জানা গেল রেলমন্ত্রীর রোমান্টিক প্রেমের গল্প, মিলল ঘটকের পরিচয়

 

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রবীণ রাজনীতিক মুজিবুল হক রেলমন্ত্রী থাকাকালে বিয়ে করে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন। সেই পথেই হাঁটলেন বিপত্নীক বর্তমান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। মন্ত্রী বিয়ে করতে যাচ্ছেন বা বিয়ে করে ফেলেছেন- এমন খবর আগেই এসেছে গণমাধ্যমে। এবার বিয়েটা কীভাবে হলো তা জানা গেল কনে শাম্মী আকতার মনির ভাইয়ের বরাতে। গত ৫ জুন উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন শাম্মী আকতারের বড় ভাই মো. মিলন হোসেন।

জানা গেছে, শাম্মী আকতারের বাসা দিনাজপুরের বিরামপুরের নতুন বাজারে। ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের মেয়ে শাম্মী। তারা দুই ভাই এক বোন। দুই ভাই বর্তমানে বিরামপুরের বাসায় থাকেন। বড় ভাই মিলন হোসেন ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী। অপরজন স্থানীয় ব্যবসায়ী। তাদের আগের বাড়ি পাবনায় ছিল। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) লাইনম্যান পদে চাকরির সুবাদে কয়েক বছর আগে মনির বাবা আব্দুর রহিম বিরামপুরে এসে জায়গা কিনে স্থায়ী হন।

মো. মিলন হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে ঘরোয়াভাবে ৫ জুন আমার বোনের সঙ্গে রেলমন্ত্রীর বিয়ে হয়েছে। বিয়েতে বরপক্ষে উপস্থিত ছিলেন- বিরামপুরের বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী। কনে পক্ষে আমি ও আমার ভাই উপস্থিত ছিলাম। আনুষ্ঠানিকভাবে ছোট পরিসরে যতটুকু করা দরকার; সেভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার বোনের এর আগে কুষ্টিয়ায় বিয়ে হয়েছিল। পারিবারিক সমস্যার কারণে ২০১১ সালে ডিভোর্স হয়ে যায়। ওই ঘরে একটি মেয়ে রয়েছে। এরপর থেকে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় থাকে আমার বোন। ঈদ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিরামপুরের বাড়িতে বেড়াতে আসতো। মাঝে মধ্যে আমরাও যাই।

শাম্মী আকতার বর্তমানে উত্তরাতে থাকেন। তিনি পূর্বে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডমিন বিভাগে চাকরি করতেন। বর্তমানে ‘ল’ পাস করে হাইকোর্টে এক সিনিয়রের সঙ্গে প্র্যাকটিস করছেন। মন্ত্রী নিজেও একজন আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টে তার নামডাকও আছে বেশ। আর তার কাছ থেকে অভিজ্ঞ পরামর্শ নিতে গিয়ে দেখা দুজনের।

খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। দিন বিশেক আগে পরিচয় দুজনের। মন্ত্রী তার জীবনসঙ্গিনীকে হারিয়েছেন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে। আর শাম্মীও বিচ্ছেদের পর থেকে একা। পরস্পরকে ভালো লেগে যায়। আর একপর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন হাতে হাত রাখার। এই বয়সে উদ্দাম প্রেম তো মানায় না। তাই বিয়েটাও হয়ে গেল কদিন যেতে না যেতেই। ডিসেম্বরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্বামী রেলমন্ত্রী সুজনের বাড়িতে যাবেন শাম্মী।

বিয়ের মধ্যস্থতা করেছেন বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী টুটুল। তিনি বলেন, আলোচনা ঢাকায় ওরা শুরু করেছে। কিন্তু আমি মেয়ের পক্ষ থেকে ঘটকের দায়িত্ব পালন করেছি। রেলমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তখন মেয়ের পক্ষ থেকে আমাকে ঘটকের দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়েছিল। আমি সেই দায়িত্ব পালন করেছি।

জানা গেছে, শাম্মী আকতার রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের পূর্ব পরিচিত। বিয়েতে মন্ত্রীর পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না, করোনার কারণে ছোট পরিসরে বন্ধুদের নিয়ে বিয়ে সেরেছেন মন্ত্রী। শাম্মী আক্তারের আগেও বিয়ে হয়েছিল। ২০১১ সালে ডিভোর্স হয়েছে। সেই সংসারে তার একটি কন্যা সন্তান আছে।

নূরুল ইসলামের স্ত্রী নিলুফার জাহান ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন মারা যান। তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। তিন সন্তানেরই বিয়ে হয়েছে।

৬৫ বছর বয়সী নূরুল ইসলাম ১৯৫৬ সালের ৫ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বার এমপি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর রেলমন্ত্রী হিসেবে সরকারের মন্ত্রিসভায় যুক্ত হন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর