ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগাম জামিন শুনানি বন্ধ, দুর্ভোগে বিচারপ্রার্থীরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:০০:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০
  • ২২৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাকালে উচ্চ আদালতে বন্ধ আগাম জামিন আবেদনের শুনানি। অধস্তন আদালতেও আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারছেন না। স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় ভার্চুয়াল কোর্টেও এ ধরনের কোনো জামিন আবেদন গ্রহণ ও শুনানি হচ্ছে না। এসব কোর্টে শুধু হাজতি আসামির জামিন আবেদনের শুনানি হচ্ছে। সাড়ে তিন মাস ধরে আগাম জামিন আবেদনের শুনানি বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী।

 সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, প্রতিদিন সারাদেশে বহু ফৌজদারি মামলা হয়। এর বেশির ভাগ মামলা আক্রোশমূলক। অযথা হয়রানি করতে অনেককে আসামি করা হয়। আগাম জামিনের ব্যবস্থা না থাকায় এই আসামিগুলোকে পুলিশের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয় অনেকটা অর্থের বিনিময়ে, অথবা ঘরছাড়া হতে হয়। অবিলম্বে কোর্টগুলোতে আগাম জামিনের ব্যবস্থা করা না হলে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও ঢাকা ল’ রিপোর্টস (ডিএলআর) এর সম্পাদক অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ইত্তেফাককে বলেন, আগাম জামিন আবেদনের ক্ষেত্রে আসামিকে সশরীরে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হয়। এখানে আসামি চিহ্নিতের বিষয় জড়িত। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আগাম জামিন শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে দু-একটি ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করে দিতে পারেন। যেখানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে আইনজীবীরা মামলা পরিচালনা করবেন। এতে করে হয়তো যারা আগাম জামিনের বিচারপ্রার্থী তাদের সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে।

এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানিয়েছে, করোনা ঝুঁকি এড়াতে আপাতত আগাম জামিন শুনানি বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলেই এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিগিগরই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা আসতে পারে বলে জানা গেছে।

ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ থেকে আত্মসমর্পণের সুযো

করোনাকালে এতদিন অধস্তন আদালতেও আসামির আত্মসমর্পণ করে জামিন চাওয়া বন্ধ ছিল। কিন্তু আজ রবিবার থেকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তরা চিফ জুডিসিয়াল ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন গতকাল শনিবার এ সিদ্ধান্ত দেন। ঐ সিদ্ধান্তে আত্মসমর্পণপূর্ব আসামির জামিন শুনানিতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। আদালত প্রাঙ্গণ ও এজলাস কক্ষে ছয় ফুট শারীরিক দূরুত্ব বজায় রাখা, কাঠগড়ায় একসঙ্গে পাঁচ জন আসামি থাকার কথা বলা হয়েছে। পরিহার করতে বলা হয়েছে জনসমাগম। আদালত কক্ষে ছয় জনের বেশি অবস্থান না করতেও বলা হয়েছে। যদি এসব নির্দেশনা ভঙ্গ হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট শুনানি স্থগিত করতে পারবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আগাম জামিন শুনানি বন্ধ, দুর্ভোগে বিচারপ্রার্থীরা

আপডেট টাইম : ০২:০০:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাকালে উচ্চ আদালতে বন্ধ আগাম জামিন আবেদনের শুনানি। অধস্তন আদালতেও আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারছেন না। স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় ভার্চুয়াল কোর্টেও এ ধরনের কোনো জামিন আবেদন গ্রহণ ও শুনানি হচ্ছে না। এসব কোর্টে শুধু হাজতি আসামির জামিন আবেদনের শুনানি হচ্ছে। সাড়ে তিন মাস ধরে আগাম জামিন আবেদনের শুনানি বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী।

 সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, প্রতিদিন সারাদেশে বহু ফৌজদারি মামলা হয়। এর বেশির ভাগ মামলা আক্রোশমূলক। অযথা হয়রানি করতে অনেককে আসামি করা হয়। আগাম জামিনের ব্যবস্থা না থাকায় এই আসামিগুলোকে পুলিশের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয় অনেকটা অর্থের বিনিময়ে, অথবা ঘরছাড়া হতে হয়। অবিলম্বে কোর্টগুলোতে আগাম জামিনের ব্যবস্থা করা না হলে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও ঢাকা ল’ রিপোর্টস (ডিএলআর) এর সম্পাদক অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ইত্তেফাককে বলেন, আগাম জামিন আবেদনের ক্ষেত্রে আসামিকে সশরীরে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হয়। এখানে আসামি চিহ্নিতের বিষয় জড়িত। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আগাম জামিন শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে দু-একটি ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করে দিতে পারেন। যেখানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে আইনজীবীরা মামলা পরিচালনা করবেন। এতে করে হয়তো যারা আগাম জামিনের বিচারপ্রার্থী তাদের সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে।

এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানিয়েছে, করোনা ঝুঁকি এড়াতে আপাতত আগাম জামিন শুনানি বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলেই এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিগিগরই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা আসতে পারে বলে জানা গেছে।

ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ থেকে আত্মসমর্পণের সুযো

করোনাকালে এতদিন অধস্তন আদালতেও আসামির আত্মসমর্পণ করে জামিন চাওয়া বন্ধ ছিল। কিন্তু আজ রবিবার থেকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তরা চিফ জুডিসিয়াল ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন গতকাল শনিবার এ সিদ্ধান্ত দেন। ঐ সিদ্ধান্তে আত্মসমর্পণপূর্ব আসামির জামিন শুনানিতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। আদালত প্রাঙ্গণ ও এজলাস কক্ষে ছয় ফুট শারীরিক দূরুত্ব বজায় রাখা, কাঠগড়ায় একসঙ্গে পাঁচ জন আসামি থাকার কথা বলা হয়েছে। পরিহার করতে বলা হয়েছে জনসমাগম। আদালত কক্ষে ছয় জনের বেশি অবস্থান না করতেও বলা হয়েছে। যদি এসব নির্দেশনা ভঙ্গ হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট শুনানি স্থগিত করতে পারবেন।