৭৩ বছর বয়সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট, ইচ্ছা পূরণের জীবন্ত উদাহরণ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শিক্ষার যে কোনো বয়স নেই তা আবারো প্রমাণিত হল। ৭৩ বছর বয়সী বৃদ্ধ রওশন আলী জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে পাস করলেন স্নাতকোত্তর। শুধু তাই নয় ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট পেয়ে তিনি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এমন অসাধারণ অর্জনে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে সহকর্মী ও এলাকাবাসী।

অভূতপূর্ব এই সাফল্যের প্রসঙ্গে রওশন আলী বলেন, তিনি ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালি উপজেলার বাইন্নাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তারপর প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে সুজানগর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাধ্যমিকে পড়াশুনা করেন। সেখান থেকেই তিনি বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পাস করেন। এরপর একই বিভাগে ভর্তি হন পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পাস করেন। তারপর আরো পড়াশুনা করার ইচ্ছা থাকলেও পারিবারিক কারণে আর সেটি সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, সংসারের হাল ধরতে তিনি ১৯৭২ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সুজানগরে শহীদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি জীবন শুরু করেন। কিন্তু মনে পড়াশুনা করার ইচ্ছা মুছে ফেলতে পারেননি। চাকরি জীবনের পাশাপাশি প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অজর্ন করেন। তারপর তাকে থমকে দাঁড়াতে হয়। ব্যস্ততার কারণে আর পড়াশুনা করতে পারেননি।

অবসরপ্রাপ্ত এ শিক্ষক আরো জানান, দীর্ঘ বছর শিক্ষকতা করার পর ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি অবসরে যান। তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন যে, স্নাতকোত্তর পাস করবেন। অবসরে যাওয়ার প্রায় এক দশক পর তিনি সত্যি সত্যিই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হন। তার অদম্য ইচ্ছা ও অধ্যবসায়ের কারণে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করেন।

তার এমন অর্জনে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তার স্ত্রী, সন্তান, নাতি-নাতনিসহ সহকর্মী ও এলাকাবাসী। এটিকে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন তারা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর