হাওর বার্তা ডেস্কঃ দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন- প্রথম স্ত্রীর এমন আভিযোগে রাশেদুল নামের এক যুবককে সালিশ ডাকেন চেয়ারম্যান। সেখানে রাশেদুলকে আর্থিক জরিমানা ও জুতাপেটা করার পর বিশেষাঙ্গে ইট বেঁধে ঘোরানো হয়। এসময় রক্তপাত শুরু হলেও তাকে হাসপাতালে যেতে দেওয়া হয়নি। পরে পুলিশ ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে রাশেদুলকে উদ্ধার ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলীকে গ্রেপ্তার করে।
২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের চর পাতুরিয়া গ্রামে। ভুক্তভোগী রাশেদুল একই গ্রামের ইমান আলীর ছেলে। রাতে তাকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম আলী একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। গ্রেপ্তার অপরজন তার সহযোগী রায়হান। তার বাড়িও একই এলাকায়।
স্থানীয়রা জানায়, রবিবার সন্ধ্যার দিকে রাশেদুলের বিচার করার জন্য চর পাতুরিয়া স্কুল মাঠে সালিশের আয়োজন করেন সাওরাইল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলী। সালিশে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও একশ’টি জুতার বাড়ির রায় দেওয়া হয়। এরপর রাশেদুলের বিশেষাঙ্গে ইট বেঁধে ঘোরানো হয়। এক পর্যায়ে রাশেদুলের বিশেষাঙ্গ দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। ঘটনার ভয়াবহতায় হকচকিয়ে যান চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। পরে হাসপাতালে যেতে না দিয়ে রাশেদুলকে তড়িঘড়ি করে তার বাড়িতে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের লোকেরা।
কালুখালী থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে রাশেদুলকে সালিশি রায়ের নামে নির্যাতন করেছেন চেয়ারম্যান আলী। ৯৯৯ এ এমন খবর পেয়ে তিনি সেখানে যান। রাশেদুলের বাড়ি গিয়ে দেখেন তাকে লেপ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। লেপের কভার রক্তে ভিজে গেছে। নির্যাতনে রক্তপাত শুরু হওয়ার পর হাসতপাতালে নিলে পুলিশ জেনে যাবে একারণে রাশেদুলকে তার নিজ বাড়িতে রেখে গ্রাম্য চিকিৎসক ডেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাড়ির চারপাশে পাহারা বসানো হয়েছিল। সেখান থেকে রাশেদুলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে চেয়ারম্যান আলী ও তার সহযোগী রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি বলেন, এটি মধ্যযুগীয় বর্বরতা। এব্যাপারে ভুক্তভোগী রাশেদুলের বাবা ইমান আলী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আলী ও রায়হানকে সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে।