নতুন সড়ক পরিবহন আইনকে স্বাগত জানালেও তার কয়েকটি ধারা পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আইনের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। তবে এই আইনের কয়েকটি ধারা আছে, যেগুলো এই মুহূর্তে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আইনের কিছু ধারা যেন সংশোধন করা হয়।’
শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন তিনি।
সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেন, ‘গাড়ির মালিকের সব কাগজপত্র এবং চালকের লাইসেন্স ঠিক থাকার পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার জন্য মালিকদের বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়। এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে পরিবহন খাত অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
নতুন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে দায়ী চালকের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে তদন্তে প্রমাণিত হলে ফৌজদারি আইনের ৩০২ ধারায় মামলা স্থানান্তর হবে। অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের সুযোগ থাকছে। আর এই ধারার অপরাধ অজামিনযোগ্য।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘বর্তমানে চালকের সঙ্কট রয়েছে। জামিন অযোগ্য যদি হয়, দুর্ঘটনা ঘটলেই চালক জেলখানায় যাবে। এতে যদি জামিন না হয়, তাহলে চালকের সঙ্কট বাড়তে থাকবে। ফলে শ্রমিকদের পক্ষ থেকেও প্রস্তাব আছে, নন বেইলেবল ধারাকে বেইলেবল করার জন্য।’
১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন। আইনে রয়েছে নিয়োগপত্র ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তিকে গণপরিবহনের চালক হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে না। নিয়োগপ্রাপ্ত চালক তার কাগজপত্র গাড়িতে প্রদর্শন করবেন।
এ ছাড়া কন্ডাকটর লাইসেন্স ছাড়া কন্ডাকটর নিয়োগ করা যাবে না। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগে এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল চার মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে অনধিক ছয় মাসের জেল বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালালে ছয় মাসের জেল বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।
এছাড়া নতুন আইনে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ছাড়া কর্তৃপক্ষের দেওয়া যে কোনো লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট দেওয়া থাকবে। অপরাধ করলে তা কাটা যাবে। লালবাতি অমান্য, ওভারটেক, গতিসীমা অমান্য, বিপরীত দিক থেকে গাড়ি চালানো, ওজনসীমা লঙ্ঘন, নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালালে পয়েন্ট কাটা যাবে চালকের। এ বিধান আগে ছিল না।