ঢাকা ০২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোখরা সাপের সঙ্গে বসবাস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জুলাই ২০২০
  • ২২১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাপ মানে আতঙ্ক, আর বিষাক্ত সাপ দেখে ভয় পায় না এমন লোক পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু সেই সাপ যদি  থাকে  নিজের শয়ন কক্ষে তাহলে বিষয়টি কেমন ভয়ঙ্কর হতে পারে। তেমনি একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে ধামরাইয়ের কালামপুর পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের পাশের রশিদ মিয়ার বাড়িতে। রশিদসহ ওই বাড়ির কয়েকজন ভাড়াটিয়া না জেনে দীর্ঘদিন ধরে সাপের সঙ্গে বসবাস করছে। শুক্রবার তাদের শয়নকক্ষ ও বারান্দা থেকে মারা হয় ৩৫টি বিষধর গোখরা সাপের বাচ্চা। রশিদের বাড়ির মেঝে খোঁড়ে বের করার চেষ্টা চলছে ওইসব বাচ্চা সাপের মা-বাবাকে। এছাড়া গত বছর এ বর্ষার সময় ভালুম রবিউল ইসলামের বাড়ি থেকেও মারা হয়েছিল ২৯টি গোখরা সাপ। এরপর ধামরাই উপজেলা সমাজসেবা অফিস কক্ষ ও এক সাংবাদিকের বাড়ির পাশ থেকে মারা হয়েছে আরো ১৫টি সাপ।

এখন পুরো উপজেলায় চলছে সাপ আতঙ্ক।
জানা গেছে, ধামরাইয়ের কালামপুর পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের পাশে আব্দুর রশিদের বাড়ির বারান্দায় শুক্রবার একটি গোখরা সাপের বাচ্চা খেলছিল। এ সময় বাড়ির ভাড়াটিয়া জহিরুল ইসলাম দেখে তা মেরে ফেলে। এরপর আরো একটি বাচ্চা আসে। তাকেও মারা হয়। পরে পাশের ভাড়াটিয়া আফজাল শরীফ বাড়ির মালিক রশিদসহ অনেকেই বারান্দা ও ঘরের পাস্টার খোঁড়া শুরু করে। খোঁড়ার শুরুতেই বের হয়ে আসে একে একে ৩৫টি গোখরা সাপের বাচ্চা। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বড় সাপদের।
ভাড়াটিয়া জহিরুল ইসলাম ও আফজাল শরীফ জানান, এখন আমরা ওই বাড়িতে থাকতেই ভয় পাচ্ছি। গত বছর এমন বর্ষার সময়  ধামরাইয়ের ভালুম গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে রবিউল করিমের বসতঘরের একটি গর্তের মুখে  সাপের খোলস দেখতে পান। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই মাটি খুঁড়লে গর্ত থেকে একে একে বেরিয়ে আসে ২৯টি গোখরা সাপ। এক একটি সাপ দেড় থেকে দুই ফুট লম্বা। এ সময় সাপগুলো পিটিয়ে মারা হয়। একই বছর   কালামপুর গ্রামের সমকালের সাংবাদিক মোকলেছুর রহমানের বাড়ির পাশ থেকেও ১৪টি ও ধামরাই উপজেলা পরিষদ ভবনের সমাজসেবা অফিস কক্ষ থেকে একটি বড় গোখরা সাপ পিটিয়ে মারা হয়। এসব বিষধর সাপ বেরিয়ে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম সাপ আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল।
গত দুই বছর আগেও ধামরাইয়ের শোলধন গ্রামের মৃত সফি উদ্দিনের স্ত্রী মাছেলা বেগমের বসতঘর থেকে ৫১টি, কালামপুর গ্রামের আরফান আলীর ঘর থেকে ১৯টি, পাল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে শতাধিক ও ধামরাই থানা পুলিশ কোয়ার্টার থেকে দুটিসহ দুই শতাধিক বড় গোখরা সাপ পিটিয়ে মারা হয় এবং আড়াই শতাধিক ডিমও ধ্বংস করা হয়েছিল। ধামরাইয়ে সাপের কামুড়ে মারা গেছে সর্পমানব নামে খ্যাত আতুল্লাচর গ্রামের রাজুসহ কয়েকজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রামে সাপে কামড়ালে ঝাড়-ফুঁক ছাড়া কোনো চিকিৎসা দিতে না পারায় মারা যাচ্ছে অনেকে। আর গ্রামের মানুষকেই সাপে বেশি কামড়ায় তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কামড়ানোর ওষুধ রাখা দরকার। কারণ গ্রাম থেকে সাপে কামড়ানো একটি রোগীকে ঢাকা নিতে নিতে সে রাস্তায় মারা যেতে পারে। তাই তাদের দাবি সাপে কামড়ালে তারা যেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হতে পারে এমন ব্যবস্থা করার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গোখরা সাপের সঙ্গে বসবাস

আপডেট টাইম : ১১:৪৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাপ মানে আতঙ্ক, আর বিষাক্ত সাপ দেখে ভয় পায় না এমন লোক পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু সেই সাপ যদি  থাকে  নিজের শয়ন কক্ষে তাহলে বিষয়টি কেমন ভয়ঙ্কর হতে পারে। তেমনি একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে ধামরাইয়ের কালামপুর পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের পাশের রশিদ মিয়ার বাড়িতে। রশিদসহ ওই বাড়ির কয়েকজন ভাড়াটিয়া না জেনে দীর্ঘদিন ধরে সাপের সঙ্গে বসবাস করছে। শুক্রবার তাদের শয়নকক্ষ ও বারান্দা থেকে মারা হয় ৩৫টি বিষধর গোখরা সাপের বাচ্চা। রশিদের বাড়ির মেঝে খোঁড়ে বের করার চেষ্টা চলছে ওইসব বাচ্চা সাপের মা-বাবাকে। এছাড়া গত বছর এ বর্ষার সময় ভালুম রবিউল ইসলামের বাড়ি থেকেও মারা হয়েছিল ২৯টি গোখরা সাপ। এরপর ধামরাই উপজেলা সমাজসেবা অফিস কক্ষ ও এক সাংবাদিকের বাড়ির পাশ থেকে মারা হয়েছে আরো ১৫টি সাপ।

এখন পুরো উপজেলায় চলছে সাপ আতঙ্ক।
জানা গেছে, ধামরাইয়ের কালামপুর পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের পাশে আব্দুর রশিদের বাড়ির বারান্দায় শুক্রবার একটি গোখরা সাপের বাচ্চা খেলছিল। এ সময় বাড়ির ভাড়াটিয়া জহিরুল ইসলাম দেখে তা মেরে ফেলে। এরপর আরো একটি বাচ্চা আসে। তাকেও মারা হয়। পরে পাশের ভাড়াটিয়া আফজাল শরীফ বাড়ির মালিক রশিদসহ অনেকেই বারান্দা ও ঘরের পাস্টার খোঁড়া শুরু করে। খোঁড়ার শুরুতেই বের হয়ে আসে একে একে ৩৫টি গোখরা সাপের বাচ্চা। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বড় সাপদের।
ভাড়াটিয়া জহিরুল ইসলাম ও আফজাল শরীফ জানান, এখন আমরা ওই বাড়িতে থাকতেই ভয় পাচ্ছি। গত বছর এমন বর্ষার সময়  ধামরাইয়ের ভালুম গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে রবিউল করিমের বসতঘরের একটি গর্তের মুখে  সাপের খোলস দেখতে পান। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই মাটি খুঁড়লে গর্ত থেকে একে একে বেরিয়ে আসে ২৯টি গোখরা সাপ। এক একটি সাপ দেড় থেকে দুই ফুট লম্বা। এ সময় সাপগুলো পিটিয়ে মারা হয়। একই বছর   কালামপুর গ্রামের সমকালের সাংবাদিক মোকলেছুর রহমানের বাড়ির পাশ থেকেও ১৪টি ও ধামরাই উপজেলা পরিষদ ভবনের সমাজসেবা অফিস কক্ষ থেকে একটি বড় গোখরা সাপ পিটিয়ে মারা হয়। এসব বিষধর সাপ বেরিয়ে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম সাপ আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল।
গত দুই বছর আগেও ধামরাইয়ের শোলধন গ্রামের মৃত সফি উদ্দিনের স্ত্রী মাছেলা বেগমের বসতঘর থেকে ৫১টি, কালামপুর গ্রামের আরফান আলীর ঘর থেকে ১৯টি, পাল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে শতাধিক ও ধামরাই থানা পুলিশ কোয়ার্টার থেকে দুটিসহ দুই শতাধিক বড় গোখরা সাপ পিটিয়ে মারা হয় এবং আড়াই শতাধিক ডিমও ধ্বংস করা হয়েছিল। ধামরাইয়ে সাপের কামুড়ে মারা গেছে সর্পমানব নামে খ্যাত আতুল্লাচর গ্রামের রাজুসহ কয়েকজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রামে সাপে কামড়ালে ঝাড়-ফুঁক ছাড়া কোনো চিকিৎসা দিতে না পারায় মারা যাচ্ছে অনেকে। আর গ্রামের মানুষকেই সাপে বেশি কামড়ায় তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কামড়ানোর ওষুধ রাখা দরকার। কারণ গ্রাম থেকে সাপে কামড়ানো একটি রোগীকে ঢাকা নিতে নিতে সে রাস্তায় মারা যেতে পারে। তাই তাদের দাবি সাপে কামড়ালে তারা যেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হতে পারে এমন ব্যবস্থা করার।