হাওর বার্তা ডেস্কঃ উপজেলা নির্বাচনে নিজ দলের যারা বিদ্রোহী ছিলেন তাদের এবার মাফ করে দিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে আগামীতে এমন যেন না হয় সে জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, সারা দেশে ৪৯২ উপজেলার মধ্যে পাঁচ ধাপে ৪৭৪ উপজেলায় সম্প্রতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১৪৯টিতে চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। যার অধিকাংশ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। এর মধ্যে ১২৬ জন যারা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদেও রয়েছেন। অনেকেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক বা জেলার গুরুত্বপূর্ণ পদের নেতাও রয়েছেন।
তাদের দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ দেওয়া হয় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে। কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়ার পর অনেকেই চিঠির জবাবে সাধারণ ক্ষমা চেয়ে আকুতি জানিয়েছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কাছে।
গত ১২ জুলাই সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দলটির উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদতদাতাদের সাময়িক বহিষ্কার ও শোকজের সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যান আওয়ামী লীগের কয়েকজন সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।
যেসব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই সর্বশেষ সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন; সেসব উপজেলায় সম্মেলন কীভাবে করবেন সে বিষয়ে দলীয় প্রধানের নির্দেশনা নিতে যান।
এ সময় শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের বলেন, ওইসব উপজেলায় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে তাদের মাধ্যমে সম্মেলন করতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্থলে সংগঠনের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ বা যুবলীগের সম্মেলনের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে এমনই একটা পদ্ধতির কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে যারা কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এমন ভুল আর হবে না বলে অঙ্গীকার করেছেন; তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে। তবে দলের আগামী সম্মেলনে তারা যে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিল সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হবে। বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্রোহীদের ক্ষমার চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দায়িত্বশীল একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, ‘নেত্রী দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সবাইকে এবারের মতো ক্ষমা করে দিয়েছেন। দলের প্রতি ভবিষ্যতে দলের শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে কাজ করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন।’