ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভেজাল ওষুধে সয়লাব নেত্রকোনার বাজার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১৬৪ বার

বিজয় দাস,নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ এলাকার জনগণের নিরাপদ জীবন যাপনের জন্য জরুরি। ভেজাল খাদ্য ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধের  মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয়ের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। সেই সাথে ভেজাল রোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। তবুও ঠেকানো যাচ্ছেনা ভেজাল ওষুধের বিস্তার। ভেজাল খাদ্য ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষুধ দেদারছে বিক্রি হচ্ছে নেত্রকোনো সদরসহ জেলার দশ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে।

নেত্রকোনায় গত পাঁচ বছরে ১ হাজার ৭৭০ প্রতিষ্ঠানকে ৭২ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবু ঠেকানো যাচ্ছে না মেয়াদাত্তীর্ণ ওষুধের বিস্তার। বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সরকারী সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে   এই তথ্য পাওয়া গেছে।
নেত্রকোনার সব উপজেলায়  অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের মিশ্রণে খাদ্যপণ্য প্রস্তুত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ মজুদ রাখা ও বিক্রয় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। জেলার অধিকাংশ ঔষধের দোকান ও হোটেল-রেঁস্তোরার একই অবস্থা। এ সব হোটেল-রেঁস্তোরার বাহিরে চাকচিক্য থাকলেও ভিতরের অবস্থা শোচনীয়। সম্প্রতি নেত্রকোনা শহরের হাজী বিরিয়ানি হোটেলে খাবার খেয়ে অসুস্থ হন অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ-শিশু। তাদের প্রায় সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জানা যায়, সম্প্রতি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ হতে বারহাট্টা উপজেলার ফকিরের বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় তম্বী মেডিক্যাল হল নামে এক ঔষধের দোকানেই পাওয়া যায় ৬২ বাক্স মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ। একটি বাক্সের ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২০১৭ সালে। জেলার সকল বাজের একই অবস্থা।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ শাহ আলম জেলার বিভিন্ন ঔষুধের দোকান, মুদি দোকান ও হোটেল-রেস্তোরায় মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্য মজুদ রাখা ও বিক্রয়ের কথা স্বীকার করেন। তিনি কালের কন্ঠকে বলেন, ভেজাল রোধে আমরা প্রতিদিনই জেলার কোথাও-না-কোথাও অভিযান পরিচালনা ও দোষীদের জরিমানা করছি। জেলা শহর বা উপজেলা সদরের বাইরে ভেজাল বেশি। ভেজালের মধ্যে জীবন রক্ষাকারী ঔষুধও রয়েছে।

ভেজাল রোধে ২০১৬ সালের শুরু থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে অভিযান পরিচালনা করে ১ হাজার ৭৭০টি প্রতিষ্ঠানকে দন্ডিত করা হয়েছে। এ সময় তাদের নিকট থেকে ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

এদিকে, শাস্তি দেওয়া হলে বা জরিমানা করা হলেও ব্যবসায়ীরা তাদের অভ্যাস ত্যাগ করছে না বলে অনেক ভোক্তার অভিযোগ। সকল সরকারী দপ্তরে দন্ড প্রাপ্তদের বিশদ তালিকা সংরক্ষণের দাবি জানান তারা।

নেত্রকোনার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, ‘ভেজাল খাদ্য গ্রহণ করলে পেটে বিষক্রিয়ায় কিডনি ড্যামেজ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিষের নামান্তর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভেজাল ওষুধে সয়লাব নেত্রকোনার বাজার

আপডেট টাইম : ১২:০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

বিজয় দাস,নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ এলাকার জনগণের নিরাপদ জীবন যাপনের জন্য জরুরি। ভেজাল খাদ্য ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধের  মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয়ের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। সেই সাথে ভেজাল রোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। তবুও ঠেকানো যাচ্ছেনা ভেজাল ওষুধের বিস্তার। ভেজাল খাদ্য ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষুধ দেদারছে বিক্রি হচ্ছে নেত্রকোনো সদরসহ জেলার দশ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে।

নেত্রকোনায় গত পাঁচ বছরে ১ হাজার ৭৭০ প্রতিষ্ঠানকে ৭২ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবু ঠেকানো যাচ্ছে না মেয়াদাত্তীর্ণ ওষুধের বিস্তার। বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সরকারী সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে   এই তথ্য পাওয়া গেছে।
নেত্রকোনার সব উপজেলায়  অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের মিশ্রণে খাদ্যপণ্য প্রস্তুত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ মজুদ রাখা ও বিক্রয় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। জেলার অধিকাংশ ঔষধের দোকান ও হোটেল-রেঁস্তোরার একই অবস্থা। এ সব হোটেল-রেঁস্তোরার বাহিরে চাকচিক্য থাকলেও ভিতরের অবস্থা শোচনীয়। সম্প্রতি নেত্রকোনা শহরের হাজী বিরিয়ানি হোটেলে খাবার খেয়ে অসুস্থ হন অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ-শিশু। তাদের প্রায় সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জানা যায়, সম্প্রতি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ হতে বারহাট্টা উপজেলার ফকিরের বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় তম্বী মেডিক্যাল হল নামে এক ঔষধের দোকানেই পাওয়া যায় ৬২ বাক্স মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ। একটি বাক্সের ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২০১৭ সালে। জেলার সকল বাজের একই অবস্থা।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ শাহ আলম জেলার বিভিন্ন ঔষুধের দোকান, মুদি দোকান ও হোটেল-রেস্তোরায় মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্য মজুদ রাখা ও বিক্রয়ের কথা স্বীকার করেন। তিনি কালের কন্ঠকে বলেন, ভেজাল রোধে আমরা প্রতিদিনই জেলার কোথাও-না-কোথাও অভিযান পরিচালনা ও দোষীদের জরিমানা করছি। জেলা শহর বা উপজেলা সদরের বাইরে ভেজাল বেশি। ভেজালের মধ্যে জীবন রক্ষাকারী ঔষুধও রয়েছে।

ভেজাল রোধে ২০১৬ সালের শুরু থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে অভিযান পরিচালনা করে ১ হাজার ৭৭০টি প্রতিষ্ঠানকে দন্ডিত করা হয়েছে। এ সময় তাদের নিকট থেকে ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

এদিকে, শাস্তি দেওয়া হলে বা জরিমানা করা হলেও ব্যবসায়ীরা তাদের অভ্যাস ত্যাগ করছে না বলে অনেক ভোক্তার অভিযোগ। সকল সরকারী দপ্তরে দন্ড প্রাপ্তদের বিশদ তালিকা সংরক্ষণের দাবি জানান তারা।

নেত্রকোনার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, ‘ভেজাল খাদ্য গ্রহণ করলে পেটে বিষক্রিয়ায় কিডনি ড্যামেজ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিষের নামান্তর।