হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য রয়েছে।
ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরীর আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। এ মামলাটিতে মোট ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্মচারী হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানার পুলিশ। পরদিন হুমায়ুন কবির ও তানজিনা আদালতে ১৬৪ ধারায় প্রতারণাসহ নানা বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন। একইদিন জেকেজির গুলশান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরী ৬ জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এরপর গত ১২ জুলাই দুপুরে সাবরিনাকে তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে তেজগাঁও থানায় করা মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
গত ২০ আগস্ট আদালত অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন। এরপর গত ২৭ আগস্ট মামলার বাদী মো. কামাল হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এর আগে ৬ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম জুলফিকার হায়াদ অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে তিনি মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে বদলি করেন। এ মামলায় গত ৫ আগস্ট করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে প্রতারণার মামলায় সাবরিনা ও আরিফুলসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত সংস্থা। সেখানে সাবরিনা ও আরিফকে মূলহোতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করতে তাদের সহযোগিতা করেছে।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাবরিনা ও আরিফুলের নির্দেশে অপর আসামিরা রোগীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন এবং জাল কোভিড-১৯ রিপোর্ট তৈরি করে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়, যা উদ্ধার করা ল্যাপটপে পাওয়া গেছে।
এদিকে প্রতারণার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়ের করা মামলায় ডা. সাবরিনা শারমিন জামিন পেয়েছেন। গত ২২ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিনের আদেশ দেন। গত ৩ জানুয়ারি এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় আদালত আগামী ১ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
এদিকে এক মামলায় জামিন পেলেও করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে প্রতারণার মামলায় কারাগারে থাকায় এখনি তার মুক্তি মিলছে না।