হাওর বার্তা ডেস্কঃ আগামীতে নতুন করে নদীর পানি বাড়লেও জনবসতি প্লাবিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তিনি বলেন, বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র থেকে যে পূর্বাভাস আছে সেখানে বলা হয়েছে- চীন ও ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেই পানি বহ্মপুত্র দিয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হলে নদীগুলোর পানি বাড়বে। তবে জনবসতি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই।
মঙ্গলবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আয়োজিত ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আত্মদানকারী সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ শাহ আলমের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান মারা যাওয়া স্বেচ্ছাসেবকের স্ত্রী শারমিন জাহান আঁখির হাতে ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৭০০ টাকার চেক তুলে দেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি প্রমুখ।
ডা. এনাম বলেন, চলতি বছর তিন দফা বন্যায় দেশের ৩৩টি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছিল। এই মুহূর্তে আমাদের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চলের সব নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নেমে গেছে এবং জোয়ারের পানিও নেমে গেছে। কোনো এলাকাতেই আর বন্যা নেই। তবে অনেক জায়গায় এখনও জলাবদ্ধতা আছে, মানুষের কিছুটা দুর্ভোগ আছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এখনও মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তিন দফা বন্যায় প্রায় ৫,৭৭২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি কীভাবে পূরণ করা যায়, সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করে মাঠপর্যায়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি বাড়ি যেন আমরা পুনরায় নির্মাণ করে দিই। এ ছাড়া নদীভাঙনের জন্য যে ক্ষতি হয়েছে তার জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা আলাদা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জাইকা থেকে আমরা ২৪৬ কোটি টাকা পেয়েছি, সেখান থেকে ১১৩ কোটি টাকা পুনর্বাসনের জন্য ব্যয় করব।
অনুষ্ঠানে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ শাহ আলমের পরিবারকে সাত লাখ ৩৬ হাজার ৭০০ টাকা সহায়তা দেয়া হয়। আম্পান আঘাত হানার পূর্বমুহূর্তে ২০ মে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় স্থানীয়দের আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার সময় নৌকা ডুবে মারা যান শাহ আলম। ১৯৮৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কতা সংকেত প্রচার, সতর্কীকরণ ও উদ্ধারে কাজ করে আসছিলেন তিনি। অনুদানের চেক গ্রহণ করে আঁখি বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুতে আমরা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কিন্তু মানবতার সেবায় তিনি শহীদ হওয়ায় আমরা গর্বিত। আর্থিক সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী, ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।