এবার বাঁ হাতের চিকিৎসা করাতে কাটা লাগল ডান হাত

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাম হাত ভেঙে যাওযায় চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন যুবক। কিন্তু, স্বপ্নেও হয়তো তিনি ভাবেননি, এর জন্য তার ডান হাত কাটা লাগবে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে এই ঘটনা ঘটেছে।

ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, খড়গপুরের বাসিন্দা হতভাগা এই যুবকের নাম সুভাষ দাস। পেশায় তিনি একজন রেলকর্মী।

সুভাষ ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে একটি দুর্ঘটনায় সুভাষের বাঁ হাতের হাড় ভেঙে যায়। সেই সময় তিনি বিশিষ্ট অস্থি বিশেষজ্ঞ আব্দুল লতিফের কাছে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ওই সময় তার হাতে লোহার পাত লাগিয়ে হাড় জুড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

চিকিৎসক বলেছিলেন, পরের বছর অস্ত্রোপচার করে ওই ধাতব পাতগুলি বের করে দেওয়া হবে। কিন্তু ২০১৩ সালে সুভাষের মা ও বাবা উভয়ের মৃত্যু হয়। তাই অস্ত্রোপচার করাতে পারেননি। তারপর ২০১৬ সালে রেলে চাকরি পান সুভাষ। নতুন চাকরি পেয়ে অস্ত্রোপচারের জন্য ছুটি আবেদন করা ঠিক হবে না ভেবে আর অস্ত্রোপচার করেননি তিনি।

গত ৬ ডিসেম্বর সুভাষ হাতের পুরোনো সমস্যার জন্য চিকিৎসক আবদুল লতিফের দ্বারস্থ হন। ওইদিন রাতে এক বেসরকারি হাসপাতালে অস্থি বিশেষজ্ঞ আবদুল লতিফ বাঁ হাতের প্লেট বের করে দেন। আ্যন্টিবায়োটিক ও অন্য প্রয়োজনে একটি চ্যানেল করা হয় তার ডান হাতে।

সুভাষের অভিযোগ, এই চ্যানেল করার ঘণ্টা কয়েক পর থেকে যন্ত্রণা শুরু হয়। অভিযোগ, সে সময় আবদুল লতিফকে ডাকা হলেও তিনি আসেননি। রাত ১১টা নাগাদ যখন চিকিৎসক পৌঁছেন ততক্ষণে হাতের অবস্থা ভয়ঙ্কর। তিনি রোগীকে দেখার পরেই কলকাতার এসএসকেএম- হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে একটি রেফার চিঠি লিখে দেন।

আবদুল লতিফের কথা মতো সুভাষ দাসকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে রওনা হয় তার পরিবার। কিন্তু সেখান থেকে একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তাকে আরও একটি হাসপাতাল ঘুরিয়ে রেলের সঙ্গে সংযুক্ত একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ডান হাতের কনুই থেকে বাদ দেন।

দু’দিন আগে তাকে খড়গপুর শহরের নিমপুরা এলাকার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক আবদুল লতিফ বলেন, ‘অস্থি রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি অস্ত্রোপচার করেছি এবং যে হাতে অস্ত্রোপচার করেছি তা সফল। বিষয়টা হয়েছে অন্য একটি হাতে যেখানে একজন নার্স ইঞ্জেকশন দিয়েছেন। যে কোনো ভাবে হোক ওই হাতের ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অবস্থায় আমার কিছুই করার ছিল না তাই আমি পরামর্শ দিয়েছি কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার।

তিনি বলেন, একজন চিকিৎসক হিসেবে আমার খুবই খারাপ লাগছে। কেননা অস্ত্রোপচারটা আমি করেছি। কিন্তু আবারও বলছি আমি যে কাজ করেছি সেখানে কোনও সমস্যা হয়নি।’

তবে এ নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া বলেছেন, ঘটনাটি প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর