দেশব্যাপী ধর্ষণের প্রতিবাদে মিছিল শেষে ফেরার পথে নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্রদল কর্মী অপূর্বর (২৫) পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় তিনি অপূর্বর পরিবারের সদস্যদের নানা বিষয়ে খোঁজখবর নেন ও সাধ্যমতো সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর এলাকায় নিহত অপূর্বর বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম। এই ছাত্রদল নেতার মাধ্যমে ফোনে তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলেন তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই। আমিও আমার ভাইকে হারিয়েছি। সন্তান হারানোর বেদনা এর চেয়ে বেশি হবে, কম হবে না। আমরা চেষ্টা করব আমাদের দলের অবস্থান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলার জন্য যে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের যেন শাস্তির আওতায় আনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘কোনো রকমের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে আমাদের কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করলে দলের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। আমাদের দলের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা আমরা করব।’
বিগত ১৫ বছরে দলের বহু নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়ে নানা সমস্যায় রয়েছেন জানিয়ে তারকে রহমান বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীদের পাশে দেশের সাধারণ মানুষ আছে যারা বিগত সময়ে এবং এখনো বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’
এ সময় তারেক রহমানকে ফোনে অপূর্বর বাবা খোকন মিয়া বলেন, ‘স্যার, আমাদের তো সব শেষ হয়ে গেছে। স্যার আপনি ছাড়া আমাদের কে আছে। বিএনপি করার কারণে পুলিশ আমাকে মেরে পঙ্গু বানিয়ে ফেলেছে। বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগ আমলে আমি কাজ করে খেতে পারিনি (সংসার চালাতে পারিনি)। তখন আমার সংসার কীভাবে চলেছে একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন। আমি মায়ের (খালেদা জিয়া) ও আপনার জন্য দোয়া করি ও সুস্থতা কামনা করি।’ এ সময় অপূর্বর মা’সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি আশিক রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্যসচিব শাহেদ আহমেদ, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজীব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশ্রাফুল ইসলাম নীরব প্রমুখ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্যসচিব শাহেদ আহমেদ বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিহত ছাত্রদল কর্মী অপূর্বর মা-বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তাদের খোঁজখবর নিয়েছেন ও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, গত ৯ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে ধরে ছাত্রদল কর্মী অপূর্বকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। পরে এ ঘটনায় জড়িত সম্রাট (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধর্ষণের প্রতিবাদে মশাল মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই যুবকের হাতে খুন হন অপূর্ব।