হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৭৫০ সাল থেকে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সে হিসাব অনুসারে শোলাকিয়া ঈদগাহের বয়স ২শ’ ৭১ বছর। প্রতিষ্ঠার ৭৮ বছর পর ১৮২৮ সালে প্রথম বড় জামাতে এই মাঠে একসঙ্গে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়ালাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন।
এই সোয়ালাখ থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়ালাখিয়া’, যা উচ্চারণ বিবর্তনে হয়েছে শোলাকিয়া। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত বছর প্রথমবারের মতো ঈদের দিন মুসল্লিশূন্য থাকে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা দুই ঈদেই শোলাকিয়ায় ঈদজামাতের আয়োজন করা হয়নি।
গত ১৫ জুলাই কিশোরগঞ্জে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে জুমে অনুষ্ঠিত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সেই অনুযায়ী ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় উপমহাদেশের বৃহত্তম ঈদুল ফিতরের জামাত। ২০১৬ সালে ঈদুল ফিতরের দিন ঈদজামাতের আগে মাঠের কাছে একটি চেকপোস্টে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটলেও লাখ লাখ মুসল্লি ঈদজামাতে অংশ নিয়েছিলেন।
চলমান করোনা মহামারিতে গতবছর প্রথমবারের মতো ঈদের দিনে খালি থাকে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এবারও ঈদুল ফিতরে সেখানে জামাত অনুষ্ঠিত না হওয়া দেখা মিলেনি সেই চিরচেনা কোলাহল। লাখো মানুষের মুখরতা।
একইভাবে বুধবার (২১ জুলাই) অনুষ্ঠেয় ঈদুল আযহাতেও মুসল্লিশূণ্য থাকবে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান।
বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম ঈশাখাঁ’র ষোড়শ বংশধর হয়বতনগরের জমিদার দেওয়ান মান্নান দাঁদ খান তাঁর মায়ের অসিয়াত মোতাবেক ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের জন্য ৪.৩৫ একর জমি ওয়াক্ফ করেন। সেই ওয়াক্ফ দলিলে উল্লেখ রয়েছে, ১৭৫০ সাল থেকে এ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
প্রতিষ্ঠার ৭৮ বছর পর ১৮২৮ সালে প্রথম বড় জামাতে এই মাঠে একসঙ্গে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়ালাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। কিশোরগঞ্জ মৌজার এ মাঠের মূল আয়তন বর্তমানে ৬.৬১ একর।