ঢাকা ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা রোধে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণীর যুগান্তকারী আবিস্কার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪২:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১
  • ১৬১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণী সাদিয়া খানম (২৬) কোভিড-১৯ নিরোধক স্প্রে ‘ভলটিক’ আবিষ্কার করে আলোড়ন তৈরি করেছেন। এই স্প্রে সব ধরনের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস ও অন্যান্য অণুজীব শতভাগ ধ্বংস করতে সক্ষম। একবার স্প্রে করার পর ১৪ দিন এর কার্যকারিতা থাকে।

যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা (এনএইচএস) ও যুক্তরাষ্ট্রের নাসাসহ বেশ কিছু খ্যাতনামা সংস্থা ভলটিক স্প্রের পরীক্ষা করে এর সফলতা পেয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি কোম্পানি এটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলো বলেছে, ভাইরাস নিরোধে এই স্প্রে শতভাগ কার্যকর। তাছাড়া এই স্প্রে ব্যবহার করে হাসপাতালগুলোর প্রায় ৭০ পার্সেন্ট পরিচ্ছন্নতা খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব। ২৫ বছর বয়সী সাদিয়ার ‘ভলটিক’ স্প্রে আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে ইতিমধ্যে তিনি ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের অর্ডার পেয়েছেন। এনএইচএস যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কেয়ার হোমে পরীক্ষামূলকভাবে এই স্প্রে ব্যবহার করে সফল হয়েছে। নাসার ল্যাবে এই স্প্রে ব্যবহার হচ্ছে। ইতিমধ্যে সাদিয়ার এই ‘ভলটিক’ স্প্রে বিশ্বের ১৩টি দেশ অর্ডার করেছে। মেডিকেল যন্ত্রপাতি, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, এয়ারলাইন্স ইন্ডাস্ট্রি, আর্ম ফোর্সেস, নিউক্লিয়ার স্টেশনে ব্যবহার করা যায়।

সারা বিশ্ব যখন সারা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জর্জরিত, ওই সময়ই সাদিয়া খানম ভাইরাস নিরোধক কিছু আবিষ্কার করতে গবেষণা শুরু করেন।তিনি যে রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন সেটাকেই তিনি কেস স্টাডি হিসেবে ব্যবহার করেন। প্রায় ১৪ মাসের গবেষণার পর এক সময় সাফল্য ধরা দেয়। তিনি আবিষ্কার করেন বিশেষ স্প্রে ‘ভলটিক’। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী কলিন হেইগান সাদিয়ার তৈরি স্প্রেকে যুগান্তকারী আখ্যায়িত করে এর ডেভলপে এগিয়ে আসেন।

নিজের এই অবিস্কার সম্পর্কে সাদিয়া খানম জানান, তিনি অত্যন্ত আনন্দিত যে তার এই স্প্রে বিশ্বজুড়ে ব্যবহার হবে। শুধু অর্থ উপার্জনই বড় কথা নয়; এটা মানুষকে কোভিড-১৯ মুক্ত জীবনযাপন করতে সাহায্য করবে। স্প্রে থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি আলঝেইমার রোগের ওপর অধিকতর গবেষণা করবেন এবং বিশ্বকে এই রোগের প্রতিষেধক দিতে পারবেন বলে আশাবাদী।

সাদিয়া খানমের পরিবার বর্তমানে যুক্তরাজ্যের চেস্টারে বসবাস করে। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার নাজির বাজারের মোহাম্মদপুর গ্রামে তাদের পূর্ব পুরুষদের নিবাস। বাবা কবির আহমদ রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। মা ফরিদা আহমদ গৃহিণী।তিন ভাইবোনের মধ্যে সাদিয়া সবার বড়। মানচেস্টারের হলিক্রস সিক্সথ ফর্ম কলেজ থেকে জিসিএসই, মানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে বায়ো-মেডিকেলে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে চেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে জেনেটিক্সে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। বর্তমানে সাদিয়া আলঝেইমার ও নিউরোডিজেনারেশন নিয়ে গবেষণা করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

করোনা রোধে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণীর যুগান্তকারী আবিস্কার

আপডেট টাইম : ০২:৪২:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণী সাদিয়া খানম (২৬) কোভিড-১৯ নিরোধক স্প্রে ‘ভলটিক’ আবিষ্কার করে আলোড়ন তৈরি করেছেন। এই স্প্রে সব ধরনের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস ও অন্যান্য অণুজীব শতভাগ ধ্বংস করতে সক্ষম। একবার স্প্রে করার পর ১৪ দিন এর কার্যকারিতা থাকে।

যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা (এনএইচএস) ও যুক্তরাষ্ট্রের নাসাসহ বেশ কিছু খ্যাতনামা সংস্থা ভলটিক স্প্রের পরীক্ষা করে এর সফলতা পেয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি কোম্পানি এটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলো বলেছে, ভাইরাস নিরোধে এই স্প্রে শতভাগ কার্যকর। তাছাড়া এই স্প্রে ব্যবহার করে হাসপাতালগুলোর প্রায় ৭০ পার্সেন্ট পরিচ্ছন্নতা খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব। ২৫ বছর বয়সী সাদিয়ার ‘ভলটিক’ স্প্রে আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে ইতিমধ্যে তিনি ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের অর্ডার পেয়েছেন। এনএইচএস যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কেয়ার হোমে পরীক্ষামূলকভাবে এই স্প্রে ব্যবহার করে সফল হয়েছে। নাসার ল্যাবে এই স্প্রে ব্যবহার হচ্ছে। ইতিমধ্যে সাদিয়ার এই ‘ভলটিক’ স্প্রে বিশ্বের ১৩টি দেশ অর্ডার করেছে। মেডিকেল যন্ত্রপাতি, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, এয়ারলাইন্স ইন্ডাস্ট্রি, আর্ম ফোর্সেস, নিউক্লিয়ার স্টেশনে ব্যবহার করা যায়।

সারা বিশ্ব যখন সারা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জর্জরিত, ওই সময়ই সাদিয়া খানম ভাইরাস নিরোধক কিছু আবিষ্কার করতে গবেষণা শুরু করেন।তিনি যে রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন সেটাকেই তিনি কেস স্টাডি হিসেবে ব্যবহার করেন। প্রায় ১৪ মাসের গবেষণার পর এক সময় সাফল্য ধরা দেয়। তিনি আবিষ্কার করেন বিশেষ স্প্রে ‘ভলটিক’। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী কলিন হেইগান সাদিয়ার তৈরি স্প্রেকে যুগান্তকারী আখ্যায়িত করে এর ডেভলপে এগিয়ে আসেন।

নিজের এই অবিস্কার সম্পর্কে সাদিয়া খানম জানান, তিনি অত্যন্ত আনন্দিত যে তার এই স্প্রে বিশ্বজুড়ে ব্যবহার হবে। শুধু অর্থ উপার্জনই বড় কথা নয়; এটা মানুষকে কোভিড-১৯ মুক্ত জীবনযাপন করতে সাহায্য করবে। স্প্রে থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি আলঝেইমার রোগের ওপর অধিকতর গবেষণা করবেন এবং বিশ্বকে এই রোগের প্রতিষেধক দিতে পারবেন বলে আশাবাদী।

সাদিয়া খানমের পরিবার বর্তমানে যুক্তরাজ্যের চেস্টারে বসবাস করে। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার নাজির বাজারের মোহাম্মদপুর গ্রামে তাদের পূর্ব পুরুষদের নিবাস। বাবা কবির আহমদ রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। মা ফরিদা আহমদ গৃহিণী।তিন ভাইবোনের মধ্যে সাদিয়া সবার বড়। মানচেস্টারের হলিক্রস সিক্সথ ফর্ম কলেজ থেকে জিসিএসই, মানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে বায়ো-মেডিকেলে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে চেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে জেনেটিক্সে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। বর্তমানে সাদিয়া আলঝেইমার ও নিউরোডিজেনারেশন নিয়ে গবেষণা করছেন।