হাওর বার্তা ডেস্কঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি প্রস্তাবকে আইন হিসেবে অনুমোদন দিয়েছেন যেটি হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করে।
চীনের অন্যান্য এলাকা থেকে হংকং যেন আলাদা স্বায়ত্বশাসন উপভোগ করে তা নিশ্চিত করতে হংকংয়ের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বিষয়ক আইনের বার্ষিক একটি পর্যালোচনা করা হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ‘শি জিনপিং, চীন ও সেদেশের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থেকে এই আইন পাস করেছেন।’ তবে এর প্রতিক্রিয়ায় হংকংয়ের সরকার বলেছে যে, তারা এই আইনটি পরিস্থিতি সহজ করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেনি এবং সেখানকার মানুষের কাছে ভুল বার্তা পাঠিয়েছে।
এই আইন বেইজিংকেও ক্ষুদ্ধ করবে – হংকংয়ের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেন মাথা না ঘামায়, আগেই এমন অনুরোধ করেছিল চীনের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে তারা বেইজিংয়ের মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে। সেসময় রাষ্ট্রদূতকে তারা সতর্ক করে যে হংকং বিষয়ে প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হলে যুক্তরাষ্ট্র এর ‘পরিণাম ভোগ করবে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চীনের সাথে চুক্তি করতে আগ্রহী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে এই বিলটির এত ব্যাপক সমর্থন ছিল যে ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ঐ প্রস্তাবের বিরোধিতাও করতেন, তাহলেও এটি আইন হিসেবে পাস হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
মি. ট্রাম্প এর পাশাপাশি আরেকটি বিলও পাশ করেছেন, যা হংকংয়ের পুলিশের কাছে টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও স্টান গানের মত অস্ত্র – যেগুলো মিছিল বা ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয় – রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে।
কী আছে আইনে?
এ বছরের জুনে হংকংয়ের বিক্ষোভের শুরুর দিকে এই প্রস্তাবটি মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা হয় এবং গত মাসে বিশাল ব্যবধানে কংগ্রেস এটিকে অনুমোদন দেয়। আইনে বলা আছে: ‘হংকং চীনের অংশ হলেও তাদের স্বতন্ত্র আইনি ও অর্থনৈতিক নিয়মাবলী আছে। বার্ষিক পর্যালোচনায় যাচাই করা হবে যে হংকংয়ের আইনকে খর্ব করে চীন সেখানকার বেসামরিক স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন ক্ষুন্ন করছে কি না।’
হংকং যেন তাদের বিশেষ বাণিজ্য মর্যাদা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে যথেষ্ট পরিমাণ স্বায়ত্বশাসন উপভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হংকংয়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
হংকংয়ের বিশেষ বাণিজ্য মর্যাদা বলতে বোঝায়, চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা বা শুল্ক হংকংয়ের জন্য কার্যকর হবে না।
হংকংয়ের পরিস্থিতি কী?
জুন মাসে চীন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার দাবি নিয়ে হংকংয়ের নাগরিকরা বিক্ষোভ শুরু করলেও পরবর্তীতে এটি পরিণত হয় গণতন্ত্রের সমর্থনে হওয়া বিক্ষোভে।
এই বিক্ষোভ ক্রমে সহিংস রুপ নেয়। পুলিশের ওপর বিক্ষোভকারীদের হামলার ঘটনা ঘটে এবং নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিও ছুড়ে। রোববার হংকংয়ে স্থানীয় কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐ নির্বাচনে সরকার ও বিক্ষোভকারীদের প্রতি মানুষের মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঐ নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থীরা বড় ধরনের বিজয় অর্জন করেছে। হংকংয়ের ১৮টি কাউন্সিলের ১৭টিই এখন গণতন্ত্রপন্থী কাউন্সিলরদের নিয়ন্ত্রণে।
সূত্র : বিবিসি