ঢাকা ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ’লীগ ও বিএনপির মধ্যে ভেতরে ভেতরে সংলাপ চলছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৬
  • ২২৫ বার

বাংলাদেশে একতরফা জাতীয় নির্বাচনের দুই বছর পূর্তি হলো। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনে ক্ষমতার বাইরে থাকা সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং জোট অংশ নেয়নি। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচনে ফের ক্ষমতায় আসে।সেই সময় আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সংবিধান রক্ষার নির্বাচন বলেছিল। বিএনপি একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসলেও মধ্যবর্তী সেই নির্বাচনের আর সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা। এবার ৫ জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুই দলই কর্মসূচি পালন করেছে। আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ নামে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দু’টি সমাবেশ করেছে। তবে কোনো সমাবেশেই ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। ওদিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা’ নামে সমাবেশ করেছে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এই সমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারের সমালোচনা এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করলেও তিনি সরকার বিরোধী নতুন কোন কর্মসূচি ঘোষণা করেননি। এবার বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সমাবেশকে ‘সমঝোতার’ সমাবেশই বলছেন বিশ্লেষকরা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনেই কোনো নির্বাচন হয়নি। একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয় লাভ করেন। আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশ আসন পায়। এরশাদের জাতীয় পার্টি হয় সংসদে বিরোধী দল। এই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিকে ঘিরে গত বছর চলা বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় কমপক্ষে ৯৫ জন প্রাণ হারান। প্রায় তিন মাস ধরে আন্দোলন করার পর সেই অবস্থা থেকে সরে আসে বিএনপি। তারা সবশেষ পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নেয়। বিএনপি নেতারা বলছেন, তাঁরা এখন আন্দোলনের চেয়ে দল গোছানোর কাজেই বেশি মনোযোগী। আর নির্বাচনে অংশ নেয়াই এখন তাদের আন্দোলনের কৌশল। জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ) এর প্রধান এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেছে। তারা নির্বাচনে ফিরছে। তবে বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ের আগে মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা আমি দেখছি না। কারণ বিএনপি তাদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।’’ অধ্যাপক কলিমুল্লাহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেও নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখেন না। তিনি মনে করেন, এই সরকারের মেয়াদপূর্তির পর তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে। বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সবদেশে সম্ভব হলে আমাদের দেশেও সেটা সম্ভব করতে হবে।’’ তিনি মনে করেন, ‘‘সামনে রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারার সৃষ্টি হতে পারে। নির্বাচমুখীতাই তার ইঙ্গিত দেয়।’’ তাঁর মতে, ভিতরে ভিতরে রাজনৈতিক সংলাপ চলছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা কথা বলছেন। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের এবারের ৫ জানুয়ারির নমনীয় কর্মসূচি দেখলেই তা বোঝা যায়।ডিডাব্লিউ এমন তথ্য দিয়েই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

আ’লীগ ও বিএনপির মধ্যে ভেতরে ভেতরে সংলাপ চলছে

আপডেট টাইম : ০৯:৩১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৬

বাংলাদেশে একতরফা জাতীয় নির্বাচনের দুই বছর পূর্তি হলো। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনে ক্ষমতার বাইরে থাকা সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং জোট অংশ নেয়নি। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচনে ফের ক্ষমতায় আসে।সেই সময় আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সংবিধান রক্ষার নির্বাচন বলেছিল। বিএনপি একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসলেও মধ্যবর্তী সেই নির্বাচনের আর সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা। এবার ৫ জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুই দলই কর্মসূচি পালন করেছে। আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ নামে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দু’টি সমাবেশ করেছে। তবে কোনো সমাবেশেই ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। ওদিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা’ নামে সমাবেশ করেছে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এই সমাবেশে যোগ দিয়ে সরকারের সমালোচনা এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করলেও তিনি সরকার বিরোধী নতুন কোন কর্মসূচি ঘোষণা করেননি। এবার বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সমাবেশকে ‘সমঝোতার’ সমাবেশই বলছেন বিশ্লেষকরা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনেই কোনো নির্বাচন হয়নি। একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয় লাভ করেন। আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশ আসন পায়। এরশাদের জাতীয় পার্টি হয় সংসদে বিরোধী দল। এই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিকে ঘিরে গত বছর চলা বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় কমপক্ষে ৯৫ জন প্রাণ হারান। প্রায় তিন মাস ধরে আন্দোলন করার পর সেই অবস্থা থেকে সরে আসে বিএনপি। তারা সবশেষ পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নেয়। বিএনপি নেতারা বলছেন, তাঁরা এখন আন্দোলনের চেয়ে দল গোছানোর কাজেই বেশি মনোযোগী। আর নির্বাচনে অংশ নেয়াই এখন তাদের আন্দোলনের কৌশল। জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ) এর প্রধান এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেছে। তারা নির্বাচনে ফিরছে। তবে বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ের আগে মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা আমি দেখছি না। কারণ বিএনপি তাদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।’’ অধ্যাপক কলিমুল্লাহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেও নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখেন না। তিনি মনে করেন, এই সরকারের মেয়াদপূর্তির পর তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে। বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সবদেশে সম্ভব হলে আমাদের দেশেও সেটা সম্ভব করতে হবে।’’ তিনি মনে করেন, ‘‘সামনে রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারার সৃষ্টি হতে পারে। নির্বাচমুখীতাই তার ইঙ্গিত দেয়।’’ তাঁর মতে, ভিতরে ভিতরে রাজনৈতিক সংলাপ চলছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা কথা বলছেন। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের এবারের ৫ জানুয়ারির নমনীয় কর্মসূচি দেখলেই তা বোঝা যায়।ডিডাব্লিউ এমন তথ্য দিয়েই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।