শামীমার ফেরার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের আদেশ আজ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় যাওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে রায় দিতে যাচ্ছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বিবিসির এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

শামীমা আইএসে যোগ দিতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বন্ধুদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য ছেড়েছিলেন। ছয় বছর পর দেশটির সর্বোচ্চ আদালত তার ফেরা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে যাচ্ছে।

২১ বছর বয়সী শামীমাকে ফিরতে না দিতে চাওয়া যুক্তরাজ্যের সরকার তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নিয়েছিল। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে এবং মামলায় অংশ নিতে তাকে দেশে আসার অনুমতি দেওয়া ন্যায্য হবে কিনা সে বিষয়ে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারক রায় দেবেন।

শামীমা বেগমের আইনজীবীদের যুক্তি, শুনানিতে অবাধে অংশ নিতে না পারলে এ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারীর ব্রিটিশ নাগরিকত্ব স্বয়ংক্রিয়ভাবে বহাল হয়ে যাবে।

শামীমা এখন উত্তর সিরিয়ায় সশস্ত্র রক্ষীদের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ক্যাম্পে আছেন। তিনি তার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে কিংবা ভিডিওর মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নিতে পারছেন না।

শামীমা বেগম ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুই বান্ধবীসহ সিরিয়ায় পাড়ি জমান। তারা তিনজনই ছিলেন বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী। সিরিয়ায় পাড়ি দিয়ে শামীমা ডাচ বংশোদ্ভূত আইএস জঙ্গি ইয়াগো রিদাইককে বিয়ে করেন।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ এক সাংবাদিক সিরিয়ার এক শরণার্থীশিবিরে শামীমার সাক্ষাৎ পান। তখন শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আকুতি জানান। কিছুদিন পর শামীমা একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। এরও কিছুদিন পর শিশুটির মৃত্যু হয়। ইয়াগো–শামীমা দম্পতির আগেও দুটি সন্তান হয়েছিল। তবে কোনো সন্তানই বেঁচে নেই। পুষ্টিহীনতা ও অসুস্থতায় তারা মারা যায় বলে জানিয়েছিলেন শামীমা।

শরণার্থী শিবিরে তার খোঁজ মেলার পর তিনি দেশে ফিরতে চাইলেও নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে যুক্তরাজ্য তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়। এরপর শামীমা তার আইনজীবীর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেন।

তার যুক্তি ছিল, ব্রিটিশ সরকার ‘অবৈধভাবে’ তাকে রাষ্ট্রহীন করেছে এবং তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তাছাড়া, যুক্তরাজ্যে ফিরতে না পারলে তার পক্ষে আইনি লড়াইও ঠিকমত চালানো সম্ভব নয়।

গত বছরের জুলাইয়ে আপিল আদালত তাদের রায়ে জানায়, শামীমাকে সুষ্ঠু শুনানি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, সিরিয়ার ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় তার পক্ষে আইনি লড়াই চালানো সম্ভব নয়। এ কারণেই তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া উচিত।

যুক্তরাজ্যের সরকার পরে সুপ্রিম কোর্টকে আপিল আদালতের ওই রায় পুনর্বিবেচনা করতে বলে। এই প্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার শামীমা বেগম যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে রায় দিতে যাচ্ছে আদালত।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর