জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্য পদ লাভের পথ আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের সদস্য পদ পাওয়ার প্রস্তাবের ওপর হওয়া ভোটাভুটিতে ভেটো দিয়েছে দেশটি। এই ভোটাভুটির আগে মার্কিন মুখপাত্র জানান, যুক্তরাষ্ট্র চায় ফিলিস্তিন আলাদা রাষ্ট্রের মর্যাদা পাক। কিন্তু সেই আলোচনা সরাসরি ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সদস্যদের একসঙ্গে বসে করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র সেখানে কেবল মধ্যস্থতা করতে পারে।১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে গত বৃহস্পতিবারের খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোটে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার জন্য ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কাছে সুপারিশ করা হয়েছিল। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের ১২টি সদস্য দেশ। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড ভোটদানে বিরত ছিল।
আর ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।ভোটের পর জাতিসংঘের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান, ভোটাভুটির ধারণাটা ভালো ছিল। কিন্তু এভাবে ফিলিস্তিনকে সদস্য করা সম্ভব নয়।
১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বরে অসলো চুক্তিতে ফিলিস্তিনকে নিজস্ব প্রশাসন ও সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়।
কিন্তু তাদের রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তবে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রের মর্যাদা পাওয়ার পথ খোলা রাখা হয়। জাতিসংঘে সদস্য না হলেও ফিলিস্তিন ২০১২ সালে জাতিসংঘে অসদস্য পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে। অবশ্য জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ লাভের জন্য ফিলিস্তিন বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করছে।২০১১ সালে পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার জন্য প্রথমবারের মতো আবেদন করেছিল ফিলিস্তিন।
তবে নিরাপত্তা পরিষদের কমিটিতে মতৈক্য না হওয়ায় সেই আবেদন নিয়ে কোনো ভোটাভুটি হয়নি। এরপর গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর ফিলিস্তিন এ মাসের শুরুতে আবারও জাতিসংঘে সদস্য পদের জন্য আবেদন করে। কিন্তু ফিলিস্তিনের এই আবেদন নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধরণ পরিষদের অনুমোদন না পেলে তারা জাতিসংঘে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যোগ দিতে পারবে না।এদিকে গাজায় আরো বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে রাফাহ শহরে বড় ধরনের হামলা না চালানোর জন্য ইসরায়েলকে ফের সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েলের দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে সামরিক অভিযানের পরিকল্পনার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিরা তাঁদের এসব উদ্বেগ আমলে নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। তবে রাফাহসংলগ্ন এলাকায় আরো সেনা মোতায়েন করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার শাতি শরণার্থী শিবির, গাজার শহরের উত্তরাঞ্চলে শেখ রাদওয়ান এলাকা ও মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে।