মার্কেট-শপিংমলে উপচেপড়া ভিড়, মানছে না স্বাস্থ্যবিধি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিন দিন শিথিল হয়ে পড়ছে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন। রাজধানীসহ সারাদেশের দোকানপাট শপিং মলসহ সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। শপিংমলগুলোতে ভিড় বাড়ছে। একই কারণে সড়কে যানবাহনের চাপও বেড়েছে। চেক পোস্টগুলোতে পুলিশের কোনো নজরদারি নেই। এতে সড়কে বাস ছাড়া সব ধরনের যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে। মহাসড়কসহ রাজধানীর ব্যস্ত এলাকাগুলোতে দেখা দিচ্ছে যানজট।
গতকাল সোমবার সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাজারবাগ মোড়ে যানবাহনের দীর্ঘ জট। এই যানজট রাজারবাগ মোড় থেকে খিলগাঁও ফ্লাইওভার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের পরিবহন দেখা গেছে। দুপুরে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারেও দেখা গেছে যানজট। যানবাহনের চাপে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও দেখা গেছে যানজট। মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ ও শিমরাইল এলাকায় দেখা গেছে দীর্ঘ যানজট। প্রচন্ড গরমে এ যানজটের কবলে পড়ে যাত্রী ও চালকদেরকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
দুপুরের আগে রাজধানীর বাংলামোটর মোড়ে দেখা গেছে যানজট। সেখানেও যানবাহনের বিপুল চাপ। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ বলেন, ৫ মিনিট পর পর সিগনাল চাড়তে হচ্ছে। তাতেই দুদিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার বা ফার্মগেটে পুলিশের চেক পোস্ট থাকলেও সেগুলোতে কোনও তল্লাশি দেখা যায়নি। ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। সকালে উত্তরা থেকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে অফিস করার জন্য যাত্রা দিয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রতিটি সিগনালেই জ্যামে পড়তে হয়েছে। আগের চেয়ে যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। কোথাও পুলিশের কোনও তৎপরতাও দেখিনি।
নগরীর সায়েন্সল্যাব, শাহবাগ, গুলিস্তান, পল্টন, কাকরাইল, শান্তিনগর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মগবাজার, কাওরানবাজার, ধানমন্ডিসহ অন্যান্য এলাকায়ও যানবাহনের বিপুল চাপ দেখা গেছে। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, দোকানপাট শপিং মল খুলে দেয়ার কারণে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে।
এদিকে, রাজধানীর শপিংমল-দোকানগুলোকে গতকাল বেশ ভিড় দেখা গেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশব্যাপী চলমান লকডাউনের মধ্যেই শপিংমল-দোকান খুলে দেওয়ার দ্বিতীয় দিন ছিল গতকাল। সরেজমিনে রাজধানীর নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, গাউছিয়া, নূর ম্যানশন, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও বসুন্ধরা সিটি শপিংমল ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে শপিংমল ও দোকানগুলো খোলার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। মূলত ঈদকে সামনে রেখেই সেখানে ক্রেতাদের সমাগম বেশি হচ্ছে। এত লোক সমাগমের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করাই সবচেয়ে সব চ্যালেঞ্জ। শপিংমলগুলোর কিছু দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছিল। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেককেই মাস্ক না পরতে কিংবা থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। কেবল কিছু মার্কেটের প্রবেশপথে হাত স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভিড়ের মধ্যে দোকানগুলোতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো সচেতনতা দেখা যায়নি। দোকান মালিকরা জানান, আগের দিনের তুলনায় গতকাল ভিড় অনেকটাই বেড়েছে। সামনে গণপরিবহন খুলে দেওয়া হলে এই ভিড় আরও বাড়বে। কারণ, এখন শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি কিংবা রিকশা বা অটোরিকশায় করে ক্রেতারা শপিংমল ও দোকানে আসছেন।
গত শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে দেওয়া এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ৫ এপ্রিল থেকে দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টা-বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। গত ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্যে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দেয় সরকার। সেই লকডাউনের মেয়াদ ২১ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে তা আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। এটি আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হচ্ছে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর