ঢাকা ০৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চোখের পানি মুছে ফেল, তোমার বাবা শহীদ হয়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০১৫
  • ৩৫৭ বার

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী সাকা চৌধুরীকে গতরাতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে স্বাধীনতাবিরোধী এই আসামীকে ‘শহীদ’ বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী। রবিবার সকাল ৯টার দিকে সাকার মরদেহ কড়া নিরাপত্তায় তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরা গ্রামে পৌঁছালে জানাজার নামাজের জন্য সেটি নিয়ে যাওয়া হয় তাদের দাদার বাড়ি লাল বিল্ডিংয়ে। সাকা চৌধুরীর নতুন বাড়ি বায়তুল বিলাল থেকে পুরনো বাড়িতে পায়ে হেঁটে মেয়ে ফারজিন কাদের ও পুত্রবধূ দীনিয়া খন্দকার সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছানোর সময় মেয়েকে উদ্দেশে করে সাকাপত্নী এ কথা বলেন। এ সময় ফরহাত কাদের চৌধুরী বলেন, ‘তোমরা একদম চোখের পানি ফেলবে না। কাঁদবে না। তোমার বাবা শহীদ হয়েছে।’ এসব কথা বলে তিনি তাদের পারিবারিক মসজিদের আঙিনায় জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর সাকার মরদেহ যখন মসজিদের পাশের পারিবারিক নতুন কবরস্থানে দাফন করার জন্য নেয়া হয়, সে সময় পুকুরপাড়ে মেয়ে-পুত্রবধূ ও ননদকে নিয়ে সেখানে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন ফরহাত কাদের। এ সময় সাকার মরদেহের দিকে তাকিয়ে সাকাপত্নী বলেন, ‘তার শরীর-চেহারায় গত কয়েকদিনে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর আগে যেমন দেখে এসেছিলাম কালকেও সেরকম দেখলাম। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।’ এরপর মা-মেয়ে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ অবস্থান করে সেখান থেকে বায়তুল বিলালে চলে যান। এর আগে সকাল পৌনে ৯টার দিকে ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ ৯টি গাড়ির বহর নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা দেন ফারহাত কাদের চৌধুরী। তারও আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী ও তার স্ত্রী দানিয়া খন্দকার একই গাড়িতে চড়ে ঢাকা থেকে গহিরায় আসেন। তবে গাড়ি থেকে নেমে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী নিকটাত্মীয়দের জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করলেও একেবারেই নির্বাক ছিলেন সাকাপত্নী ফারহাত কাদের চৌধুরী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চোখের পানি মুছে ফেল, তোমার বাবা শহীদ হয়েছে

আপডেট টাইম : ১০:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী সাকা চৌধুরীকে গতরাতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে স্বাধীনতাবিরোধী এই আসামীকে ‘শহীদ’ বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী। রবিবার সকাল ৯টার দিকে সাকার মরদেহ কড়া নিরাপত্তায় তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরা গ্রামে পৌঁছালে জানাজার নামাজের জন্য সেটি নিয়ে যাওয়া হয় তাদের দাদার বাড়ি লাল বিল্ডিংয়ে। সাকা চৌধুরীর নতুন বাড়ি বায়তুল বিলাল থেকে পুরনো বাড়িতে পায়ে হেঁটে মেয়ে ফারজিন কাদের ও পুত্রবধূ দীনিয়া খন্দকার সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছানোর সময় মেয়েকে উদ্দেশে করে সাকাপত্নী এ কথা বলেন। এ সময় ফরহাত কাদের চৌধুরী বলেন, ‘তোমরা একদম চোখের পানি ফেলবে না। কাঁদবে না। তোমার বাবা শহীদ হয়েছে।’ এসব কথা বলে তিনি তাদের পারিবারিক মসজিদের আঙিনায় জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর সাকার মরদেহ যখন মসজিদের পাশের পারিবারিক নতুন কবরস্থানে দাফন করার জন্য নেয়া হয়, সে সময় পুকুরপাড়ে মেয়ে-পুত্রবধূ ও ননদকে নিয়ে সেখানে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন ফরহাত কাদের। এ সময় সাকার মরদেহের দিকে তাকিয়ে সাকাপত্নী বলেন, ‘তার শরীর-চেহারায় গত কয়েকদিনে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর আগে যেমন দেখে এসেছিলাম কালকেও সেরকম দেখলাম। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।’ এরপর মা-মেয়ে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ অবস্থান করে সেখান থেকে বায়তুল বিলালে চলে যান। এর আগে সকাল পৌনে ৯টার দিকে ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ ৯টি গাড়ির বহর নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা দেন ফারহাত কাদের চৌধুরী। তারও আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী ও তার স্ত্রী দানিয়া খন্দকার একই গাড়িতে চড়ে ঢাকা থেকে গহিরায় আসেন। তবে গাড়ি থেকে নেমে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী নিকটাত্মীয়দের জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করলেও একেবারেই নির্বাক ছিলেন সাকাপত্নী ফারহাত কাদের চৌধুরী।