আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘিরে বিকশিত হবে শ্রীমঙ্গলের পর্যটন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি শ্রীমঙ্গল। অসংখ্য চা বাগানের মনোরম শোভা এখানে বিস্তৃত।

এখানেই যোগ হলো- ভূমিহীন দরিদ্র মানুষের জন্য নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্প। গাছ-গাছালি ঘেরা সবুজ প্রাচুর্যের আর টিলা-পাহাড়ি ভাঁজে ভাঁজে গড়ে উঠা এই আবাসনগুলো সৌন্দর্যকে আরো একধাপ এগিয়ে দিয়েছে। এগুলোকে কেন্দ্র করেই পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

শুধু তা-ই নয়, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ নিয়ে যখন সারা দেশে দুর্নীতি-অনিয়মের ঝড় উঠেছে ঠিক সেই সময় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে ডকুমেন্টারি নির্মাণ করছে সরকার।

এ উপজেলর আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো সারা দেশে মডেল হিসেবে দেখানো হবে বলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম  এই তথ্য জানিয়েছেন।

গত ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনকালে শ্রীমঙ্গলের আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোর রূপ-সৌন্দর্য দেশবাসীর দৃষ্টি কাড়ে। অনেকে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য পর্যটক আকর্ষণে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার হিসেবে দেখছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথম ধাপে এ উপজেলায় ভূমিহীন গৃহহীনদের জন্য ৩০০ ঘর বরাদ্দ আসে। উপজেলার মির্জাপুর, আশিদ্রোণ ও সদর ইউনিয়নে এসব ঘর নির্মাণ শুরু হয়। ২৩ জানুয়ারি ৭১টি ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়। আর দ্বিতীয় ধাপে আসে আরও ৩০০ ঘর। এগুলোর নির্মাণ শুরু হয় কালাপুর ইউনিয়নের মাইদিহি পাহাড়ে। এরমধ্যে ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী ভিডিও করফারেন্সে ১৬০টি ঘর উদ্বোধন করেন। বাকি ঘরগুলোর নির্মাণ চলছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা নকশা অনুযায়ী কাজ করেছি। তবে দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য প্রতিটি ঘরে কাঠের বদলে এসএস অ্যাঙ্গেল দেওয়া হয়েছে। আর ১০ ইঞ্চির পরিবর্তে ১৫ ইঞ্চি নিচ থেকে ঘরের ভিত্তি তোলা হয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি ঘরের বাথরুমে লাগানো হয়েছে সিরামিকের প্যান। যাতে দেবে না যায় তার জন্য আমরা প্রথম ঘরগুলো উঁচু জমিতে নির্মাণ করেছি। আর নিচু জমিগুলো চার-পাঁচ মাস আগে ভরাট করে রেখেছি। ভিটা শক্ত হওয়ার পর সেখানে ঘর নির্মাণ করা হবে। ’

শ্রীমঙ্গল আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পেছনের অন্যতম রূপকার শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম  বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আমার গ্রাম-আমার শহর ধারণার প্রতিফলন ঘটেছে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোতে। স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এর দিক-নির্দেশনায় এখানে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির পাশাপাশি আশ্রয়ণগুলোকে ঘিরে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ, ইউডিসি, কমিউনিটি ক্লিনিক, বিদ্যালয়, হাট-বাজারসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা’।

তিনি আরো বলেন, ‘দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্পের বিকাশে এই আশ্রয়ণগুলো নতুন উপযোগিতা সৃষ্টি করবে। পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় এখানকার লেবু ও আনারস উৎপাদনে উপকারভোগীদের যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্থানীয় হস্তশিল্পে নারী উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে উপকারভোগীদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে। পাশাপাশি এই প্রকল্প কেন্দ্রীক পর্যটন শিল্প দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখতেও সক্ষম হবে’ বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর