং সেগুলো ‘ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট’ সরকারি চুক্তি। সুতরাং এখানে প্রশ্ন রাখার কিছু নেই।’

বিএনপি মহাসচিব দেশকে সাহায্য দেয়া বন্ধের জন্য যে চিঠি লিখেছেন, এটি যদি ইউরোপের কোনো দেশ হতো তাহলে মির্জা ফখরুল সাহেব এবং বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা হতো এবং তিনি রাজনীতিতে অযোগ্য হতেন এবং তার বিচার হতো, বলেন হাছান মাহ্‌মুদ।

করোনার টিকা বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন, এটি বহু উন্নয়নশীল দেশ করতে পারেনি।

যে ভাসমান জনগোষ্ঠী, বস্তিবাসী এবং কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা টিকা পাচ্ছেন, তারা ধারণাই করেনি যে সরকার এভাবে টিকা দেবে। সরকার খুঁজে খুঁজে বের করে মানুষকে টিকা দিচ্ছে। এটি বহু দেশ করতে পারেনি।

‘সরকার আজকে দশ কোটি মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছে, দ্বিতীয় ডোজসহ ষোলো কোটির বেশি মানুষ টিকা পেয়েছে আর বুস্টার ডোজসহ আরো বেশি -এ অবস্থায় টিকা নিয়ে আগে যারা সমালোচনা করেছিলেন, পরে টিকা নিয়েছিলেন এবং পরে বুস্টার ডোজও নিয়েছেন, তাদেরকে অনুরোধ জানাবো এখন কিছু বলার জন্য’ বলেন ড. হাছান।

ইসি সার্চ কমিটির বিষয়ে বিএনপি’র মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে এবং সেখানে দু’জন বাদে বাকিরা সবাই সাংবিধানিক পদধারী। সাংবিধানিক পদধারীরা কোনো দলের নয়, সরকারেরও নয়।

কারণ রাষ্ট্রপতি কিংবা সরকার তাদেরকে সরাতে পারবে না, সেটির নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে। আর সুশীল সমাজের দু’জন অত্যন্ত নিরপেক্ষ এবং শ্রদ্ধেয় মানুষ হিসেবে সুপরিচিত। সুতরাং এই সার্চ কমিটি নিয়ে আসলে বিরূপ মন্তব্যের কোনো সুযোগ নেই। মির্জা ফখরুল সাহেব বলছেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন না। কিন্তু নির্বাচন কখনো সরকারের অধীনে হয় না।

নির্বাচনকালে নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার চাকরি নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত হয়ে যায়। সুতরাং সার্চ কমিটি কীভাবে গঠিত হলো, কী করলো, সেটি তাদের কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়। সবকিছুতেই ‘না’ বলার বাতিক থেকে বিএনপি যদি বের হতে না পারে, বিএনপি যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটি জানি না, ভবিষ্যৎ সেটি বলে দেবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘আসলে মূল বিষয় হচ্ছে বিএনপি’র তো জনগণের ওপর কোনো আস্থা নেই, সেজন্য সবকিছুতেই না বলার পদ্ধতি তারা অব্যাহত রেখেছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জল ঘোলা করে কোনো কিছু করা যায় কি না, সেই চেষ্টাই তারা করে যাচ্ছে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর