পরমাণু অস্ত্র রক্ষায় গোপনে কাজ করেছিলেন মার্কিন জেনারেল মার্ক মিলি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু অস্ত্র রক্ষায় গোপনে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন দেশটির জয়েন্টস চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার দুই দিন পর তিনি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেন। তার আশঙ্কা ছিল তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু অস্ত্রকে তার শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারেন। এমনকি ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করতে পারেন এই আশঙ্কায় জেনারেল মার্ক মিলি চীনের সেনাপ্রধানকেও ফোন করেছিলেন।

পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড এবং ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টার রবার্ট কস্টার লেখা ‘পেরিল’ নামের বইয়ে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বইটিতে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালের নির্বাচনে হারার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল বাতিলের দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি। তাই ট্রাম্প যেকোনো সময় সেনা অভিযান পরিচালনা বা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিতে পারেন এমন আশঙ্কা করেছিলেন জেনারেল মার্ক মিলি।

সেই আশঙ্কা থেকে ক্ষমতার বাইরে গিয়ে পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তায় গোপনে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্পের সামরিক উপদেষ্টা মার্ক মিলি। গত ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের সমর্থকরা ক্যাপিটল হিলে হামলার পর মার্ক মিলি আরও চিন্তিত হয়ে পড়েন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই হামলা একটা কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।

হামলার দু’দিন পরই জেনারেল মার্ক মিলি প্রেসিডেন্টের ওপর ছড়ি ঘোরানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ৮ জানুয়ারি পেন্টাগনে তার অফিসে গোপন এক বৈঠকে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের ডাকেন। পেন্টাগনের ওয়ার রুমে ঐ বৈঠকে জেনারেল মার্ক মিলি তার বাহিনীর অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন যেন প্রেসিডেন্টের আদেশ এলেও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার না করা হয়। তিনি বলেন, ‘প্রক্রিয়ার মধ্য থেকেই সবকিছু করতে হবে। তবে সবাইকে মনে রাখতে হবে এই প্রক্রিয়ায় আমিও একটা অংশ। তাকে না জানিয়ে যেন কিছু না করা হয় সেটা প্রেসিডেন্টের নির্দেশ হলেও।’

এই নির্দেশনা দেওয়ার পর মার্ক মিলি সহকর্মীদের প্রত্যেকের কাছে যান এবং চোখে চোখ রেখে কথা বলেন। সাংবাদিকরা তাদের বইয়ে লিখেছেন, এটা অনেকটা শপথ করানোর মতোই মনে হয়।

দুই শতাধিক সাক্ষাৎকার, প্রত্যক্ষদর্শী আর ঘটনায় জড়িত থাকা ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে ট্রাম্পের ক্ষমতায় থাকার শেষ দিনগুলো নিয়ে ‘পেরিল’ লিখেছেন উডওয়ার্ড ও কস্টা। শুধু তাই নয়, তথ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হতে নানা দলিল, ডায়রি, ই-মেইল, ফোনালাপের প্রতিলিপি, সভার কার্যপত্রও খতিয়ে দেখেছেন তারা। বইটি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবে। তবে তার আগেই এর একটি কপি পেয়েছে সিএনএন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর