জাতিসংঘে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীতা বিষয়ক রেজুলেশন উত্থাপন করলো বাংলাদেশ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্বের শিকার বিশ্বের ১.১ বিলিয়ন মানুষকে ২০৩০ সালের মধ্যে
চক্ষু স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে গতকাল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে
গৃহীত হয় ‘সকলের জন্য দৃষ্টি : টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপ’
শীর্ষক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীতা বিষয়ক প্রথম রেজুলেশন। ‘ফ্রেন্ডস অব ভিশন’ এর পক্ষে
রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত
রাবাব ফাতিমা। রেজুলেশনটি উত্থাপনের সময় বাংলাদেশের সাথে যোগ দেয় গ্রুপের সহ-
সভাপতি এন্টিগুয়া ও বারবাডোস এবং আয়ারল্যান্ড। এতে সর্বমোট ১১৫ দেশ
সহপৃষ্ঠপোষকতা করে। রেজুলেশনটিতে সুদৃঢ় কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে যার মাধ্যমে কোটি
কোটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের কাছে শক্তিশালী আশার বার্তা পৌঁছাতে পারবে বলে আশা
করা যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, রেজুলেশনটি চক্ষু সেবার বৈশ্বিক প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এক
ঐতিহাসিক মুহুর্ত। রেজুলেশনটিতে নেতৃত্ব দিতে পেরে বাংলাদেশ সম্মানিত বোধ করছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের ১.১ বিলিয়ন মানুষ অন্ধত্ব নিয়ে বসবাস করছে। প্রতিরোধযোগ্য
এ দৃষ্টিহীনতা একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ যার জন্য প্রয়োজন একটি বৈশ্বিক সমাধান।
এক্ষেত্রে আমাদের এই ঐক্যমত বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ, তাদের পরিবার ও
সম্প্রদায়ের জীবন ধারায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীতা এবং অন্ধত্বজনিত কারণে মানুষের
উৎপাদনশীলতা হারানোর ক্ষতির হিসেব অনুযায়ী সারাবিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৪১১ বিলিয়ন
মার্কিন ডলার ব্যয় হয় যা একটি বিশাল বৈশ্বিক আর্থিক বোঝা। চক্ষু স্বাস্থ্য সেবার
সুযোগ শুধু শিক্ষা থেকে শিশুদের ঝরে পড়ার হার ৪৪% হ্রাস করেনা বরং এটি বেতনভূক্ত
চাকুরি পাবার সুযোগ ১০% বাড়িয়ে দেয়। অন্ধত্বের ক্ষেত্রে ৫৫% মহিলা বা বালিকা;
পুরুষদের তুলনায় তাদের অন্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও ৮% বেশি।
রেজুলেশনেটিতে চক্ষু স্বাস্থ্য সেবাকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জাতীয়
প্রতিশ্রুতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান
জানানো হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ও দাতাদের লক্ষ্য-ভিত্তিক
অর্থায়ন, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব মোকাবিলায়
সহযোগিতা প্রদানের কথাও বলা হয় । জাতিসংঘ যাতে এর সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের মাধ্যমে
চক্ষু স্বাস্থ্য সেবার বিষয়টি তাদের কাজের সাথে যুক্ত করে নেয়, সে অনুরোধও জানানো
হয়। এছাড়া জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এবং এ সংক্রান্ত পরবর্তী পর্যালোচনায়
চক্ষু সেবায় নতুন একটি লক্ষ্য অন্তর্ভূক্ত করার আহ্বান জানানো হয় রেজুলেশনটিতে।

যথাযথ চক্ষু স্বাস্থ্য সেবায় প্রবেশাধিকার নেই এমন প্রায় ৯০ ভাগ বাস করে নিম্ন
ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। ২০১৮ সালের এক হিসেব মতে বাংলাদেশে ৩০ ও তদুর্ধ বয়সের
অন্ধ মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার এবং ৬০ লাখেরও বেশি মানুষের চশমা বা অন্য
কোনো উপায়ে দৃষ্টিজনিত সমস্যা সমাধানের প্রয়োজন হয়।

#

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর