আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মানবদেহের সাতটি অংশ দাফন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তা হলো চুল, নখ, ঋতুস্রাবের কাপড়, দাঁত, পেটের কিড়া (ক্রিমি) ও সন্তান প্রস্রবের সময় নাড়িসহ যা বের হয়। (হাকিম : ১/১৮৬)
অন্য বর্ণনায় শরীর মোছার কাপড়ও দাফন করতে বলা হয়েছে। হাদিস গবেষকরা বলেন, হাদিসটির সঙ্গে পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি মানুষের সুস্থতা ও অসুস্থতার বিষয়গুলোও জড়িত।
অর্থাৎ এর সঙ্গে মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ জড়িত।শরিয়তের বিধান
ফকিহ আলেমরা বলেন, মানবদেহের উল্লিখিত অংশগুলো দাফন করা উত্তম। তবে তা কেউ যদি ময়লা ফেলার স্থানে নিক্ষেপ করে তাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে এগুলো গোসল করার স্থানে ও বাড়ির সীমানার মধ্যে ফেলা মাকরুহ।
কেননা এগুলোতে রোগজীবাণু ছড়ানোর ভয় থাকে। (হাশিয়াতু ত্বহাবি আলা মারাকিল ফালাহ, পৃষ্ঠা ৫২৭)দাফন কেন করতে হয়
ইসলামী শরিয়ত মানবদেহের কিছু অংশ যা মূলত বর্জ্যবিশেষ তা দাফন করতে বলেছে। ফকিহ আলেমরা এর কয়েকটি কারণ নির্ধারণ করেছেন। তা হলো—
১. মানুষের সম্মান : মহান আল্লাহ মানবজাতিকে সম্মানিত করেছেন।
তাই মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও সম্মানিত। এমনকি যেগুলো তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাও সম্মানযোগ্য। এ জন্যই উল্লিখিত অংশগুলো দাফন করতে বলা হয়েছে। (ফয়জুল কাদির : ৫/১৯৮)২. সুস্থতা নিশ্চিত করা : মানবদেহের এসব বর্জ্যে রোগজীবাণু থাকে। তাই তা দাফন করা আবশ্যক।
ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়াতে বলা হয়েছে, ‘কাটা নখ ও কেটে ফেলা চুল দাফন করবে। এগুলো ফেলে দিলেও সমস্যা নেই। তবে এগুলো বাড়ির আঙিনায় বা গোসলখানায় ফেলা মাকরুহ। কেননা তা রোগজীবাণু বহন করে।’ (আওজাঝুল মাসালিক : ১৪/২৬৭)৩. অন্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা : মানবদেহের বিভিন্ন অংশ দাফন করার একটি কারণ হলো, এগুলোর মাধ্যমে ব্যক্তির ক্ষতি করা সম্ভব। যেমন—চুল ও নখের মাধ্যমে জাদু করার বিষয়টি সর্ববিদিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) কর্তিত নখ ও চুল দাফন করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি বলেছেন, জাদুকররা যেন এগুলোর সাহায্যে মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।