হাওর বার্তা ডেস্কঃ কয়েক দফা বর্ষণে সিরাজগঞ্জ সদর ও জেলার কাজিপুর পয়েন্টে এবছর পঞ্চমবারের মতো বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি।
গতকাল মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) শুরু হওয়া বৃষ্টিতে বাড়িফেরা বন্যাদুর্গত মানুষ আবারো বিপাকে পড়েছে। নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বন্যায় বিধ্বস্ত বাড়িঘর মেরামত নিয়েও।
গত ৪৮ ঘণ্টায় যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি ৩১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও এখন তা বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুর পয়েন্টে পানি ৩১ সেন্টিমিটার বেড়ে প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যমতে, আজ বুধবার সকালে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪২ মিটার। গত ৪৮ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৩১ সেন্টিমিটার। আর কাজিপুর পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৪৮ মিটার। কাজিপুর পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৩১ সেন্টিমিটার।
পাউবো সিরাজগঞ্জের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে যমুনার পানি কমছিল। তবে বৃষ্টির কারণে আবারো পানি বাড়ছে। এ নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই।
খোকশাবাড়ী গ্রামের নতুন পাড়া গ্রামের রিকশা শ্রমিক আনসব আলী জানালেন, গত দেড় মাস ধরে তিনি বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছিলেন। দুই সপ্তাহ আগে বাড়ি করেছেন। কিন্তু এভাবে পানি বাড়তে থাকলে তাঁকে আবারো বাঁধে এসে আশ্রয় নিতে হবে।
একই কথা জানালেন একই গ্রামের রাবেয়া বেগম। তিনি জানালেন দীর্ঘদিন বন্যার পানিতে ডুবে থাকায় তাঁর ঘরের বেঁড়া পচে গেছে। আবারো পানি আসলে তার বাঁশের খুঁটির ঘরটি ধসে পড়বে। যা হয়তো তাঁর মতো সীমিত আয়ের মানুষের পক্ষে সারানো সম্ভব হবে না।
পাইকপাড়া গ্রামের দিলবর মিয়া জানান, বাঁধের ওপর নির্মিত ঘর তাঁর এখনো রয়েছে। পানি বাড়লে তিনি আবার বাঁধে ফিরে যাবেন। অবশ্য নিজেই তিনি আশ্বস্ত করে জানালেন বছরের এ মৌসুমে হয়তো বন্যার প্রকোপ বাড়বে না।
পাউবোর তথ্য মতে, চলতি বছরের জুন মাসের শুরু থেকে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর পয়েন্টে বাড়তে শুরু করে। ২৮ জুন দুই পয়েন্টেই বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এরপর ৪ জুলাই থেকে আবার কমতে শুরু করে এবং ৬ জুলাই বিপৎসীমার নিচে নেমে যায়।
৯ জুলাইয়ের পর পানি দ্রুত বাড়তে থাকে এবং ১৩ জুলাই যমুনার পানি দ্বিতীয় দফায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে। টানা ২৫ দিন পর ৭ আগস্ট যমুনার পানি উভয় পয়েন্টেই বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। ১১ আগস্ট পর্যন্ত কমতে থাকলেও ১২ আগস্ট থেকে আবারও পানি বাড়তে শুরু করে।
২০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়তে থাকে পানি। একপর্যায়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি আসলেও ২১ আগস্ট থেকে আবারো পানি কমতে থাকে। টানা ১২ দিন ধরে পানি কমার পর ২ সেপ্টেম্বর পানি বাড়ে। এর পর গতকাল মঙ্গলবার থেকে আবারো পানি বাড়ছে।