বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত ৭টা ৪০ মিনিটে তিনি মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। কারা ফটকে পরিবারের সদস্য এবং দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ এর জেলার নাসির আহমেদ জানান, জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র রাত ছয়টার দিকে করাগারে এসে পৌঁছে। পরে তা যাচাই বাছাই শেষে মুক্তি দেয়া হয়। তাকে সর্বশেষ গত ৪ নভেম্বর এ কারাগারের আনা হয়।
জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন যাচাই করে গত ২৪ নভেম্বর হাইকোর্ট তিন মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ ২৬ নভেম্বর ওই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন জানান। চেম্বার বিচারপতি রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। একই সঙ্গে ৩০ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করে দেন। সে অনুযায়ী সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি হয়। এর আগে গত ২১ জুন এই তিন মামলায় হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফখরুলের জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে এসব মামলায় তাকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পরে হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন জানায়। আপিল বিভাগ এই তিন মামলায় তাকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। আত্মসমর্পণের বেধে দেয়া সময় ২ নভেম্বর শেষ হয়। ওইদিন আপিল বিভাগ তার আত্মসমর্পণের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন নাকচ করেন। পাশাপাশি দুই সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টের রুল শুনানি করতে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ১১ নভেম্বর হাইকোর্টে ওই রুল শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং ২৪ নভেম্বর তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
গত ৩ নভেম্বর ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে মির্জা ফখরুল আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। আদালত ওই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্যদিকে জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল শুনানির দিন নির্ধারণের জন্য ৫ নভেম্বর আবেদন করেন ফখরুলের আইনজীবীরা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে গত ৬ জানুয়ারি গ্রেফতার হন মির্জা ফখরুল। নাশকতার ৭ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এর মধ্যে পল্টন থানায় গাড়ি পোড়ানো, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের তিন মামলায় গত ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন পান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এরপর পল্টন থানার দুটি ও মতিঝিল থানার এক মামলায় ১৮ জুন পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। এসব আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে গেলে সেখানেও তার জামিন বহাল থাকে।