ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
মন্ত্রিপরিষদের সচিবের কাছে মহার্ঘ ভাতার দাবি সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ভেজাল খাদ্য: ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২ প্রতিষ্ঠানের জরিমানা ঈদের নামাজ নিয়ে যে উদ্যোগ নিলেন তামিম মৃধা ঠাকুরগাঁওয়ে হাসপাতাল থেকে ২ মাসের শিশু চুরি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব মিছিল শেষে ফেরার পথে খুন সেই ছাত্রদল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তারেক রহমান হঠাৎ সৌদি আরবে জেলেনস্কি, নেপথ্যে যে কারণ বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে গ্রেপ্তার দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে : উপদেষ্টা মাহফুজ

গোপনে বিয়ে করা যায় না, বিয়ে করতে হয় অ্যানাউন্স করে : আজহারী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৬:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ এপ্রিল ২০২১
  • ২১০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর একটি রিসোর্টে গতকাল শনিবার হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সময় তাঁকে এক নারীসহ আটক করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। কিছু সময় পর কয়েক হাজার হেফাজতকর্মী ‘রয়েল’ নামের ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে মাওলানা মামুনুলকে মুক্ত করে নিয়ে যান। এ সময় হেফাজতকর্মীরা রিসোর্টে ভাঙচুরও করেন।

এই ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া গতকাল সন্ধ্যা থেকেই তোলপাড়। নানা অভিমতে ভরে যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফরম। মামুনুল হক ওই নারীকে নিজের বিয়ে করা দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিলেও বিষয়টির পক্ষে বিপক্ষে বিপুল জন্মত তৈরি হয়। একপক্ষ বলছে মামুনুলের বিয়ে পক্ষে আরেক পক্ষ মানতে নারাজ। এরই মধ্যে বিয়ের ধরন সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলেছেন। শুধু তাই নয় বিয়ের ধরন নিয়ে নানা তত্ত্ব ও উপাত্ত্বও হাজির করছেন। এরইমধ্যে পাওয়া গেল মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর বয়ান।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে আজহারী বলছেন,  বিয়ের ঘোষণায় ব্যান্ড পার্টি করতে বলেছেন বিশ্ব নবী (সঃ)। কারণ বিয়ে একজন নারী পুরুষের যে সম্পর্ক হয়, জেনা ও ব্যভিচারে একই সম্পর্ক হয়। পার্থক্য হচ্ছে এটার সামাজিক স্বীকৃতি আছে, জেনার স্বীকৃতি নাই। এজন্য বিয়ে গোপন করে করা যায় না। এটা অ্যানাউন্স করে করতে হয়।

ইসলামের খলিফাদের জীভন প্রসঙ্গ টেনে এই ইসলামী বক্তা বলেন, ‘ওমর ফারুক (রঃ) যখন মদিনার খলিফা বলতেন লুকিয়ে লুকিয়ে যদি কেউ বিয়ে করে তাদের প্রতিবেশিরা যদি তাদের দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে না জানে তাহলে আমি তাদের দুইজনকে জেনার শাস্তি দেব।

পুরনো এক ওয়াজ মাহফিলের বয়ানের ওই ভিডিওতে আজহারী বলেন, লুকিয়ে বিয়ে করা যায় না, সবাইকে জানিয়ে শুনিয়ে অ্যানাউন্স করে বিয়ে করতে হয়। এজন্য ইসলাম শুধু হারাম বলে জিকির করে নাই। যেখানেই হারাম তার বিপরীতে ইসলামে হালালের বিকল্প দিয়েছে।

এদিকে রবিবার সকালে মামুনুল ওই নারীকে বিয়ের বিষয়টি অবতারণা করে বলেন, রাগের মাথায় সংসার ভেঙে গভীর সংকটে পড়ে যান তিনি। ওই পরিস্থিতিতে তার জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তিনি আমার শরণাপন্ন হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ নেন। আর সেই দুঃসময়ে সহযোগিতা করার মতো আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না তার। ইসলামী দৃষ্টিকোণ এবং অভিভাবকত্বের জায়গা থেকে আমি তার অর্থনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করি। জীবনের করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনার জন্য নিয়মিতই আমার সাথে যোগাযোগ রাখতে হয় তাকে।

শরিয়তের দিক থেকে এই সম্পর্ক ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন মামুনুল। তিনি বলেন, এমতাবস্থায় একজন বেগানা নারীর সঙ্গে এভাবে সম্পর্ক রাখাকে শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই, যত দিন তার অভিভাবকত্বের প্রয়োজন হবে আমার, তাকে বেগানা হিসেবে রেখে অভিভাবকত্ব করব না ,বরং ইসলামী শরিয়তের আলোকে বৈধ একটা সম্পর্ক তৈরি করে নেব। বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলি এবং এ বিষয়ে তাদেরকে জানিয়ে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বিবাহের কালেমা পড়ে বিবাহ করে নিই।

মামুনুল বলেন, দুই বছর যাবত এভাবেই মানবিক ও  ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমি তার অভিভাবকত্ব করছি এবং একজন অসহায় নারীর দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি পুণ্যের কাজ করেছি বলে বিশ্বাস করি। আমি যা বললাম, এটা আল্লাহর নামে হাজারবার শপথ করে বলতে পারব। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য কুল্লামার শপথও করতে পারি।

হেফাজতের এই নেতা বললেন, বিষয়টি খোলাসা করার পরেও যুবলীগ, আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা আমার সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করেছে এবং হামলা করেছে, গায়ে হাত তুলেছে, আমি এর বিচার চাই আল্লাহর কাছে, প্রশাসনের কাছে এবং জনগণের কাছে। পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের এই হামলা ও আচরণ প্রমাণ করে- বর্তমানে বাংলাদেশে  মান-সম্মান কিংবা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চলাফেরা করা সম্ভব না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মন্ত্রিপরিষদের সচিবের কাছে মহার্ঘ ভাতার দাবি সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের

গোপনে বিয়ে করা যায় না, বিয়ে করতে হয় অ্যানাউন্স করে : আজহারী

আপডেট টাইম : ০৫:২৬:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ এপ্রিল ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর একটি রিসোর্টে গতকাল শনিবার হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সময় তাঁকে এক নারীসহ আটক করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। কিছু সময় পর কয়েক হাজার হেফাজতকর্মী ‘রয়েল’ নামের ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে মাওলানা মামুনুলকে মুক্ত করে নিয়ে যান। এ সময় হেফাজতকর্মীরা রিসোর্টে ভাঙচুরও করেন।

এই ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া গতকাল সন্ধ্যা থেকেই তোলপাড়। নানা অভিমতে ভরে যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফরম। মামুনুল হক ওই নারীকে নিজের বিয়ে করা দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিলেও বিষয়টির পক্ষে বিপক্ষে বিপুল জন্মত তৈরি হয়। একপক্ষ বলছে মামুনুলের বিয়ে পক্ষে আরেক পক্ষ মানতে নারাজ। এরই মধ্যে বিয়ের ধরন সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলেছেন। শুধু তাই নয় বিয়ের ধরন নিয়ে নানা তত্ত্ব ও উপাত্ত্বও হাজির করছেন। এরইমধ্যে পাওয়া গেল মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর বয়ান।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে আজহারী বলছেন,  বিয়ের ঘোষণায় ব্যান্ড পার্টি করতে বলেছেন বিশ্ব নবী (সঃ)। কারণ বিয়ে একজন নারী পুরুষের যে সম্পর্ক হয়, জেনা ও ব্যভিচারে একই সম্পর্ক হয়। পার্থক্য হচ্ছে এটার সামাজিক স্বীকৃতি আছে, জেনার স্বীকৃতি নাই। এজন্য বিয়ে গোপন করে করা যায় না। এটা অ্যানাউন্স করে করতে হয়।

ইসলামের খলিফাদের জীভন প্রসঙ্গ টেনে এই ইসলামী বক্তা বলেন, ‘ওমর ফারুক (রঃ) যখন মদিনার খলিফা বলতেন লুকিয়ে লুকিয়ে যদি কেউ বিয়ে করে তাদের প্রতিবেশিরা যদি তাদের দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে না জানে তাহলে আমি তাদের দুইজনকে জেনার শাস্তি দেব।

পুরনো এক ওয়াজ মাহফিলের বয়ানের ওই ভিডিওতে আজহারী বলেন, লুকিয়ে বিয়ে করা যায় না, সবাইকে জানিয়ে শুনিয়ে অ্যানাউন্স করে বিয়ে করতে হয়। এজন্য ইসলাম শুধু হারাম বলে জিকির করে নাই। যেখানেই হারাম তার বিপরীতে ইসলামে হালালের বিকল্প দিয়েছে।

এদিকে রবিবার সকালে মামুনুল ওই নারীকে বিয়ের বিষয়টি অবতারণা করে বলেন, রাগের মাথায় সংসার ভেঙে গভীর সংকটে পড়ে যান তিনি। ওই পরিস্থিতিতে তার জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তিনি আমার শরণাপন্ন হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ নেন। আর সেই দুঃসময়ে সহযোগিতা করার মতো আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না তার। ইসলামী দৃষ্টিকোণ এবং অভিভাবকত্বের জায়গা থেকে আমি তার অর্থনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করি। জীবনের করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনার জন্য নিয়মিতই আমার সাথে যোগাযোগ রাখতে হয় তাকে।

শরিয়তের দিক থেকে এই সম্পর্ক ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন মামুনুল। তিনি বলেন, এমতাবস্থায় একজন বেগানা নারীর সঙ্গে এভাবে সম্পর্ক রাখাকে শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই, যত দিন তার অভিভাবকত্বের প্রয়োজন হবে আমার, তাকে বেগানা হিসেবে রেখে অভিভাবকত্ব করব না ,বরং ইসলামী শরিয়তের আলোকে বৈধ একটা সম্পর্ক তৈরি করে নেব। বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলি এবং এ বিষয়ে তাদেরকে জানিয়ে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বিবাহের কালেমা পড়ে বিবাহ করে নিই।

মামুনুল বলেন, দুই বছর যাবত এভাবেই মানবিক ও  ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমি তার অভিভাবকত্ব করছি এবং একজন অসহায় নারীর দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি পুণ্যের কাজ করেছি বলে বিশ্বাস করি। আমি যা বললাম, এটা আল্লাহর নামে হাজারবার শপথ করে বলতে পারব। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য কুল্লামার শপথও করতে পারি।

হেফাজতের এই নেতা বললেন, বিষয়টি খোলাসা করার পরেও যুবলীগ, আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা আমার সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করেছে এবং হামলা করেছে, গায়ে হাত তুলেছে, আমি এর বিচার চাই আল্লাহর কাছে, প্রশাসনের কাছে এবং জনগণের কাছে। পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের এই হামলা ও আচরণ প্রমাণ করে- বর্তমানে বাংলাদেশে  মান-সম্মান কিংবা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চলাফেরা করা সম্ভব না।