আন্তর্জাতিক গবেষকদের দাবি বাতাসের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে করোনা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে একটি জার্নালে প্রকাশ করেছে যে, বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। গবেষকরা দাবি করেছেন, করোনা সৃষ্টিকারী ভাইরাস সার্স-কোভ-২ মূলত বাতাসেই ছড়াচ্ছে। এর উপযুক্ত প্রমাণও হাতে এসেছে গবেষকদের।

তারা জানিয়েছেন, ড্রপলেটের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর প্রবণতা এখন প্রথম সারির দেশ গুলোয় নেই বললেই চলে। এর যথেষ্ট প্রমাণও পাওয়া গেছে। আর সে কারণেই বিশ্বকে এ বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।

এর আগে নভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯-এর জন্য দায়ী সার্স-কোভ-২ ভাইরাস মূলত বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না বলে এতদিন দাবি করে আসলেও সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে কোভিড-১৯ অনেকাংশে বায়ুবাহিত।

আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এ খবর জানিয়েছে।

এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দাবি করেছিল যে, কোভিড-১৯ ভাইরাস প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত ব্যক্তির নাক এবং মুখ থেকে বের হওয়া ছোট ছোট জলকণার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া স্পর্শ, হাঁচির মাধ্যমেও তা অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

কিন্তু বর্তমানে রিপোর্ট বলছে, আক্রান্ত রোগীর হাঁচি, কাশি ও স্পর্শ ছাড়াও এই ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ডব্লিউএইচও’র পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে এখন গবেষণা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাতাসের মাধ্যম ছাড়া ভাইরাসের এই দ্রুতগতির সংক্রমণ কার্যত অসম্ভব। কারণ আক্রান্তদের বেশিরভাগই একে অপরের সংস্পর্শে আসেননি। বা একে অপরের সঙ্গে দীর্ঘ সময়ও কাটাননি। তবে এই বিষয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রমাণ সংগ্রহ এবং গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

ল্যানসেটের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ভারতে এবার প্রতিদিন ১ হাজার ৭৫০ জনের মৃত্যু হতে পারে। সংখ্যাটা বাড়তে বাড়তে আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ ২ হাজার ৩২০ জনের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ছয় বিশেষজ্ঞ ওই পর্যালোচনায় জানিয়েছেন, জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলো যদি বায়ুবাহিত ভাইরাস হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নেয়, তবে মানুষকে সুরক্ষিত রাখা অসম্ভব। ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়বে।

ওই ছয় বিশেষজ্ঞের একজন কোঅপারেটিভ ইনস্টিটিউশন ফর রিসার্চের রসায়নবিদ ও কোলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোস-লুইস জিমনেজ বলেন, ‘এটি যে বায়ুবাহিত রোগ তার পক্ষে দৃঢ় প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে তুলনায় বড় আকারের ড্রপলেটের মাধ্যমে সংক্রমণের প্রমাণ অনেক কম।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর উচিত জরুরিভিত্তিতে ভাইরাসটির সংক্রমণের যে বিবরণ তারা দিয়েছে, সেটিকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া। বায়ুবাহিত রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হলে এর সংক্রমণ কীভাবে কমানো যায়, সেদিকেও অতি দ্রুত মনোনিবেশ করতে হবে।’

অক্সফোর্ডের ত্রিস গ্রিনহালগের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল প্রকাশিত ওই গবেষণাটি পর্যালোচনা করেছে। তারা বায়ুবাহিত রোগ হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে প্রমাণ পেয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর