হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশি ফল আমড়া। টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি বেশ জনপ্রিয়। কাঁচা খাওয়ার পাশাপাশি এটি খাওয়া যায় আরও অনেকভাবে। আচার, মোরব্বা, সালাদ, চাটনি ইত্যাদি তৈরি করা যায় আমড়া দিয়ে। অবাক ব্যাপার হলো, একটি আমড়ায় প্রায় তিনটি আপেলের সমান পুষ্টি রয়েছে।
আমড়ার পুষ্টিগুণ- প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় ১ দশমিক ১ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ গ্রাম শ্বেতসার, ০.১০ গ্রাম স্নেহ জাতীয় পদার্থ এবং ৮০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন আছে। এ ছাড়াও আছে ০.২৮ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৪ মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন, ৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং৩.৯ মিলিগ্রাম লৌহ। আমড়ার খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালোরি। খনিজ পদার্থ বা মিনারেলসের পরিমাণ ০.৬ গ্রাম।
ভিটামিন সি-এর উৎস- আমড়া ভিটামিন সি এ সমৃদ্ধ যা একটি অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। প্রতিদিন যদি অন্তত একটি আমড়া খেতে পারেন তবে ভিটামিন সি এর চাহিদার ৩৯%-৪৯% পূরণ হবে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে। কোলাজেন স্কিন, লিগামেন্ট, টেন্ডন ও কার্টিলেজকে স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে।
ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ- ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড়ের রোগ, মাংস পেশীর খিঁচুনি ছাড়াও যেসব সমস্যা দেখা যায় আমড়া তা প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে আমরা আমড়া খান।
ব্রণ দূর করে- ব্রণ নিয়ে মুশকিলে? খাবারের তালিকায় রাখুন আমড়া। ত্বকের ব্রণ কমাতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে আমড়া দারুণ উপকার করে থাকে। আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। আর ভিটামিন ‘সি’ ত্বক উজ্জ্বল রাখতে অত্যন্ত দরকার। তাই ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে খেতে পারেন আমড়া।
রক্তস্বল্পতা দূর করে- অনেকেই রক্তস্বল্পতায় ভুগে থাকেন। তাদের জন্য আমড়া বেশ উপকারী। কারণ আমড়ায় প্রচুর আয়রন থাকার কারণে এটি রক্তস্বল্পতা রোধ করে। সাথে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সঠিক পর্যায়ে রাখে।
হজমশক্তি বাড়ায়- আমড়ায় রয়েছে বিভিন্ন দ্রবণীয় ফাইবার। এই ফাইবার আমাদের পাকস্থলীর ক্রিয়া প্রক্রিয়া স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখে। ফলে বদ হজম, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যে দূরে রাখতে আমড়া খান।
সর্দি-কাশি দূরে রাখে- আমড়া সর্দি কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে। যার ফলে নানা সংক্রমণ থেকে সহজেই বেঁচে থাকা যায়। ঠান্ডার সমস্যা থেকে দূরে থাকতে আমড়া খান নিয়মিত।
স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়- আমড়া রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তাই আমড়া খেলে স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে যা দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে- আমড়ায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফলে সহজেই সুস্থ থাকা সম্ভব হয়।
রুচি বাড়ায়- রোগীর মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে আমড়ার দারুণ কার্যকর। আমড়া খেলে মুখের অরুচিভাব দূর হয় ও ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। তাই রুচি বাড়াতে নিয়মিত ফলটি খাওয়া যেতে পারে।