হাওর বার্তা ডেস্কঃ আপাতত’ পদত্যাগ করছেন না বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসাইন চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান।
রোববার সকালে আরিফুল হক চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক ও ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় গিয়ে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন। এসময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল তাদের দাবির বিষয়টি মাথায় রেখে তা সমাধানের ব্যাপারে আশ্বাস দিলে তারা ‘আপাতত’ পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
এ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া আরিফুল হক চৌধুরী সময়ের আলোকে বলেন, দলের মহাসচিব বিষয়টি দেখবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তাই আমরা চারজন ‘আপাতত’ পদত্যাগ ইস্যুতে সরে এসেছি।
এর আগে শুক্রবার রাতে নেতৃবৃন্দের অগোচরে সিলেট যুবদলের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সিলেট বিএনপির প্রভাবশালী এ চার নেতা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। এসময় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদকা আবদুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসাইন চৌধুরী ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ স্বেচ্চাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) হঠাৎ করে সিলেটে জেলা ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল। সংগঠনটির কমিটির সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ২৯ সদস্যবিশিষ্ট সিলেট জেলা এবং ২৭ সদস্য বিশিষ্ট মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। যুবদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিটি গঠনের সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষুব্দ হয়ে ওঠে সিলেটের বিএনপি ঘরানার রাজনীতি। এ নিয়ে শুক্রবার রাতে দলের অভিভাবক হিসেবে নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন যুবদলের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। এরপর আরিফের বাসায় আসেন কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক ও কেন্দ্রীয় নেতা ডা. শাহরিয়ার হোসাইন চৌধুরী। এসময় যুবদলের পদবঞ্চিত বিক্ষুব্দ নেতা-কর্মীরা ঘোষিত কমিটি বাতিল না করা হলে গণপদত্যাগের হুমকি দিলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দও তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এরপর ঘোষণা অনুযায়ী পদত্যাগপত্র লেখা হলে এতে স্বাক্ষর করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসাইন চৌধুরী। ওই সভায় উপস্থিত না থাকলেও বিএনপির সহ স্বেচ্চাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামানও এতে স্বাক্ষর করেন।
পদত্যাগের সিদ্ধান্তের বিষয়ে শনিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছিলেন, ‘ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষুব্দ দলের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার তারা এ নিয়ে ক্ষোভ জানান; তখনই আমরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিই।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৯ বছর পর গত শুক্রবার সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সিদ্দিকুর রহমান পাপলুকে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক এবং নজিবুর রহমান নজিবকে মহানগরের দায়িত্ব দেয়া হয়।