ঢাকা ০১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছয় মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ৩৭.৫৯ শতাংশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৫১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে দেশে রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ৩ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার।

গত বছরের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ছিল ৩৩ বিলিয়ন ডলার। তবে ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৪৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রবাসীরা করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব এবং তার পরবর্তী সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মোকাবিলায় পরিবারের জন্য বেশি পরিমাণে অর্থ পাঠিয়েছেন। এ ধারা অব্যাহত রাখায় রেমিটেন্স অনেক বেশি অবদান রেখেছে।

এদিকে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৪৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রিজার্ভের আকার একটি মাইলফলক অর্জন করেছে। যা করোনা প্রাদুর্ভাবের পরেও দেশের অর্থনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করে। রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠানোর লক্ষ্য অর্জন করায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদও দেন অর্থমন্ত্রী।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে রেমিটেন্স এসেছে  ১২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই মাসে ৯ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার ছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ ২বিলিয়ন ডলার বেড়েছে।

দেশে অধিক হারে রেমিটেন্স আসার কারণ সম্পর্কে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রেমিটেন্স বাড়ার তিনটি কারণ রয়েছে।

প্রথমত, গত বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে করোন ভাইরাস প্রাদুর্ভাব ও বন্যার পর অর্থনৈতিকভাবে দুর্দশাগ্রস্ত আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা করতে অনেক প্রবাসী বেশি পরিমাণে অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন।

দ্বিতীয়ত, আমানতের সুদহার, বিশেষ করে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগের বিপরীতে সুদের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। যা কারণে প্রবাসীদের অনেকেই দেশে বিনিয়োগের জন্য অধিক পরিমাণে অর্থ পাঠাতে উৎসাহী হয়েছে। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এ দু’টি কারণই আগামী দিনে অধিক পরিমাণে রেমিটেন্স দেশে আনতে অবদান রাখবে।

তৃতীয়ত, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের তিন শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়া। সরকার ২ শতাংশ এবং কিছু ব্যাংক আরও ১ শতাংশ দিয়ে হচ্ছে। রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহী করার উদ্যোগ ফল দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, করোনা মহামারিতে বিধি-নিষেধের কারণে বিদেশ যাতায়াত বন্ধ থাকায়  অর্থ পাচারের পরিমাণও  সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে নগদ ডলারের চাহিদাও কমে যায়। চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে অবৈধ অর্থ ব্যবসায়ীরা ডলারের মূল্য কম দিচ্ছিল, অবৈধ চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানো কম লাভজনক বলেও তিনি জানান।

২০২১ সালের জুলাই অতীতের সব সময়ের চেয়ে বেশি ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১৮ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।

প্রবাসীরা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্ট মাসে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বর মাসে ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার এবং অক্টোবর মাসে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ছয় মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ৩৭.৫৯ শতাংশ

আপডেট টাইম : ১১:১৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে দেশে রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ৩ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার।

গত বছরের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ছিল ৩৩ বিলিয়ন ডলার। তবে ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৪৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রবাসীরা করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব এবং তার পরবর্তী সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মোকাবিলায় পরিবারের জন্য বেশি পরিমাণে অর্থ পাঠিয়েছেন। এ ধারা অব্যাহত রাখায় রেমিটেন্স অনেক বেশি অবদান রেখেছে।

এদিকে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৪৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রিজার্ভের আকার একটি মাইলফলক অর্জন করেছে। যা করোনা প্রাদুর্ভাবের পরেও দেশের অর্থনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করে। রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠানোর লক্ষ্য অর্জন করায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদও দেন অর্থমন্ত্রী।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে রেমিটেন্স এসেছে  ১২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই মাসে ৯ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার ছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ ২বিলিয়ন ডলার বেড়েছে।

দেশে অধিক হারে রেমিটেন্স আসার কারণ সম্পর্কে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রেমিটেন্স বাড়ার তিনটি কারণ রয়েছে।

প্রথমত, গত বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে করোন ভাইরাস প্রাদুর্ভাব ও বন্যার পর অর্থনৈতিকভাবে দুর্দশাগ্রস্ত আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা করতে অনেক প্রবাসী বেশি পরিমাণে অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন।

দ্বিতীয়ত, আমানতের সুদহার, বিশেষ করে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগের বিপরীতে সুদের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। যা কারণে প্রবাসীদের অনেকেই দেশে বিনিয়োগের জন্য অধিক পরিমাণে অর্থ পাঠাতে উৎসাহী হয়েছে। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এ দু’টি কারণই আগামী দিনে অধিক পরিমাণে রেমিটেন্স দেশে আনতে অবদান রাখবে।

তৃতীয়ত, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের তিন শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়া। সরকার ২ শতাংশ এবং কিছু ব্যাংক আরও ১ শতাংশ দিয়ে হচ্ছে। রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহী করার উদ্যোগ ফল দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, করোনা মহামারিতে বিধি-নিষেধের কারণে বিদেশ যাতায়াত বন্ধ থাকায়  অর্থ পাচারের পরিমাণও  সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে নগদ ডলারের চাহিদাও কমে যায়। চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে অবৈধ অর্থ ব্যবসায়ীরা ডলারের মূল্য কম দিচ্ছিল, অবৈধ চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানো কম লাভজনক বলেও তিনি জানান।

২০২১ সালের জুলাই অতীতের সব সময়ের চেয়ে বেশি ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১৮ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।

প্রবাসীরা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্ট মাসে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বর মাসে ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার এবং অক্টোবর মাসে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন।