রাজ্জাক, মুস্তাফিজের পর তাসকিন

শুরুটা হয়েছিল কিছুটা বাজে। বেশ ভুগছিলেন লাইন, লেংথ নিয়ে। ধীরে ধীরে ফিরেছেন চেনা ছন্দে। তাসকিন আহমেদের হাত ধরেই বাংলাদেশ পেয়েছিল দিনের প্রথম সাফল্য। এবং সেটি জোড়ায়! লঙ্কান ইনিংসের ১২তম ওভারের দ্বিতীয় ও শেষ বলে নিয়েছেন উইকেট দুটি। গতকাল সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে নামের পাশে ৪৮ উই.কেট নিয়ে লংকানদের বিপক্ষে নেমেছিলেন এই গতি তারকা। এই দুই উইকেটে পঞ্চাশের মাইলফলক স্পর্শ করেন তরুন এই পেসার।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে দানুশকা গুনাথিলাকাকে বোল্ড করে তাসকিন থামান বিপজ্জনক জুটি। অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে মিডউইকেট দিয়ে খেলার চেষ্টায় ঠিক মতো পারেননি গুনাথিলাকা। ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। ভাঙে ৬৮ বল স্থায়ী পেরেরার সঙ্গে ৮২ রানের জুটি। ৩৩ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ রান করেন গুনাথিলাকা।
পরে উইকেটে আসা পাথুম নিশাঙ্কাকে দারুণ এক ডেলিভারিতে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করেন তামসিক। লেংথ থেকে বল ওঠায় ব্যাটে ঠিকমতো খেলতে পারেননি নিশাঙ্কা (০)। এই ওভারে ৩ রানে ২ উইকেট নিলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ওয়ানডেতে ৫০তম উইকেটের দেখা পেলেন তাসকিন। ক্যারিয়ারে ৩৯তম ইনিংসে এসে তিনি এই মাইলফলক স্পর্শ করেন। তাসকিন তাÐবের শেষ এখানেই নয়। কুশল মেন্ডিসকে ২২ ও ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গাকে ১৮ রানে ক্রিজ ছাড়া করে ম্যাচে সেরা শিকারির খেতাব জেতেনও বদলে যাওয়া এই গতি তারকা। ইনিংস শেষে নামের পাশে ৯ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪৬ রানের বিনিময়ে তাসকিন থলিতে পুড়েছেন লঙ্কানদের খোয়ানো ৬ উইকেটের ৪টি-ই! একটি শরিফুল ইসলামের, অপরটি রানআউট। সেটিতেও যুক্ত এই সিরিজেই অভিষেক হওয়া এই উদীয়মান পেসারের।
উইকেটের ফিফটি প‚র্ণ করতে তাসকিন আহমেদ ৩৯ ম্যাচে ইনিংস খেলেছেন ৩৮টি, যা বাংলাদেশের কোন বোলার তৃতীয় দ্রæততম। ওয়ানডে সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে তার চেয়ে কম ইনিংসে ৫০ উইকেট পেয়েছেন কেবল মুস্তাফিজুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাক। ২০১৮ সালের ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে ৫১ উইকেটে পৌঁছান মুস্তাফিজুর রহমান। সেটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ২৭তম ম্যাচে ২৬তম ইনিংস। আর দ্বিতীয় দ্রæততম ৫০ উইকেট শিকারি আব্দুর রাজ্জাক এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন ৩২ ম্যাচের ৩২তম ইনিংসে। সেটা ২০০৬ সালের কথা। ঢাকায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ৫২ উইকেটে পৌঁছান বাঁহাতি এই স্পিনার।
কুশল পেরেরার সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ২৮৬ রান করে ফেললেও মাঝের ওভারে গতি আর বাউন্সে তাদের পরিকল্পনা কিছুটা হলেও এলোমেলো করে দিয়েছিলেন তাসকিন। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে তাসকিনকে নতুন বলে ব্যবহার করে খুব বেশি সাফল্য পাননি অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে গতকাল পাওয়ার প্লের পর বোলিংয়ে এসে উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া ব্যাটসম্যানদের যেভাবে নাকানি-চুবানি খাইয়েছেন তাসকিন, তাতেই প্রথম ১০ ওভারে ৭৭ রান করে উড়তে থাকা শ্রীলঙ্কার রানের গতি কমে আসে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর