ঢাকা ০৭:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তৃতীয় শ্রেণির গানও ভাইরাল হতে পারে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৯
  • ১৯৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গুণী সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। তার সুর ও সংগীতে অনেক শিল্পীর গানই জনপ্রিয়তার মুখ দেখেছে। ধারাবাহিকভাবে ইমন এখন পর্যন্ত চারশ’রও বেশি সিনেমার গানের কাজ করেছেন। এরমধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছবির  সব গানের কাজই তার করা। চলচ্চিত্রে মোট দুই হাজারেরও বেশি গান তৈরি করেছেন তিনি। এরমধ্যে শ্রোতাপ্রিয় গানের সংখ্যাও অনেক। সর্বশেষ তার সুর ও সংগীতে ‘বসগিরি’ ছবির ইমরান ও কনার গাওয়া ‘দিল দিল দিল’ গানটি ব্যাপক সফলতা পায়। এটি ইউটিউবে ছয় কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে, যা দেশীয় চলচ্চিত্রের গানে একটি রেকর্ড।

সংগীতে দীর্ঘ সময় পাড়ি  দেয়ার পর এখনো একই গতিতে কাজ করছেন ইমন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পীর জন্যও গান তৈরি করছেন। সব মিলিয়ে কেমন আছেন? শওকত আলী ইমন বলেন, বেশ ভালো।

ব্যস্ততার মাঝেই সময় কাটছে। এখন ব্যস্ত কি নিয়ে? ইমন উত্তরে বলেন, ব্যস্ততা গান নিয়েই। চলচ্চিত্র ও অডিওর জন্য গান করছি। সর্বশেষ কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বীর’ ছবির জন্য একটি গান করেছি। এর বাইরে নতুন কয়েকটি ছবির কাজ করেছি। যে গানগুলো করেছি এগুলো আশা করছি সবার ভালো লাগবে। তবে একটি কথা বলতে চাই। সেটা কি? ইমন বলেন, চলচ্চিত্রের কাজ এখন অনেক কমে গেছে। চলচ্চিত্রের অবস্থাই ভালো নেই। তারপরও আমি কিছু ছবির কাজ করছি। সত্যি বলতে আসলে নীতিমালা মেনে চলা হচ্ছে না। আগের চেয়ে দেশীয় ছবির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। দিন দিন আরো কমছে। তাছাড়া আমরা অনেকটাই ভারতনির্ভর হয়ে গেছি। সেখান থেকে ছবি এনে চালানো হচ্ছে। তারপর আবার যৌথ ছবির নীতিমালা মানা হচ্ছে না, এমন অভিযোগও রয়েছে। যৌথ ছবি হলেও দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ শিল্পীই ভারতের। গানের ক্ষেত্রেতো আরো বেশি।

আমি এসব বিষয়ে নিয়ে আগেও কথা বলেছি। আসল কথা হচ্ছে, আমাদের নিজেদের মধ্যেই একাত্বতা নেই। এ কারণে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিচ্ছে। এখন সার্বিকভাবে গানের অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে? আমরা কোন দিকে যাচ্ছি আসলে? ইমন বলেন, এখন অবস্থা বেশ অস্থির। সবাই সাময়িক জনপ্রিয়তার পেছনে ছুটছে। তবে সাম্পতিক সময়ের ভাইরাল গান নিয়ে আমি চিন্তিত নই। কারণ তৃতীয় শ্রেণির গানও ভাইরাল হতে পারে। আমি চাই ভালো গানগুলো ভাইরাল হোক। এখনো অনেক ভালো গান হচ্ছে। কিন্তু শ্রোতাদের কাছে তেমনভাবে পৌছাচ্ছে না। একইভাবে আগে হাজারের কাছাকাছি সিনেমা হল ছিল। এখন ১০০-১৫০টায় নেমে এসেছে। রিমোট চাপলেই ১০০টি চ্যানেল। প্রতিযোগিতাটাও বেশি। তবে পাশ্ববর্তী দেশের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে।

আর দেশের সংস্কৃতিকে মন থেকে ভালোবাসতে হবে। গানে এই প্রজন্ম কেমন করছে বলে মনে হয়? উত্তরে ইমন বলেন, এ প্রজন্মের অনেক শিল্পী, কম্পোজার ভালো কাজ করছে। তবে সিনিয়র হিসেবে আমি বলবো, গুরুমুখী বিদ্যাটা থাকা দরকার। শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। এখন বেশিরভাগই হিটের পিছনে ছুটছে। সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এমন অনেকে আছে নিজেই গান লিখছে, সুর-সংগীত করছে, নিজেই শুনছে, নিজেই প্রশংসা করছে। এটা আসলে হতে পারে না। এখান থেকে বের হতে হবে। এভাবে গান হয় না। ভালো গান সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। তাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তৃতীয় শ্রেণির গানও ভাইরাল হতে পারে

আপডেট টাইম : ১০:৪৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গুণী সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। তার সুর ও সংগীতে অনেক শিল্পীর গানই জনপ্রিয়তার মুখ দেখেছে। ধারাবাহিকভাবে ইমন এখন পর্যন্ত চারশ’রও বেশি সিনেমার গানের কাজ করেছেন। এরমধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছবির  সব গানের কাজই তার করা। চলচ্চিত্রে মোট দুই হাজারেরও বেশি গান তৈরি করেছেন তিনি। এরমধ্যে শ্রোতাপ্রিয় গানের সংখ্যাও অনেক। সর্বশেষ তার সুর ও সংগীতে ‘বসগিরি’ ছবির ইমরান ও কনার গাওয়া ‘দিল দিল দিল’ গানটি ব্যাপক সফলতা পায়। এটি ইউটিউবে ছয় কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে, যা দেশীয় চলচ্চিত্রের গানে একটি রেকর্ড।

সংগীতে দীর্ঘ সময় পাড়ি  দেয়ার পর এখনো একই গতিতে কাজ করছেন ইমন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পীর জন্যও গান তৈরি করছেন। সব মিলিয়ে কেমন আছেন? শওকত আলী ইমন বলেন, বেশ ভালো।

ব্যস্ততার মাঝেই সময় কাটছে। এখন ব্যস্ত কি নিয়ে? ইমন উত্তরে বলেন, ব্যস্ততা গান নিয়েই। চলচ্চিত্র ও অডিওর জন্য গান করছি। সর্বশেষ কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বীর’ ছবির জন্য একটি গান করেছি। এর বাইরে নতুন কয়েকটি ছবির কাজ করেছি। যে গানগুলো করেছি এগুলো আশা করছি সবার ভালো লাগবে। তবে একটি কথা বলতে চাই। সেটা কি? ইমন বলেন, চলচ্চিত্রের কাজ এখন অনেক কমে গেছে। চলচ্চিত্রের অবস্থাই ভালো নেই। তারপরও আমি কিছু ছবির কাজ করছি। সত্যি বলতে আসলে নীতিমালা মেনে চলা হচ্ছে না। আগের চেয়ে দেশীয় ছবির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। দিন দিন আরো কমছে। তাছাড়া আমরা অনেকটাই ভারতনির্ভর হয়ে গেছি। সেখান থেকে ছবি এনে চালানো হচ্ছে। তারপর আবার যৌথ ছবির নীতিমালা মানা হচ্ছে না, এমন অভিযোগও রয়েছে। যৌথ ছবি হলেও দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ শিল্পীই ভারতের। গানের ক্ষেত্রেতো আরো বেশি।

আমি এসব বিষয়ে নিয়ে আগেও কথা বলেছি। আসল কথা হচ্ছে, আমাদের নিজেদের মধ্যেই একাত্বতা নেই। এ কারণে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিচ্ছে। এখন সার্বিকভাবে গানের অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে? আমরা কোন দিকে যাচ্ছি আসলে? ইমন বলেন, এখন অবস্থা বেশ অস্থির। সবাই সাময়িক জনপ্রিয়তার পেছনে ছুটছে। তবে সাম্পতিক সময়ের ভাইরাল গান নিয়ে আমি চিন্তিত নই। কারণ তৃতীয় শ্রেণির গানও ভাইরাল হতে পারে। আমি চাই ভালো গানগুলো ভাইরাল হোক। এখনো অনেক ভালো গান হচ্ছে। কিন্তু শ্রোতাদের কাছে তেমনভাবে পৌছাচ্ছে না। একইভাবে আগে হাজারের কাছাকাছি সিনেমা হল ছিল। এখন ১০০-১৫০টায় নেমে এসেছে। রিমোট চাপলেই ১০০টি চ্যানেল। প্রতিযোগিতাটাও বেশি। তবে পাশ্ববর্তী দেশের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে।

আর দেশের সংস্কৃতিকে মন থেকে ভালোবাসতে হবে। গানে এই প্রজন্ম কেমন করছে বলে মনে হয়? উত্তরে ইমন বলেন, এ প্রজন্মের অনেক শিল্পী, কম্পোজার ভালো কাজ করছে। তবে সিনিয়র হিসেবে আমি বলবো, গুরুমুখী বিদ্যাটা থাকা দরকার। শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। এখন বেশিরভাগই হিটের পিছনে ছুটছে। সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এমন অনেকে আছে নিজেই গান লিখছে, সুর-সংগীত করছে, নিজেই শুনছে, নিজেই প্রশংসা করছে। এটা আসলে হতে পারে না। এখান থেকে বের হতে হবে। এভাবে গান হয় না। ভালো গান সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। তাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।